আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)

এক ভাই ইংরেজি শিখার জন্য একটা হুয়াটসেপ গ্রুপে জয়েন দেন, যেখানে ২ জন নারী আর বাকি ৪ জন ছেলে ছিলেন। ভাইটি গ্রুপে জয়েন দেয়ার আগে এডমিন কে কথা দেন যে, সে কন্টিনিউ ক্লাস করে যাবে + ১০০ দিন টার্গেট পুরণ করবে।

তো তিন দিন ক্লাস করার পর ভাইটির মনে হলো, গ্রুপে যেই ২ জন নারী আছে তাদের সাথে যে উনি কথা বলতেছেন এটা ঠিক হচ্ছে না, উনি ভাবলেন যে, উনি এমন নারীকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না যিনি ভাইটির মতই অন্য ২ জন পুরুষের সাথে ইংরেজি শিখার জন্য উনার মত গুগল মিটে কথা বলে যাবেন।

তো ভাইটি গ্রুপ থেকে লিভ নিলো, কিন্তু এডমিন তাকে মুনাফেক ডাকা শুরু করলো, কারন এডমিনের যুক্তি হলো, গ্রুপে জয়েন দেয়ার আগে ভাইটি কথা দিয়েছিলো যে, ১০০ দিন ক্লাস করবেই আর ভাইটির কথা হলো গ্রুপে যদি সবাই ছেলে হতো তাহলে উনি অবসশ্যই ক্লাস করতেন ই, ২ জন মেয়ে থাকার কারনে উনি আর কন্টিনিউ করতে চান না।

এখন প্রশ্ন হলো, 

(১) ভাইটি যে লিভ নিলো যেই যুক্তি দেখিয়ে তা কি ঠিক হয়েছে? (উনার কথা ফ্রিমিক্সিং এ ক্লাস করা ইসলামে নিষেধ আছে)

(২) মুনাফিক যেই যুক্তিতে বলতেছে তা ও কি ঠিক? (ভাইটি বলেই কিন্তু লিভ নিচ্ছে + লিভ নেয়ার কারন দেখিয়েছেন)

এডমিনের কথা হলো, মেয়েদের সাথে তো প্রয়োজনে কথা বলা যায়, আয়েশা (রা:) উনিও প্রয়োজনে শিক্ষা দানের জন্য পুরুষের সাথে কথা বলেছেন তাহলে আমরা কথা বলতেই পারি, গুগল মিটে তো কারো ফেইস দেখতেছিনা আমরা, জাস্ট একসাথে ইংরেজি শিখছি। কিন্তু ভাইটির যুক্তি হলো, ছেলে আর মেয়ে একসাথে গুগল মিটে গ্রুপ স্টাডি করাটা জায়েজ নেই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে,আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻳَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻟَﺴْﺘُﻦَّ ﻛَﺄَﺣَﺪٍ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻥِ ﺍﺗَّﻘَﻴْﺘُﻦَّ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺨْﻀَﻌْﻦَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻓَﻴَﻄْﻤَﻊَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻣَﺮَﺽٌ ﻭَﻗُﻠْﻦَ ﻗَﻮْﻟًﺎ ﻣَّﻌْﺮُﻭﻓًﺎ

(তরজমা) তোমরা (পর পুরুষের সাথে) বাক্যালাপে কোমলতা অবলম্বন কর না। যাতে এরূপ লোকের অন্তরে আকাঙ্ক্ষা (সঞ্চার) হয়, যার অন্তরে কুপ্রবৃত্তি রয়েছে। (সূরা আহযাব : ৩২)

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻟَﺎ ﺗَﺪْﺧُﻠُﻮﺍ ﺑُﻴُﻮﺕَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥ ﻳُﺆْﺫَﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ ﻏَﻴْﺮَ ﻧَﺎﻇِﺮِﻳﻦَ ﺇِﻧَﺎﻩُ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻴﺘُﻢْ ﻓَﺎﺩْﺧُﻠُﻮﺍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻃَﻌِﻤْﺘُﻢْ ﻓَﺎﻧﺘَﺸِﺮُﻭﺍ ﻭَﻟَﺎ ﻣُﺴْﺘَﺄْﻧِﺴِﻴﻦَ ﻟِﺤَﺪِﻳﺚٍ ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﺫِﻱ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻓَﻴَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻣِﻨﻜُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻣَﺘَﺎﻋًﺎ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺣِﺠَﺎﺏٍ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻟِﻘُﻠُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻭَﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻦَّ ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗُﺆْﺫُﻭﺍ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻥ ﺗَﻨﻜِﺤُﻮﺍ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟَﻪُ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِﻩِ ﺃَﺑَﺪًﺍ ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﻛَﺎﻥَ ﻋِﻨﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻈِﻴﻤًﺎ

হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।(সূরা আহযাব-৫৩)

উপরোক্ত আয়াতের ভিত্তিতে বলা যায় যে,
পুরুষের জন্য বিনা প্রয়োজনে কোনো বেগানা নারীর সাথে কথা বলা নিষেধ।তবে গায়রে মাহরাম আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পর্দার আড়ালে থেকে বলার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।
সূরা আহযাব : ৩২; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৭৬৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৩৮; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৬; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ২৬৯

প্রশ্ন হল নারীদের আওয়াজ কি সতরের অন্তর্ভুক্ত?
এ সম্পর্কে উলামাদের মধ্যে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।এমনকি হানাফি মাযহাবের উলামাদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে-
হানাফি উলামাদের কিছুসংখ্যকের গবেষকদের বর্ণনামতে নারীদের আওয়াজ সতরের অন্তর্ভুক্ত।তবে এ রেওয়াত মারজুহ(অগ্রগণ্য নয়)।
অন্যদিকে কিছুসংখ্যক গবেষকদের বর্ণনামতে নারী আওয়াজ সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়।এ রেওয়াত-ই রাজেহ(অগ্রগণ্য) ।অর্থাৎ ফিৎনার অাশঙ্কা না থাকলে কোমলতা পরিহার করে প্রয়োজনে গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে নারী কথা বলতে পারবে।
.
বিস্তারিত জানুনঃ   
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
নারীদের কন্ঠ যেহেতু পর্দার অন্তর্ভুক্ত, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেই যুক্তি দেখিয়ে উক্ত ব্যাক্তি লিভ নিয়েছে,সেটি ঠিক হয়েছে।

এখন কথা হলো সে যেহেতু ১০০ দিন ক্লাস করার চুক্তিতে জয়েন হয়েছিলো,সুতরাং এক্ষেত্রে বেতনের বিষয় থাকলে এডমিনের সাথে কথা বলে মিমাংসা করতে হবে।

এক্ষেত্রে এডমিন ফুল টাকা চাইলে ফুল টাকা দিতে হবে।

(০২)
কথা দিয়ে কথা না রাখার যুক্তিতে মুনাফিক বলার যুক্তি ঠিক আছে।
তবে উক্ত ব্যাক্তি যেই ওযরে লিভ নিয়েছে, সেটি শরীয়ত সম্মত। 

★নারীদের কন্ঠ পর্দার অন্তর্ভুক্ত,বিশেষ প্রয়োজনে পর্দার আড়ালে থেকে কন্ঠস্বর মোটা করা ও ফিতনার আশংকা না থাকা,অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা ইত্যাদি শর্তে জায়েজ।
তবে শিক্ষাদানের বিষয়টি শরীয়তের দৃষ্টিকোন হতে বিশেষ প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়।

কেননা দেশে লাখো পুরুষ শিক্ষক আছে,যাদের থেকে শিক্ষা অর্জন করা যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...