আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম
১. আনোয়ার লাইব্রেরি প্রকাশিত নামাজ বিশ্বকোষের ১ম খন্ডের ৯০ পৃষ্ঠায় বলা আছে ইমামের কাজ কর্ম দ্বারা বুঝা গেলো সে কাফের কিন্তু ইমাম নিজেকে মুসলিম ই বলে। তাহলে তার পিছনে যত নামাজ মুসল্লীরা পড়েছে সেগুলো পুনরায় পড়া ফরজ। আবার ১০৪ পৃষ্ঠায় বলা আছে ইমাম যদি কুফুরীর কথা স্বীকার করে এবং সে বলেছে এতদিন কুফুরী অবস্থায় নামাজ পড়িয়েছিলো তাহলে এতদিন মুসল্লীরা যত নামাজ পড়েছে সেটা আদায় করা লাগবে না। সেটা সহীহ হয়ে যাবে।
এই ফতোয়াগুলো ঠিক কাছে? এটা কেমন উল্টা লাগতেছে আমার কাছে।  কারণ কুফুরী স্বীকার না করলে পড়তে হবে। আর কুফুরী স্বীকার করলে পড়তে হবে না  বিষয়টা উল্টা লাগতেছে।

২. ইমাম যদি ১ম বৈঠকে না বসে উঠে যাওয়া শুরু করে তাহলে মুক্তাদী কি লুকমা দিতে পারবে? নাকি শুধু ইমামের অনুসরণ করে তারাও উঠে যাবে। বইতে শুধু লিখা আছে মুক্তাদী ইমামের অনুসরণ  করবে। লুকমা দেওয়া বা না দেওয়ার কথা নাই। এখন প্রশ্ন হলো লুকমা দেওয়া কি জায়েজ এই ক্ষেত্রে?

৩. ইমাম শেষ বৈঠকে দাঁড়িয়ে গেলে মুক্তাদী লুকমা দেবে। এখন যিনি ইমাম তিনি যদি বুঝতে পারেন যে ৪ রাকাত পড়া শেষ করে তিনি ৫ম রাকাতে দাঁড়িয়েছেন তাহলে তার কি করা উচিত হবে? কিয়াম থেকে সাথে সাথে বসে যাওয়া? মানে ইমাম ৫ম রাকাতের যেই অবস্থায় আছে সেই অবস্থা থেকে সাথে সাথে  বসে যাবে?

৪. যদি ইমাম ৫ম রাকাতের রুকু করে ফেলে তাহলে মুক্তাদীরা নিজেরা তাশাহুদ, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরালে নামাজ হয়ে যাবে।বইতে এমন ই বলা আছে। এটা কি সঠিক?

৫. হাদীসে বলা হইছে এক দিরহাম রক্ত কাপড়ে লাগলে সেটা পরে নামাজ হবে না। কিন্তু ১ দিরহামের কম রক্ত হলে সেই কাপড় পরে নামাজ হবে। এখন প্রশ্ন হলো ১ দিরহামের কম অন্যান্য নাপাকি যেমন, মল, মুত্র, বীর্য ইত্যাদি নাপাকির কথা তো হাদীসে নেই তাহলে আমাদের মাজহাবের দলিল কি?
আমাদের মাজহাবের ফতোয়া যেটা আপনারা আগে বলেছেন সেখানে তো বলা হইছে ১ দিরহামের কম যেকোনো নাপাকি  কাপড়ে থাকলে সেটা পরে নামাজ আদায় হয়ে যাবে। রক্তের তো দলিল আছে। বাকি নাপাকিগুলোর ব্যাপারে হাদীসে কি কোনো দলিল আছে?
by (5 points)
শায়েখ এই প্রশ্ন গুলো ওয়াসওয়াসা না দয়া করেন শায়েখ https://ifatwa.info/88432/
by (5 points)
শায়েখ এই প্রশ্ন গুলো ওয়াসওয়াসা না দয়া করেন শায়েখ https://ifatwa.info/88432/

1 Answer

0 votes
by (677,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
উক্ত মাসয়ালার মধ্যে কিছু মতবিরোধ রয়েছে।
এখানে মূল মাসয়ালা বুঝে নেই।
তাহলেই আশা করি প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ-

فالكافر لا تجزئ إمامته, فمن صلى خلفه فصلاته باطلة تجب إعادتها ـ عند أكثر أهل العلم ـ  ولو كان لا يعلم بكفره, وقال بعضهم لا إعادة على من صلى خلفه إذا كان لا يعلم بكفره.

কাফেরের পিছনে নামাজ জায়েজ নেই।
সে নিজেই নামাজের আহল নয়।
কেহ যদি কাফেরের পিছনে নামাজ আদায় করে, তাহলে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে। অধিকাংশ ইমামদের মতে,যদিও সে ইমামের কুফরির বিষয়টি না জানে।
তবে কতিপয় ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে যদি মুক্তাদী ইমামের কাফের হওয়ার বিষয়টি না জানে,সেক্ষেত্রে উক্ত কাফের পিছনে নামাজ পড়লে তার নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবেনা।

