আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
174 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)

আসসালামু আলাইকুম 

 

প্রশ্ন () কোরআনের একটি আয়াত আছে তা হলো, কোরআান আমি নাজিল করেছি আর আমি এর হেফাজতকারী।এই আয়াতটি যদি কোন বেক্তির মনে যদি এরুপ সন্দেহ বা শংসয় হয় যে, এই আয়াতটি কি আসলেই আল্লাহ নাযিল করেছেন নাকি কোন মানুষ এটা লিখে জুড়ে দিয়েছে কোরআন সংকোলনের সময়? পরে ওই ব্যক্তি "সমগ্র কোরআন একত্রে সংকোলনের " ইতিহাস পড়ে সংশয় বা সন্দেহ  যদি দূর হয়ে যায় তাহলে তো ভালো। প্রশ্ন  হলো  যখন তার মনে সন্দেহ বা সংশয়   হয়েছিল সে কি তখন কাফর কিংবা মুরতাদ হয়েগিয়েছলো কি? সেই বেক্তি যদি বিবাহিত হয়ে থাকে তাহলে কি তাকে আবার তার ইস্ত্রিকে পুনরায় বিবাহ  কি করতে হবে?

 

প্রশ্ন () অনেক ওয়ায মাহফিলে শুনাযায় যে, নবী  ইব্রাহিম (আঃ) তার জীবনে নাকি টি মিথ্যা কথা বলেছিলেন এই কথা কি সত্য?

আমাদের নবী তার জীবনে কি এইরকম কিছু কি বলেছে?কোরআন এবং হাদীসের আলোকে দয়া করে বলেন

 

হুজুর আপনার দুটি হাত ধরে অনুরোধ করছি আল্লাহর কসম লাগে আপনি দয়া করে উত্তর দিয়েন। আসসালামু আলাইকুম

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
সে ব্যাক্তি যেহেতু মুখে প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য  উচ্চারণ করেনি,বরং শুধুমাত্র মনে মনে ভেবেছে,তাই সে  কাফের/মুরতাদ হয়ে যায়নি।
বিবাহিত হলে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।

(০২)
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, لم يَكْذِبْ إبراهيمُ عليه الصلاةُ والسلام إلاّ ثلاثَ كَذَباتٍ، ‘ইবরাহীম (আঃ) তিনটি ব্যতীত কোন মিথ্যা বলেননি’। 
উক্ত তিনটি মিথ্যা ছিল- 
(১) মেলায় না যাবার অজুহাত হিসাবে তিনি বলেছিলেন إِنِّيْ سَقِيْمٌ ‘আমি অসুস্থ’ (ছাফফাত ৩৭/৮৯)। 

(২) মূর্তি ভেঙ্গেছে কে? এরূপ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَذَا ‘বরং এই বড় মূর্তিটাই এ কাজ করেছে’ (আম্বিয়া ২১/৬৩)। 

(৩) মিসরের লম্পট রাজার হাত থেকে বাঁচার জন্য স্ত্রী সারা-কে তিনি বোন হিসাবে পরিচয় দেন।
(ছহীহ বুখারী হা/৩৩৫৮ ‘নবীদের কাহিনী’ অধ্যায়।)

হাদীছে উক্ত তিনটি বিষয়কে ‘মিথ্যা’ শব্দে উল্লেখ করা হ’লেও মূলতঃ এগুলির একটাও প্রকৃত অর্থে মিথ্যা ছিল না। বরং এগুলি ছিল আরবী অলংকার শাস্ত্রের পরিভাষায় ‘তাওরিয়া’ (الةورية) বা দ্ব্যর্থ বোধক পরিভাষা। যেখানে শ্রোতা বুঝে এক অর্থ এবং বক্তার নিয়তে থাকে অন্য অর্থ। 

