আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
371 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)

আসসালামু আলাইকুম,
হাদিসে হাফেজদের ফজিলতের ব্যাপারে বলা আছে-

  • হাফেজদের মা-বাবাকে কিয়ামতের দিন আলোকিত মুকুট পড়িয়ে সম্মানিত করা হবে।
  • হাফেজদেরকে সুযোগ দেওয়া হবে এমন ১০ ব্যক্তিকে জান্নাতে নেওয়ার জন্য যাদের উপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিলো।
  • হাফেজদেরকে জান্নাতে কুর-আনের আয়াতসংখ্যা পরিমান বড় দালান দেওয়া হবে।

কিন্তু, আমাদের সমাজের দিকে লক্ষ করলে দেখতে পারি, অনেক মাদরাসার ছাত্র হাফেজী শেষ করে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। মাদরাসার সাথে সোহবত না থাকার কারনে সেও সাধারন ছেলেদের সাথে মিশে বিভিন্ন পাপ কর্মে জড়িয়ে যায়।
অথবা, অনেক হাফেজরা মাদরাসায় থাকলেও তাদের মধ্যে বিভিন্ন আমলের ব্যাপারে ঘাটতি ও অলসতা লক্ষ করা যায়।
প্রশ্ন: বেআমলদার হাফেজরাও কী হাদিসে বর্ণিত থাকা হাফেজদের মতো মর্যাদা ও পুরস্কার পাবে?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
হাফিজদের জন্য ফযিলতপূর্ণ যে সব হাদীসে কথা আপনি প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন,
মিশকাতুল মাসাবিহ গ্রন্থে হাদীস গুলো এভাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارَتْقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারীকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, পাঠ করতে থাকো আর উপরে উঠতে থাকো। (অক্ষরে অক্ষরে ও শব্দে শব্দে) সুস্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাকো, যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পাঠ করতে। কারণ তোমার স্থান (মর্যাদা) হবে যা তুমি পাঠ করবে শেষ আয়াত পর্যন্ত (আয়াত পাঠের তুলনাগত দিক থেকে)। (আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)(মিশকাত-২১৩৪)

وَعَنْ مُعَاذٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَعَمِلَ بِمَا فِيهِ أُلْبِسَ وَالِدَاهُ تَاجًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْؤُهُ أَحْسَنُ مِنْ ضَوْءِ الشَّمْسِ فِي بُيُوتِ الدُّنْيَا لَوْ كَانَتْ فِيكُمْ، فَمَا ظَنُّكُمْ بِالَّذِي عَمِلَ بِهَذَا؟» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ.
মু‘আয আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং এর মধ্যে তাঁর হুকুম-আহকামের উপর ‘আমল করে, তার মাতাপিতাকে কিয়ামতের দিন একটি মুকুট পরানো হবে। এ মুকুটের কিরণ দুনিয়ার সূর্যের কিরণ হতেও উজ্জ্বল হবে, যদি এ সূর্য তোমাদের মধ্যে থাকত (তবে উপলব্ধি করতে পারতে)। যে ব্যক্তি এ কুরআনের উপর ‘আমল করে তার ব্যাপারে এখন তোমাদের কী ধারণা? (আহমদ, আবূ দাঊদ)(মিশকাত-২১৩৯)

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فَاسْتَظْهَرَهُ فَأَحَلَّ حَلَالَهُ، وَحَرَّمَ حَرَامَهُ أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَشَفَّعَهُ فِي عَشَرَةٍ مِنْ أَهْلِ بَيْتِهِ كُلِّهِمْ قَدْ وَجَبَتْ لَهُ النَّارُ» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ، وَحَفْصُ بْنُ سَلْمَانَ الرَّاوِي لَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ يَضْعُفُ فِي الْحَدِيثِ.
‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে ও একে মুখস্থ করে, এর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মেনে চলে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তার পরিবারের এমন দশ ব্যক্তির জন্য তার সুপারিশ কবূল করবেন, যাদের প্রত্যেকেরই নিশ্চিত ছিল জাহান্নাম। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী। কিন্তু ইমাম তিরমিযী বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব। এর একজন বর্ণনাকারী হাফস ইবনু সুলায়মান হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।)(মিশকাত-২১৪১)

মোল্লা আলী কারী রাহ ইমাম তিবীর ব্যখ্যাকে উল্লেখ করে বলেন,
ولا عبرة بطعن ابن حجر فيه وتضعيف كلامه وحمله على التكلفة والمنافاة لظاهر الحديث فإن التحقيق كما يستفاد من حديث: أن من عمل بالقرآن فكأنه يقرؤه دائما وإن لم يقرأه، ومن لم يعمل بالقرآن فكأنه لم يقرأه وإن قرأه دائما، وقد قال الله - تعالى - {كتاب أنزلناه إليك مبارك ليدبروا آياته وليتذكر أولو الألباب} [ص: ٢٩] فمجرد التلاوة والحفظ لا يعتبر اعتبارا يترتب عليه المراتب العلية في الجنة العالية 
যে ব্যক্তি কুরআনী বিধানের উপর আ'মল করে নিবে,সে যেন সর্বদাই কুরআন পড়তেছে।যদিও সে কুরআন না পড়ে থাকুক।আর যে ব্যক্তি কুরআনের উপর আমল করবেনা,সে যেন কুরআন পড়েইনি।যদিও সে সর্বদা কুরআন পড়ে থাকুক না কেন।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।(সূরা ছোয়াদ-২৯)
সুতরাং শুধুমাত্র কুরআন হিফজ বা কুরআন তিলাওয়াত জান্নতের সুউচ্ছা মর্যাদার জন্য যথেষ্ট হবে না।(বরং সাথে আ'মল থাকতে হবে) (মিরকাত-৪/১৪৭০)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বে-আমল হাফেজ রা কিয়ামতের দিন,আয়াত ভুলে যাবে।তাদের বিরুদ্ধে কুরআন অভিযোগ দায়ের করবে।তারা হাদীসে বর্ণিত এ সমস্ত ফযিলতের ভাগিদার হবে না।যারা কুরআনের হাফেয না,কিন্তু কুরআনী বিধানের উপর আ'মল করতেছে,আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন,তাদেরকে সেই সব আয়াত স্বরণ করিয়ে দেবেন।ফলে তারা এক এক আয়াত করে পড়তে থাকবে এবং সিড়ি আরোহন করে করে জান্নাতে ফ্লোরসমূহকে আরোহন করতে থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...