আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমি পেশায় একজন ডাক্তার, বর্তমানে আবুদাবীতে একটি হসপিটালের তত্বাবধানে মাসিক বেতন ভিত্তিতে ডাক্তার হিসেবে চাকুরি করছি। বাংলাদেশেও আলহামদুলিল্লাহ স্বচ্ছল অবস্থা নিয়ে ডাক্তারি পেশার সাথে ছিলাম। সামাজিক নিরাপত্তা, ভবিষ্যত, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং ফেতনামুক্ত দ্বীনের কথা ভেবে পরিবার নিয়ে আবুদাবিতে ১ বছর ধরে বসবাস করছি। তবে পশ্চিমা সংস্কৃতির চর্চা এইদেশেও অনেক আগে থেকে চলে আসছে। যেমন: প্রত্যেক বিল্ডিং এর নিচে স্পা সেন্টার, বার, পতিতালয় ইত্যাদি। ডাক্তার হিসেবে আমার কাছে অনেক রুগী আসেন যারা এইডসসহ বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত যার কারণ অবৈধ মিলন। আমি ডাক্তার হিসেবে তাদের এইকাজে নিষেধ করতে পারি না, বরং বলতে হয় আপনি প্রোটেকশন নিবেন, কিংবা অমুক ব্র্যান্ডের কনডম ইউস করবেন। আবার যেসব রুগী অতিরিক্ত মদপানের কারণে অসুস্থ তাদের বলতে পারি না আপনি মদ খাবেন না। বরং বলতে হয় আপনি কিছুদিনের জন্য মদ খাওয়া বন্ধ রাখেন। অথবা এই ছয় মাস আপনি অল্প খাবেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা জানি যেনা-ব্যভিচার, মদ্যপানের জন্য কোরআনে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এই বিধি নিষেধগুলো রুগীকে করতে পারি না, কেননা হসপিটাল থেকে আমাদের উপর চাপ থাকে। এই অবৈধ কাজে আমি নিষেধ করেছি এই মর্মে কোনো রুগী যদি অভিযোগ করেন, তাহলে আমাকে এই চাকরি থেকে বর্খাস্ত করা হবে। এই অবস্থায় আমার ইনকাম কি হারাম হচ্ছে? উপরেই বলেছিলাম, আমাদেরকে হসপিটাল থেকে মাসিক ভিত্তিতে বেতন দেওয়া হয়। আমাদের দেশের মত প্রত্যেক রুগী থেকে ভিজিট নিয়ে ট্রিটমেন্ট করবো এমনটা নয়। তাহলে কি আমার ইনকামে হালাল-হারাম মিশ্রিত হচ্ছে?

বাংলাদেশে স্বচ্ছল অবস্থায় ডাক্তারি করার সুযোগ এখনো আছে। হয়তো একটু কষ্ট হবে। কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তা এবং ইমান-আমলের কথা ভেবে পরিবার নিয়ে এই দেশে থাকতে বেশি স্বাছন্দবোধ করছি। এখন আমার কি করা উচিত হবে মেহেরবানি করে জানালে উপকৃত হবো। যদি আমার ইনকাম হারাম হয়, তার দালিলিক প্রমাণ দিলে খুশি হবো।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

গুনাহের কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,গুনাহের কাজে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।
গুনাহের কাজে সহযোগিতা করা গুনাহ করারই নামান্তর। 
বিধায় তাহা জায়েজ নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ইনকাম হালাল হবে।  

হসপিটাল থেকে চাপ থাকার কারনে যেহেতু কুরআন হাদিসের নিষেধাজ্ঞা আপনি বলতে পারছেননা,সেক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে,অন্যায় কাজের পরামর্শ না দিতে। 

"আপনি প্রোটেকশন নিবেন, কিংবা অমুক ব্র্যান্ডের কনডম ইউস করবেন,কিছুদিনের জন্য মদ খাওয়া বন্ধ রাখেন। এই ছয় মাস আপনি অল্প মদ খাবেন"

এমন কোনো পরামর্শই দিবেননা,তারা যেভাবে চলে,চলুক।
আপনি শুধু চিকিৎসা করবেন,ঔষধ দিবেন। এভাবে পরামর্শ দেয়ার প্রয়োজন নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...