আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)

اسلام عليكم و رحمة الله و بركاته 

 

আমি দীর্ঘ সময় জামায়াতে ইসলামী সাথে ও ছাত্র শিবির এর সাথে ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। ছাত্র শিবির এর সহযোগিতা ও আল্লাহু ﷻ অশেষ দয়া ও রহমতে আমি হিদায়ত এর পথ খুঁজে পায়। বর্তমান সময়ে মুফতি আলী হাসান ওসামা, মুফতি রেজাউল করিম আবরার ও মুফতি শামসুদ্দোহা হাফিঃ সাথে ডঃ মুফতি আবুল কালাম আজাদ বাশার, মুফতি আসলাম হুসাই,, মাওলানা ফখরুদ্দিন আহমদ ও মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী হাফিঃ এর সাথে এক বিশাল বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হই। পক্ষে বিপক্ষে নানান কুরআন মাজিদ ও হাদিস এর দলিল পেশ করা হই। একপর্যায়ে, মুফতি আলী হাসান হাফিঃ সরাসরি আঘাত করে। 

এখন আমার প্রশ্ন এতোদিন পর্যন্ত আমি মেনে আসছি। রাসূল ﷺ সত্যের মাপকাঠি ও সাহাবী রাদ্বিঃ আনহুম রা সত্যের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী। 

এখন এসম্পর্কে আমার আকিদা কি হওয়া উচিত। 

جزاك الله خيرا . 

1 Answer

0 votes
by (676,360 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

সমস্ত নবী রাসুল নিষ্পাপ। এটি কোরআন, হাদিস, উম্মতের ঐকমত্য সিদ্ধান্ত ও অকাট্য যুক্তির আলোকে প্রমাণিত। 

যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। সব নবী ও রাসুল নিষ্পাপ ছিলেন। 

সুরা ফাতহ এর ০২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

لِّیَغۡفِرَ لَکَ اللّٰهُ مَا تَقَدَّمَ مِنۡ ذَنۡۢبِکَ وَ مَا تَاَخَّرَ وَ یُتِمَّ نِعۡمَتَهٗ عَلَیۡکَ وَ یَهۡدِیَکَ صِرَاطًا مُّسۡتَقِیۡمًا ۙ﴿۲﴾

যেন আল্লাহ তোমার পূর্বের ও পরের পাপ ক্ষমা করেন, তোমার উপর তাঁর নিআমত পূর্ণ করেন আর তোমাকে সরল পথের হিদায়াত দেন। 

কাজি আয়াজ (রহ.) লিখেছেন : নবীগণ মাসুম তথা নিষ্পাপ হওয়ার বিষয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহ ঐকমত্য রয়েছে।
,
নবি রাসুল দের নিষ্পাপ হওয়া সংক্রান্ত জানুনঃ 

★আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের (রাসুলুল্লাহ সঃ কর্তৃক ঘোষিত নাজাত প্রাপ্ত দল) আক্বিদাও এটাই যেالصحابة كلهم عدول অর্থাৎ -সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ [٨:٤]

তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রুযী। [সূরা আনফাল-৪]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَن عمر بن الْخطاب قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: سَأَلْتُ رَبِّي عَنِ اخْتِلَافِ أَصْحَابِي مِنْ بَعْدِي فَأَوْحَى إِلَيَّ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّ أَصْحَابَكَ عِنْدِي بِمَنْزِلَةِ النُّجُومِ فِي السَّمَاءِ بَعْضُهَا أَقْوَى مِنْ بَعْضٍ وَلِكُلٍّ نُورٌ فَمَنْ أَخَذَ بِشَيْءٍ مِمَّا هُمْ عَلَيْهِ مِنِ اخْتِلَافِهِمْ فَهُوَ عِنْدِي عَلَى هُدًى قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصْحَابِي كَالنُّجُومِ فَبِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمْ اهْتَدَيْتُمْ»

’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, তিনি (সা.) বলেছেন: আমি আমার প্রভুকে আমার মৃত্যুর পর আমার সাহাবীদের মধ্যে মতবিরোধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ওয়াহীর মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দিলেন, হে মুহাম্মাদ! আমার নিকট তোমার সাহাবীদের মর্যাদা হলো আকাশের তারকারাজির ন্যায়। যার একটি আরেকটি থেকে অধিক উজ্জ্বল। অথচ প্রত্যেকটির মধ্যে আলো রয়েছে। এরূপই আমার সাহাবীগণ। অতএব তাদের (সাহাবীদের) মতভেদ হতে যে কোন লোক কোন একটি অভিমত গ্রহণ করবে, সে আমার সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, আমার সাহাবীগণ হলেন তারকারাজির মতো। অতএব তোমরা তাদের যে কাউকে অনুসরণ করবে হিদায়াত পাবে।
(মিশকাত ৬০১৮)

https://ifatwa.info/17759/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেনঃ

 رضى الله عنهم ورضوا عنه 

“আল্লাহপাক তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট ও রাজী হয়ে গেছেন এবং তাঁরাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং রাজী হয়ে গেছেন।(সুরা বায়্যিনাহ-পারা-৩০) 


রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ

 « لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِى فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ ». 

অর্থাত-“তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিওনা। তোমাদের মধ্যে যদি কেহ উহুদ সমপরিমাণ স্বর্ণও যদি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে,তবেও তাঁদের এক মুদ্দ বা তার অর্ধেক পরিমাণ(এক মুদ=১ রতল। আল্লামা শামী(রাঃ)বয়ান করেছেন যে, এক মুদ্দ ২৬০ দিরহামের সমপরিমাণ। দ্রষ্টব্যঃ আওযানে শরিয়্যাহ)আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার সমতূল্য হবেনা।(সহি বুখারী-হাদিস নং ৩৭১৭) 


 তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ)হতে বর্ণিতঃ

 ” من سب اصحابي فعليه لعنة الله والملائكة والناس اجمعين ” .

“যারা আমার সাহাবীদেরকে গালী দেয়, তাদের প্রতি আল্লাহর,ফেরেস্তাদের,এবং জগতবাসীর অভিশাপ বর্ষিত হোক।(তাবরানী) উপরোল্লিখিত হাদিস সমুহ দ্বারা এ কথাই প্রমাণ হয় যে, সাহাবারা সত্যের মাপকাঠি। তাঁদের সর্ম্পকে কোন ধরনের সমালোচনা করা যাবেনা। (মিরকাতুল মাফাতিহ-৬১০১ নং হাদীসের ব্যখ্যায় তাবারানি এর উদৃতিতে বর্ণিত)


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

রাসূল ﷺ সত্যের মাপকাঠি,তিনি নিষ্পাপ,ও সাহাবী রাদ্বিঃ আনহুমরা সত্যের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী,সত্যের মাপকাঠি।

উক্ত আকীদা সহীহ। 
এটিই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...