আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
72 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো ইনশাআল্লাহ উত্তর পেলে উপকৃত হতাম।
১.অনেকেই আমিনে ইনশাআল্লাহ বলে থাকেন এর মাসআলা কি হবে উস্তাদ? আল্লাহ্ তাওফীক দিন ইনশাআল্লাহ আমিন বলে থাকেন, দুয়ায় কি এভাবে ইনশাআল্লাহ বলা যাবে?

২.কুকুরের কি শুধুমাত্র লালা নাপাক? কুকুরের শুকনা গায়ে স্পর্শ করলে কি হারাম হবে? আমার পোশাকে যদি সন্দেহ হয় কুকুরের লালা লেগেছে তাহলে তা পাক করার উপায় কি হবে ইনশাআল্লাহ জানাবেন উস্তাদ

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

জবাব,

https://ifatwa.info/47114/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

হাদীস শরীফে এসেছে, আবু হুরায়রা রযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

 إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي الإِنَاءِ فَاهْرِقْهُ ثُمَّ اغْسِلْهُ ثَلاثَ مَرَّاتٍ

যখন কুকুর পাত্রে মুখ দেয় তখন পাত্রের বস্তুটি ফেলে দাও, তারপর পাত্রটি তিনবার ধুয়ে নাও। (দারাকুতনী ১৬৫)

শরীয়তের বিধান মতে কুকুরের লালা নাপাক কিন্তু কুকুরের শরীর নাপাক নয়। সুতরাং কুকুর যদি কারো শরীর অথবা কাপড় ছুঁয়ে দেয় তাহলে তা নাপাক হবে না। আর যেহেতু কুকুরের লালা নাপাক তাই যদি কাপড়ে, শরীরে বা অন্য কোনো জিনিসে লালা লেগে যায় তবে তা নাপাক হয়ে যাবে। অন্যথায় নাপাক হবে না। এছাড়া কুকুরের শরীরে তরল নাপাক লেগে থাকলে সেক্ষেত্রেও তা স্পর্শ করলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে। (আলবাহরুর রায়েক ১/১০১ ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮ আদ্দুররুল মুখতার ১/২০৮)

সুতরাং আপনার পায়ে শুধু কুকুর লাগলেই আপনার পা/কাপড় নাপাক হবেনা।  এক্ষেত্রে কুকুরের গায়ে নাপাকি লেগে থাকলে এবং তাহা আপনার পায়ে/পোশাকে প্রকাশ পেলে তথা নাপাকির আলামত গন্ধ/রং পাওয়া গেলেই কেবল আপনার পা/কাপড় নাপাক হবে।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/1334

★★ইনশা আল্লাহ অর্থ হল, যদি আল্লাহ চায় তবে হবে। জগতের কোনো কাজই ল্লাহর হুকুম ব্যতিত সংগঠিত হয় না। নেক কাজ হোক বা বদ কাজ হোক, সকল প্রকার কাজ বা বিষয় আল্লাহর হুকুমেই সংগঠিত হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বিভিন্ন জায়গায় নবী-রাসূল ও তাদের জাতির দিকে ইঙ্গিত করে ইনশাল্লাহ শব্দ ব্যবহার করেছেন। যেমন সুরা বাকারায় মুসা আ.-এর কওমের বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে ,

قَالُوا ادۡعُ لَنَا رَبَّکَ یُبَیِّنۡ لَّنَا مَا هِیَ ۙ اِنَّ الۡبَقَرَ تَشٰبَهَ عَلَیۡنَا ؕ وَ اِنَّاۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ لَمُهۡتَدُوۡنَ

তারা বলল, ‘তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দোয়া কর, তিনি যেন আমাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন, তা কেমন? নিশ্চয় গরুটি আমাদের জন্য সন্দেহপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আর নিশ্চয় আমরা আল্লাহ চাহে তো পথপ্রাপ্ত হব’। ( সুরা বাকরা, আয়াত, ৭০)

একটি বিবাদের মীমাংসার জন্যে বনী ইসরাইলের লোকেরা হযরত মূসা (আঃ)-এর শরণাপন্ন হলো। যেহেতু সাধারণ উপায়ে এ সমস্যার সামাধান করা সম্ভব ছিল না, তাই হযরত মূসা (আ.) অলৌকিক পন্থায় এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন। তিনি বনী ইসরাইলীদের বললেন, আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, একটি গরু জবাই করতে হবে। এরপর জবাই করা গরুর এক টুকরো গোশত নিহত ব্যক্তির গায়ে স্পর্শ করলে সে জীবিত হয়ে হত্যাকারীর নাম বলে দেবে।

আয়াতে এই ঘটনার বর্ণনায় ইকরিমাহ রহ. বলেন, যদি তারা ‘ইনশাআল্লাহ’ ‘আল্লাহ ইচ্ছে করলে’ বাক্য না বলত, তবে কখনই সে ধরনের গরু খুঁজে পেত না।  ( তাফসিরে তাবারি, ২/৮১)

হাদিস দ্বারাও সাব্যস্ত যে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম কাজ শুরুর আগে ইনশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করতেন। হাদিসে এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কেউ ইনশাআল্লাহ বলে কোনো কসম করলে তার গুনাহ হবে না। ( তিরমিজি, ১৪৫১)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

১. দোয়ার পর ‘আমিন’ বলা হয়। আমিন অর্থ : প্রার্থনা পূর্ণ হোক, দোয়া গৃহীত হোক ইত্যাদি। অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি কবুল করো, ডাকে সাড়া দাও। সুতরাং দোয়ার পরে “আমিন” বলা উচিত।

 ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতের হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নাত। যেমন ইনশাআল্লাহ আমি আগামী কাল আপনার কাজটি করে দিবো। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন, যেমনটি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

২. কুকুরের লালা নাপাক কিন্তু কুকুরের শরীর নাপাক নয়। সুতরাং কুকুর যদি কারো শরীর অথবা কাপড় ছুঁয়ে দেয় তাহলে তা নাপাক হবে না। সুতরাং কুকুরের শরীর যদি শুকনো থাকে, তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। তবে কুকুরের লালা লাগলে গোসল ফরয হয়না; বরং যেখানে লেগেছে তা তিনবার ধুয়ে নিলেই পাক হয়ে যায়। কমপক্ষে তিনবার ধোয়া জরুরী। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...