আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ্

উস্তাদজী কিছু প্রশ্ন!!!

১/ ১১ জন আম্মাজান সবাই কি কুরআনের হাফেজা ছিলেন?
১১ জন আম্মাজান তাদের জীবনে কে কোন ইলমের স্তরে ছিলেন ? যেমন আয়েশা রা: মুহাদ্দিস ছিলেন জানি এবং এই ইলম ছড়িয়ে দিয়েছেন উম্মতের মধ্যে। তিনি কি হাফেজা ছিলেন?
২/ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটা হাদিস আছে , আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তার বান্দাদের বলবেন পড়ো এবং পড়তে পড়তে যারা শেষ করতে পারবেন তাদের স্থান হবে সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফেরদৌস এ , প্রশ্ন হচ্ছে যারা হিফয করতে পারবেন না, তারা কি রবের কাছেই একটা বাড়ি পাবেন না? বা সর্বোচ্চ চূড়ায় থাকতে পারবে না?
কেউ যদি এক পারা হিফয করে তবে তার জান্নাতের বাড়ি সেখানে হবে, আয়াতের সমান এবং যে ততটুকু মুখস্থ করবে জান্নাতে তার স্থান হবে ততটুকু। এমন শুনেছি এটা কতটুকু সহীহ?
৩/ রবের কাছাকাছি থাকতে কি করণীয়? যদিও আমরা আমল নিয়ে কেউ জান্নাতে যেতে পারবো না, রবের করুণায় যাব। তারপরও রব তো চান আমরা রবের সন্তুষ্টির জন্য করি, সুতরাং আমি কি করলে রবের কাছাকাছি থাকতে পারবো?

৪/ আমার বয়স ২৭+ আমি জেনারেল এ পড়ালেখা শেষ করেছি আলহামদুলিল্লাহ্,হিফয করার ইচ্ছা ছিল খুব, আমি যদি এখন হিফয করি তবে, আলেমা কোর্স, আরবি ভাষা শিক্ষা, ক্বিরআত, রিওয়াআহ নিয়ে পড়া টা একটু কঠিন হয়ে যায় যেহেতু এখন এত সময় ও নেই ঐভাবে পড়ার এবং আমার ইচ্ছা কুরআনের একাডেমি দেওয়ার, নিজে শেখা এবং অন্যকে পৌঁছে দেওয়া, এ জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে ইলমি দিক থেকে নিজেকে, পরিবার এবং উম্মাহর কল্যাণে। এ ক্ষেত্রে আমি কোন দিকে আগালে রব পছন্দ করবেন? যদিও ইস্তেখাড়া করেছি আলহামদুলিল্লাহ,
এখন রবের সন্তুষ্টির ইশারার উদ্দেশ্য মাশোয়ারা করছি সিদ্ধান্তের । হিফয করাটা উত্তম হবে নাকি মূল ফোকাস দিবো কুরআন হাদীস এর জ্ঞান চর্চায় ? অন্য যেগুলো বললাম।

৫/ হাফেজ এবং আলেমের মর্যাদা কিয়ামতের দিন, কারা আল্লাহর সবচেয়ে কাছে থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
আল ইতকান ফি উলুমিল কুরআন গ্রন্থে আছেঃ- 
উম্মাহাতুম মু'মিনিন দের মধ্যে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ, হাফসা রাঃ, উম্মে সালমাহ রাঃ কুরআনের হাফেজাহ ছিলেন।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارَتْقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারীকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, পাঠ করতে থাকো আর উপরে উঠতে থাকো। (অক্ষরে অক্ষরে ও শব্দে শব্দে) সুস্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাকো, যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পাঠ করতে। কারণ তোমার স্থান (মর্যাদা) হবে যা তুমি পাঠ করবে শেষ আয়াত পর্যন্ত (আয়াত পাঠের তুলনাগত দিক থেকে)। (আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)(মিশকাত-২১৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যারা হিফয করতে পারবেননা,তারা হাফেজদের ন্যায় বাড়ি পাবেননা।
তবে তারাও তাদের জন্য নির্ধারিত বাড়ি জান্নাতে পাবেন।
সেটিও প্রাসাদ হবে। সেই প্রাসাদের সর্বোচ্চ চূড়ায় তারা থাকতে পারবেন।

