আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in ওয়াসওয়াসা by (75 points)
আসসালামু আলাইকম।

আমি অনেক চিন্তিত। আমার প্রশ্নটা আপনার বিরক্তির কারণ হতে পারে।আমাকে ক্ষমা করবেন।আসলে আমি  কুরআন হাদিস বেশি জানি না।আমার করা নিচের প্রশ্নগুলো কুরআন হাদিস অনুযায়ী  সঠিকভাবে  উত্তর দিবেন।আমি আপনাদের অনেক বিশ্বাস করি।আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি ডাক্তারও দেখিয়েছি

প্রশ্ন১ঃ আমার বিশ্বাস  আমি বাংলা ভাষা সঠিকভাবে শিখতে পারিনি।আমি সব ভুল শিখেছি বাংলা ভাষায়। আমি ভুল বাংলা ভাষা  শিখেছি।এখন এটা কী ওয়াসওয়াসা।

প্রশ্ন২ঃ  বাংলা ভাষায় শেখা সব  কী সঠিক।  কখনোই কোনো পরিবর্তন না করে সর্বাবস্থায়  আমি কী বাংলা ভাষায় শেখা সব  সঠিক হিসেবে আজীবন বা সবসময় অনুসরন করব।

প্রশ্ন৩ঃ মানুষ তো গুনাহ করে।আবার তওবাও করে।আর মা-বাবা  তো আমাদের  আপন। আমার মা-বাবা আমাকে অনেক সাহায্য করে।তাদেরকে আমি ভালোবাসি।আমি যদি মা বাবাকে বিশ্বাস করি তাহলে আমার  হয়তো  সহজভাবে জীবন কাটানো সম্ভব হতে পারে।তাই আমি যদি সবসময় বা আজীবন  সববিষয়ে মা ও বাবাকে বিশ্বাস করি তাহলে কী কোনো গুনাহ হবে।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
এটা ওয়াসওয়াসা নয়।

(০২)
হ্যাঁ, অনুসরন করতে পারেন।

(০৩)
মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)
 
সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ 

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)
 
হাদিস শরীফে এসেছে-

ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺴْﻠِﻢُ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺟَﺮِﻳﺮُ ﺑْﻦُ ﺣَﺎﺯِﻡٍ، ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ ” ﻟَﻢْ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِ ﺇِﻻَّ ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻋِﻴﺴَﻰ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ، ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ، ﻓَﺠَﺎﺀَﺗْﻪُ ﺃُﻣُّﻪُ ﻓَﺪَﻋَﺘْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃُﺟِﻴﺒُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ . ﻓَﻘَﺎﻟَﺖِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻻَ ﺗُﻤِﺘْﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺮِﻳَﻪُ ﻭُﺟُﻮﻩَ ﺍﻟْﻤُﻮﻣِﺴَﺎﺕِ . ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ ﻓِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘِﻪِ، ﻓَﺘَﻌَﺮَّﺿَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﻛَﻠَّﻤَﺘْﻪُ ﻓَﺄَﺑَﻰ، ﻓَﺄَﺗَﺖْ ﺭَﺍﻋِﻴًﺎ، ﻓَﺄَﻣْﻜَﻨَﺘْﻪُ ﻣِﻦْ ﻧَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻓَﻮَﻟَﺪَﺕْ ﻏُﻼَﻣًﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﻣِﻦْ ﺟُﺮَﻳْﺞٍ . ﻓَﺄَﺗَﻮْﻩُ ﻓَﻜَﺴَﺮُﻭﺍ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻪُ، ﻭَﺃَﻧْﺰَﻟُﻮﻩُ ﻭَﺳَﺒُّﻮﻩُ، ﻓَﺘَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟْﻐُﻼَﻡَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﺃَﺑُﻮﻙَ ﻳَﺎ ﻏُﻼَﻡُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺍﻋِﻲ . ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻧَﺒْﻨِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻚَ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ . ﻗَﺎﻝَ ﻻَ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﻃِﻴﻦ

আবূ হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন জন শিশু ব্যতিত আর কেউ দোলনায় থেকে কথা বলেননি। বনী ইসরাঈলে এক ব্যক্তি ছিলো যাকে ‘জুরাইজ’ বলে ডাকা হতো একদা ইবাদাতে (নফল নামাজে) রত থাকা অবস্থায় তার মা এসে তাকে ডাকলো। সে ভাবল আমি কি তার ডাকে সাড়া দেব, না কি সালাত আদায় করতে থাকবো (জবাব না পেয়ে) অতপঃর তার মা বলল, ইয়া আল্লাহ! ব্যভিচারিণীর চেহারা না দেখা পর্যন্ত তুমি তাকে মৃত্যু দিওনা। জুরাইজ তার ইবাদাত খানায় থাকতো। একবার তার কাছে একটি মহিলা আসলো, সে (অসৎ উদ্দেশ্যে ) তার সাথে কথা বলল, কিন্তু জুরাইজ তা অস্বীকার করল। তারপর মহিলাটি একজন রাখালের নিকট গেল এবং তাকে দিয়ে মনের বাসনা পূরণ করল। পরে সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলো। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এটি কার থেকে? স্ত্রী লোকটি বলল, জুরাইজ থেকে লোকেরা তার কাছে আসল এবং তার ইবাদাত খানা ভেঙ্গে দিল। আর তাকে নীচে নামিয়ে আনল ও তাকে গালি গালাজ করল। তখন জুরাইজ উযূ সেরে ইবাদাত করল.. এরপর নবজাত শিশুটির নিকট এসে তাকে জিজ্ঞাসা করল। হে শিশু! তোমার পিতা কে? সে জবাব দিল সেই রাখাল। তারা (বনী ইসরাঈলের লোকেরা) বলল, আমরা আপনার ইবাদতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিচ্ছি। সে বলল, না বরং মাটি দিয়ে(করো) [সহীহ বুখারী,কিতাবুল-আহাদিসে আম্বিয়া, হাদীস নং-৩১৯৪]

★তবে গুনাহের কাজে মাতা পিতার আদেশ মানা জায়েজ নেই।

হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহঃ লিখেন,

ويلزم الإنسان طاعة والديه في غير المعصية وإن كانا فاسقين ، وهو ظاهر إطلاق أحمد ، وهذا فيما فيه منفعة لهما ولا ضرر ، فإن شق عليه ولم يضره : وجب ، وإلا فلا

গোনাহের কাজ ব্যতীত মুবাহ তথা বৈধ কাজে
মাতা পিতার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।যদি তার ফাসিকও হয়।এটা তখন যখন তাতে মাতাপিতার ফায়দা থাকবে,এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।যদি সন্তানের উপর কষ্টদায়ক হয় তবে ক্ষতিকারক না হয়, তাহলে তখন মাতাপিতার আদেশ মান্য করা ওয়াজিব নয়।(আল-ফাতাওয়াল কুবরা-৫/৩৮১)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যদি সবসময় বা আজীবন সববিষয়ে আপনার মা অথবা বাবাকে  বিশ্বাস করেন,তাহলে গুনাহ হবেনা ।

তবে তারা কোনো স্পষ্ট মিথ্যা বললে সেটি বিশ্বাস করা যাবেনা,শরীয়াহ বিরোধী কিছু বললে তাহা মানা যাবেনা, তারা গুনাহের কোন আদেশ করলে সেটি করা যাবেনা। অসত্য কোনো কথা/কাজ বিশ্বাস করা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 86 views
...