  جاء في المغني لابن قدامة: وجملته أن الكافر لا تصح الصلاة خلفه بحال سواء علم بكفره بعد فراغه من الصلاة، أو قبل ذلك، وعلى من صلى وراءه الإعادة. وبهذا قال الشافعي، وأصحاب الرأي، وقال أبو ثور، والمزني: لا إعادة على من صلى خلفه، وهو لا يعلم؛ لأنه ائتم بمن لا يعلم حاله، فأشبه ما لو ائتم بمحدث. ولنا، أنه ائتم بمن ليس من أهل الصلاة، فلم تصح صلاته. انتهى.
সারমর্মঃ-
কাফের পিছনে নামাজ জায়েজ নেই। চাই ইমামের কাফের হওয়ার বিষয় নামাজের আগে জানুক বা নামাজের পরে জানুক।
সুতরাং কাফেরের পিছনে নামাজ পড়লে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।এটিই ইমাম শাফেয়ী সহ অধিকাংশ ইমামদের মত।
ইমাম আবু ছাউর,ইমাম মাযেনী রহঃ দের মতে, যদি কেহ ইমামের কাফের হওয়ার বিষয়টি না জেনে তার পিছনে ইক্তেদা করে নামাজ আদায় করে,সেক্ষেত্রে পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবেনা। কেননা সে এমন ব্যাক্তির ইক্তেদা করেছে,যার অবস্থা সম্পর্কে সে জানেনা।,,,

(০২)
হ্যাঁ এক্ষেত্রে মুক্তাদীরা ইমামকে লোকমা দিবে।

(০৩)
যখনই মনে পড়বে,ঐ অবস্থা থেকে সাথে সাথেই বসে যাবে। এবং শেষে সেজদায়ে সাহু দিয়ে নামাজ শেষ করবে।

তবে ৫ম রাকাতের সেজদায় চলে গেলে আর বসবেনা। এক্ষেত্রে ৬ রাকাত পূর্ণ করবে।

এক্ষেত্রে পুরাটাই নফল হবে।
তাই উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে মুক্তাদীরা দাঁড়িয়ে যাবেনা।
বরং ইমামের অপেক্ষা করবে। যদি ইমাম ৫ম রাকাতের সেজদার আগেই ফিরে আসে,তাহলে মুক্তাদীরা ইমামের সাথেই নামাজ পূর্ণ করবে,ইমামের সাথে সেজদায়ে সাহু দিবে।

আর যদি ইমাম সাহেব ৫ম রাকাতের সেজদাহ করে ফেলে,সেক্ষেত্রে মুক্তাদীরা একাকী সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে দিবে।
মুক্তাদীদের নামাজ হয়ে যাবে।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 12):
"وأربعة لايتبع فيها: زيادة تكبير عيد، أو جنازة، وركن، وقيام لخامسة. 

(قوله: وقيام لخامسة) داخل تحت قوله: وركن، تأمل. قال في شرح المنية: ثم في القيام إلى الخامسة إن كان قعد على الرابعة وينتظره المقتدي قاعدًا، فإن سلم من غير إعادة التشهد سلم المقتدي معه وإن قيد الخامسة بسجدة سلم المقتدي وحده؛ وإن كان لم يقعد على الرابعة. فإن عاد تابعه المقتدي، وإن قيد الخامسة فسدت صلاتهم جميعًا، ولاينفع المقتدي تشهده وسلامه وحده. اهـ"
সারমর্মঃ-
চারটি ক্ষেত্রে ইমামের আনুগত্য করা যাবেনা।
ঈদের নামাজ ও জানাযার নামাজের তাকবির হতেও অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে,কোনো রুকম আদায়ের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে, ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে,,,,,। 

(০৫)
শরীরে/কাপড়ে নাপাকি লাগলে শরীয়তের বিধান মতে এক্ষেত্রে যদি উক্ত নাপাকির পরিমান এক দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণ হয়, তাহলে উক্ত শরীরে/কাপড়ে নামায পড়া জায়েজ নয়। কিন্তু যদি এক দিরহাম থেকে কম হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহ নামায পড়া জায়েজ আছে।

عن أبي هريرة رضي الله عنه  عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1)

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء،  باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন  নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}

قال محمد فى الآثار: أخبرنا أبو حنيفة رح عن حماد عن ابراهيم قال: إذا كان الدم قدر الدرهم والبول وغيره فأعد صلاتك، وإن كان أقل من قدر الدرهم فأمض على صلاتك، ص-28) فإن قلت: هذا إنما يدل على عفو الأقل عن الدرهم دون قدر الدرهم ومذهب الحنفية أوقدر الدرهم عفو ايضا، احاديث الإكتفاء بالأحجار فى الإستنجاء تفيد كون قدر الدرهم عفو، لأن موضع الاستنجاء مقدر به، (اعلاء السنن-1/405

এক দিরহাম নির্দিষ্ট করার সূরত হল, হাতের তালু সোজা করে রেখে তার উপর এক ফোটা পানি ফেলা, হাত নড়ানো বা কাত করা ছাড়া যতটুকু স্থান পরিব্যপ্ত হবে ততটুকুই হল এক দিরহামের আয়তন। 
,
এতটুকু পরিমাণ তরল গলীজ নাপাক হলে উক্ত কাপড়সহ নামায আদায় জায়েজ হবে।

আর যদি গলীজ নাপাকটি শক্ত হয় , তাহলে এক দিরহামের ওজন পরিমাণসহ নামায আদায় জায়েজ হবে। এক দিরহামের ওজনের পরিমান বর্তমানে প্রায় তিন গ্রাম। {কানযুদ দাকায়েকের টিকা-১৫-১৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
বাকি নাপাকিগুলোর ব্যাপারে হাদীসে কোনো দলিল পাইনি। এক্ষেত্রে উক্ত হাদীসই সব নাপাকির দলিলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট।  
বাকি নাপাকিগুলোর ব্যাপারে দলিল হিসেবে ফিকহের কিতাবে মূলনীতি উল্লেখ রয়েছে।
যাহা উপরে উল্লেখ রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 83 views
0 votes
1 answer 210 views
0 votes
1 answer 347 views
0 votes
1 answer 96 views
...