আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি ব্যবসা করি আমার নিজের দোকান আছে। আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট। ডেলিভারি হওয়ার প্রায় আরো দুই মাস আছে। তার এখন কাজ করতে একটু কষ্ট হয়, যেহেতু শরীর ভারী হয়ে গেছে। তো এখন আমি তাকে বাপের বাড়ি নিয়ে যাই তার প্রবল ইচ্ছা থাকার কারণে। এখন তার আর আমার উভয়েরই ইচ্ছে দোকানের কাজ শেষ করে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে রাত্রিটা থাকার জন্য। তারপর আবার সকালে নাস্তা করে দোকানে চলে আসবো। যেহেতু শ্বশুরবাড়ি তেমন দূরে না, অটো দিয়ে গেলে ২০-৩০ মিনিটের রাস্তা। আর প্রতিদিন যাওয়ার ব্যাপারে শ্বশুরবাড়িরও কোন সমস্যা নাই। এখন সমস্যা হচ্ছে আমার আব্বু আম্মু এটা একদম পছন্দ করতেছে না। তারা নিষেধ করতেছে। তারা বলতেছে এত রাত্রিতে যাওয়া রিসকি যদি কোন সমস্যা হয়। এখন সমস্যা হওয়ার বিষয়টা তো নিশ্চিত করে বলতে পারি না। আমার স্ত্রী যেহেতু একটা লং টাইম এর জন্য গিয়েছে প্রায় পাঁচ ছয় মাস। এখন আব্বু আম্মু বলতেছে ১৫ দিনে একবার আর নয় সপ্তাহে একদিন যেতে। এখন এতদিন পর গেলে গুনাহের বিষয়টাও আছে। যদি স্ত্রী এতদিন দূরে থাকার কারণে গোপন পাপের আশঙ্কা থাকে। গুনাহের বিষয়টা শিওর করে বলতে পারিনা। ১৫ দিন পর পর যাওয়া তো সম্ভব হবে না। কারণ এতদিন গুনাহ থেকে বাঁচা অসম্ভব। সপ্তাহে একদিনই সিওর হতে পারতেছি না, যেহেতো শারীরিক কন্ডিশন। আবার এক দিক দিয়ে আমার আর্থিক সমস্যার কারণে আরেকটা চিন্তার বিষয়। যদি প্রতিদিন রাত্রি যায় তাহলে আমার প্রতিদিন তেমন কিছু নিতে হবে না শুধু ভাড়াটাই লাগবে। আর ভাড়া খুব কম। কিন্তু সপ্তাহে যদি একদিন করে যায় তাহলে তো অবশ্যই কিছু নিয়ে যেতে হবে, খালি হাতে তো যেতে পারবো না। তো সপ্তাহে একদিন গেলে দেখা যায় যে, প্রতিদিন যাওয়ার থেকে সপ্তাবে একদিন যাওয়ার খরচটা ডাবল পড়ে। আর্থিকভাবে খুবই সমস্যা থাকার কারণে এ বিষয়টাও একটা ভাববার বিষয় আমার কাছে। এখন বাবা-মা এটা চাচ্ছে না। তারা চাচ্ছে যে সপ্তাহে একদিন যায়। তারা আমার আর্থিক দিক দিয়ে কোন খেয়ালই করে না। হালাল ইনকাম করে সংসার চালানো যে কতটা কষ্টের এটা তারা বোঝেনা। এমনকি হালাল ভাবে কম ইনকাম করার কারণে আরো বিভিন্ন কটু কথা শুনতে হয় বাবা-মার থেকে। তারা স্পষ্টভাবেই বলে তারা আমার প্রতি অসন্তুষ্ট। অথচ তাদের অসন্তুষ্ট থাকার একমাত্র কারণই হচ্ছে দ্বীন। আমি আমার স্ত্রী কঠোর ভাবে দ্বীন পালন করি বিধায় আমাদের অনেক সাফার করতে হয়। আমার স্ত্রী কঠোর ভাবে পর্দা করে এজন্য এটা তাদের পছন্দ হয় না। আর আমি দ্বীনের বিষয়গুলো কঠোরভাবে মানা কারণে তারা আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। এবং বলে বাবা মা ও অসন্তুষ্ট থাকলে এই আমল কোন কাজে আসবে না। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য বিয়ে করেছি এটার প্রতিও তাদের বিদ্বেষ। আসলে তাদের কোন কিছুর প্রতি বিদ্বেষ থাকতো না যদি আমার ইনকামটা মান্থলি ভালো হতো। কিন্তু আমিতো রবে অবাধ্য হয়ে হারাম ইনকাম করতে পারি না। আর হালাল ইনকাম তেমন বেশি ইনকাম হয় না। যার কারনে চলতে ফিরতে খুব কষ্ট হয়। অনেক সময় প্রয়োজনীও জিনিসও পূর্ণ করতে পারিনা। বিদেশ থেকে দেশে একবারে আসার জন্য তারা আমার প্রতি অনেক বেশি অসন্তুষ্ট। কিন্তু আমার তো বাধ্য হয়ে, আমার দ্বীন রক্ষার জন্য আমার ঈমান রক্ষার জন্য গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য তাদের অবাধ্য হয়ে আমাকে দেশে আসতে হয়েছে। তারা তো আর এগুলো বুঝে না। তারা বলে কত মানুষই তো কত বছর ধরে বিদেশ করতেছে। এখন তাদেরকে এগুলো বুঝাতে গেলে তাদের সাথে তর্ক হয়ে যায়। তারা পাগল বলে এবং বলে যে সাহাবীদের যুগে এখন নাই। এত হারাম হালাল দেখতে গেলে দুনিয়াতে বাঁচা সম্ভব না। তাদের এই ধরনের বিভিন্ন কথাবার্তা। এখন আমার যে সার্বিকভাবে দ্বীনের উপরে অটল থাকে কতটা কষ্ট হচ্ছে এগুলো কেউ বুঝেনা।
১. এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, বাবা-মার কথা না শুনে প্রতিদিন রাত্রি যাপনের জন্য শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া জায়েজ হবে নাকি নাজায়েজ?

২. গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য তাদের অসন্তুষ্টিতে বিয়ে করা গুনাহের কাজ হয়েছে নাকি না?

৩. নিজের দ্বীন ঈমানের চিন্তা করে পিতামাতার অবাধ্য হয়ে বিদেশ থেকে একেবারে দেশে আসা কি আমার জন্য উচিত হয়েছে? নাকি আল্লাহর কাছে তাদের অবাধ্য সন্তান হিসেবে সাব্যস্ত হবে?

1 Answer

0 votes
by (713,160 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1722

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি একদিন শশুড়বাড়ী এবং একদিন নিজের অবস্থান করে নিতে পারেন।আশাকরি এতেকরে আপনার উভয় দিক রক্ষা হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (713,160 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...