আপনি যেই বিষয়টি শুনেছেন,এটি অনেকের মতেই সহীহ।  তাই আমাদের জন্য উচিত হলো এক পাড়া দুই পাড়া,আমলি সুরা গুলি  হলেও কুরআনের কিছু অংশ মুখস্থ করা।

(০৩)
আল্লাহর কাছে থাকার সুযোগ নেই।
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছাকাছি থাকার সুযোগ আছে।
আপনি সেই আমল গুলি করতে পারেন।

এমন কিছু কাজ আছে, যা করলে নবী (ﷺ)-এর কাছাকাছি দরজা পাওয়া যাবে। যেমনঃ

মহানবী (ﷺ) বলেন “আমি এবং নিজের অথবা অপরের অনাথ (এতীমের) তত্ত্বাবধায়ক জান্নাতে (পাশাপাশি) থাকব। আর বিধবা ও দুঃস্থ মানুষকে দেখাশুনাকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।” (ত্বাবারানীর আওসাত্ব, সহীহুল জামে’ ১৪৭৬ নং)।

আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, “আমি ও অনাথ (এতীমের) তত্ত্বাবধায়ক জান্নাতে এরূপ (পাশাপাশি) বাস করব।” এর সাথে তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করলেন এবং দুটির মাঝে একটু ফাঁক করলেন।” (বুখারী ৫৩০৪ নং)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খাদেম ও আহলে সুফফার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রাবীআহ ইবনে কাব আসলামী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে রাত কাটাতাম। আমি তাঁর কাছে ওযুর পানি এবং প্রয়োজনীয় বস্তু এনে দিতাম। (একদিন তিনি খুশী হয়ে) বললেন, “তুমি আমার কাছে কিছু চাও।” আমি বললাম, আমি আপনার কাছে জান্নাতে আপনার সাহচর্য চাই। তিনি বললেন, “এ ছাড়া আর কিছু?” আমি বললাম, বাস ওটাই। তিনি বললেন, “তাহলে তুমি, অধিকাধিক সিজদা করে (অর্থাৎ প্রচুর নফল নামায পড়ে) তোমার (এ আশা পূরণের) জন্য আমাকে সাহায্য কর।” (মুসলিম)

তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি দুটি অথবা তিনটি কন্যা, কিংবা দুটি অথবা তিনটি বােন তাদের মৃত্যু অথবা বিবাহ, অথবা সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত, কিংবা ঐ ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত যথার্থ প্রতিপালন করে, সে ব্যক্তি আর আমি (পরকালে) তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলিদ্বয়ের মত পাশাপাশি অবস্থান করব।” (আহমদ ৩/ ১৪৭ ১৪৮, ইবনে হিব্বান ২০ ৪৫ নং সিলসিলাহ সহীহাহ ২৯৬ নং)

(০৪)
পরামর্শ থাকবে, মূল ফোকাস দিবেন কুরআন হাদীস এর জ্ঞান চর্চায়।
আর সময় সুযোগ মোতবেক নিজে নিজে প্রতিদিন দুই তিনটি করে আয়াত মুখস্থ করার চেষ্টা করবেন ।

(০৫)
জান্নাতে হাফেজদের মর্যাদা সম্পর্কে জানুনঃ- 

আলেমের মর্যাদাঃ-
কুরআন শরিফে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার ও যারা প্রজ্ঞাবান আলেম আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দেবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত : ১১) 

আল্লাহ তাআলা আলেম-ওলামাগণকে দোজখের শাস্তি প্রদান করবেন না। তিনি পরকালে তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন ও জান্নাত দান করবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
 ‘হজরত আবু মুসা আশআরি রা. বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন বান্দাদেরকে উত্থিত করবেন।

এরপর ওলামায়ে কেরামকে সম্মান দিয়ে বলবেন, হে আলেম সম্প্রদায়! আমি তোমাদের মধ্যে আমার ইলম এ জন্য রাখি নি যে, তোমাদেরকে শাস্তি প্রদান করব। তোমরা যাও। আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম।’ (মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৪২৬৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...