যেমন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদিন হযরত আয়েশার কাছে তার এক বৃদ্ধা খালাকে দেখে বললেন, কোন বৃদ্ধা জান্নাতে যাবে না। একথা শুনে খালা কান্না শুরু করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তারা তখন সবাই যুবতী হয়ে যাবে’।
(শামায়েলে তিরমিযী; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৯৮৭।)

হিজরতের সময় পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সম্পর্কে জনৈক ব্যক্তির প্রশ্নের জওয়াবে আবুবকর (রাঃ) বলেন, هذا الرجلُ يَهْديني الطريقَ ‘ইনি আমাকে পথ দেখিয়ে থাকেন’।
(বুখারী (দেওবন্দ ১৯৮৫) ১/৫৫৬ পৃঃ হা/৩৯১১ ‘নবীর হিজরত’ অনুচ্ছেদ ; আর-রাহীক্ব পৃঃ ১৬৮।)

এতে লোকটি ভাবল, উনি একজন সাধারণ পথপ্রদর্শক ব্যক্তি মাত্র। অথচ আবুবকরের উদ্দেশ্য ছিল তিনি আমাদের নবী অর্থাৎ ধর্মীয় পথপ্রদর্শক (يهديني الى طريق الجنة)।

অনুরূপভাবে যুদ্ধকালে রাসূল (ছাঃ) একদিকে বেরিয়ে অন্য দিকে চলে যেতেন। যাতে তাঁর গন্তব্য পথ গোপন থাকে। এগুলি হ’ল উক্তিগত ও কর্মগত তাওরিয়ার উদাহরণ।

(১) ইবরাহীম নিজেকে سقيم (অসুস্থ) বলেছিলেন, কিন্তু مريض (পীড়িত) বলেননি। নিজ সম্প্রদায়ের শিরকী কর্মকান্ডে এমনিতেই তিনি ত্যক্ত-বিরক্ত ও বিতৃষ্ণ ছিলেন। তদুপরি শিরকী মেলায় যাওয়ার আবেদন পেয়ে তাঁর পক্ষে মানসিকভাবে অসুস্থ (سقيم من عملهم) হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক ছিল। এরপরেও তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকতেও পারেন। 

(২) সব মূর্তি ভেঙ্গে তিনি বড় মূর্তিটার গলায় বা হাতে কুড়াল ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। যাতে প্রমাণিত হয় যে, সেই-ই একাজ করেছে। এর দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল কওমের মূর্খতাকে হাতে নাতে ধরিয়ে দেওয়া এবং তাদের মূর্তিপূজার অসারতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া। তাই মূর্তি ভাঙ্গার কাজটি তিনি বড় মূর্তির দিকে সম্বন্ধ করেন রূপকভাবে। তাছাড়া ঐ বড় মূর্তিটির প্রতিই লোকেদের ভক্তি ও বিশ্বাস ছিল সর্বাধিক। এর কারণেই মানুষ পথভ্রষ্ট হয়েছিল বেশী। ফলে সেই-ই মূলতঃ ইবরাহীমকে মূর্তি ভাঙ্গায় উদ্বুদ্ধ করেছিল। অতএব একদিক দিয়ে সেই-ই ছিল মূল দায়ী।

(৩) সারা-কে বোন বলা। নিঃসন্দেহে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে দ্বীনী ভাই-বোন।
সকল মুসলিম ভাই ভাই।
স্ত্রীর ইযযত ও নিজের জীবন রক্ষার্থে এটুকু বলা মোটেই মিথ্যার মধ্যে পড়ে না।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন হ’ল, তবুও হাদীছে একে ‘মিথ্যা’ বলে অভিহিত করা হ’ল কেন? এর জবাব এই যে, নবী-রাসূলগণের সামান্যতম ত্রুটিকেও আল্লাহ বড় করে দেখেন তাদেরকে সাবধান করার জন্য।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 186 views
0 votes
1 answer 180 views
0 votes
1 answer 194 views
0 votes
1 answer 229 views
+1 vote
1 answer 192 views
0 votes
1 answer 358 views
0 votes
1 answer 236 views
...