আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

আসসালামু আলাইকুম 

 

একটি বিষয়ে আপনার থেকে পরামর্শ চাচ্ছি

 

আমার বড় ভাই তার একটি  ছেলে সন্তান আছে

এবং তার স্ত্রী  এই হল তার পরিবার

 

আমার ভাই বয়স ৪০, মোটামুটি দিনের সম্বন্ধে জ্ঞান রাখেন এবং ইসলাম প্র্যাকটিস করার চেষ্টা করেন কিন্তু যদিও সম্পূর্ণরূপে পালন করতে পারছেন না,

 

আমার ভাবি বয়স ৩২, উনিও জেনারেল শিক্ষিত এবং মোটামুটি ইসলামের হালকা পাতলা জ্ঞান রাখেন কিন্তু মানেন না,  দুনিয়া লোভী এবং দুনিয়ার প্রতি বেশী আকৃষ্ট যার কারণে সর্বস্থায়ী এটা পেলাম না, ওটা পেলাম না এইসব বলে আক্ষেপ করে এবং ভাইকে বলে উনি কিছুই করতে পারে নি জীবনে, যদিও তাদের অভাবে পতিত হতে হয় নি কখন .

 

এবং ছেলের বয়স ১২ বছর ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে 



 

ওনাদের বিয়ের বয়স প্রায় ১৭ বছর.

 

উনি একজন প্রবাসী

 

 প্রবাসী হওয়ায়  ওনার ছেলে সন্তান এবং উনার স্ত্রী আমাদের পরিবারের সাথে বসবাস করেন।

 

এমতাবস্থায় গত চার বছর আগে উনার স্ত্রী একটি পরক্রিয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে ধরা খাওয়ায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে,এমতাবস্থায় আমরা জানতে পেরেছি যে উনার স্ত্রী বিয়ের আগেই অবৈধ সম্পর্কে জড়িত ছিলেন যার কারণে বিয়ের প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর পর সেই মানুষের সাথেই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত হতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন,ওনি তাদের অবৈধ সম্পর্ককে জোরালো করার জন্য “আমার সেজো ভাইয়ের উকিল বাপ বানিয়েছিল যার সাথে উনার আগেই অবৈধ সম্পর্ক ছিল যা আমরা জানতাম না”  পরক্ষণে আমরা বুঝতে পারি,

 

ছেলেও তার মায়ের কার্যকলাপের সাক্ষী দেয় যেমন যখন উনি উনার অবৈধ সম্পর্কের মানুষের সাথে কথা বলেন তখন ছেলে তা দেখতে পান এবং বুঝতে পারেন 


 

এমন হত না যে আমার ভাই ২-৩ দেশে আসেন নাই, যার কারনে এমন করেছেন কিন্তু আমার ভাই প্রতিনিয়ত দেশে আশা যাওয়ার মধ্যে থাকতেন, 

 

তখন আমার ভাই প্রবাস জীবন খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল  কি করবে বুঝতে পারছিল না এবং পরিশেষে আমরা পরিবার থেকে তাকে বুঝিয়েছি যে আপনি আপনার ছেলের জন্য হলেও আপনাদের মধ্যে সম্পর্কটা বিচ্ছেদ করবেন না এবং তিনি তার সন্তানের দিকে তাকিয়ে তাদের সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন কিন্তু উনার ওয়াইফ সেই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেনা.

 

কারণ উনি বলছেন আমার ভাই এর সাথে ওনার মিল নেই, তার চাহিদা ওনুযাই তার জন্য কিছু করতে পারেন নি, যেহেতু দুনিয়া লুবি, তার চাহিদা হল নিজের বিল্ডিং থাকবে, অনেক টাকা পয়সা থাকতে হবে ইত্যাদি যা আমার ভাই এর ইনকাম দারা সম্ভব না, 

 

কিন্তু আমার ভাই ওনাকে প্রতি মাসে খরচ বাবত প্রয়োজনীয় টাকা দিয়ে ভরন পূষনের দাইত্ত পালন করছিলেন, 

 

তাদের সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার জন্য আমার ভাই ওনাকে আলাদা বাসা নিয়ে থাকার জন্য অ প্রস্তাব করেছিল যা ওণি রাজি হয় নি।  

 

ভাবি শত দিয়েছিলেন ওনার জন্য বিল্ডিং করে দিতে হবে, ওনি যা বলবেন সব কিছু শুন্তে হবে এবং মাসে যত টাকা ইনকাম করেন সব টাকা তাকে দিতে হবে। 

 

এই শত রাজি হতে চাচ্ছে না ভাই, কারন ইত মধ্যে যেনেছেন ভাবি তার অবৈধ সম্পর্ক টি তে এখন যরিত আছেন। 

 

যা ভাবির পরিবার অ অবগত আছেন।

 

তাদের পরিবার অ সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন কিন্তু ভাবি তার অবৈধ সম্পর্কের কারণে এই সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন না। 

 

উনি নিজের মুখে বলেছেন যে উনি সেপারেট হয়ে যেতে চান 

 

এবং ভাই দেশে ছুটিতে আসছেন, 

 

এমতাবস্থায় উনারা কে কি জোরপূর্বক সম্পর্কে রাখার জন্য বাধ্য করলে উত্তম হবে নাকি ওনাদের মধ্যে সম্পর্কের বিচ্ছেদের মাধ্যমে আমার ভাইকে অন্যত্র বিবাহ করিয়ে নতুন জীবন শুরু করার জন্য উৎসাহিত করব? 

 

এক্ষেত্রে ছেলের ভরন পুষন এর দাইত্ত কিভাবে নিবে? 





 

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের পরিভাষায় পরকিয়া বলা হয় বিবাহ পরবর্তী কাহারো সাথে কোনো ধরনের প্রেম ভালোবাসাকে।
ইসলামে এটা সম্পূর্ণরুপে হারাম করা হয়েছে। 

পরকীয়া মানবতা বিরোধী একটি অপরাধ। বিকৃত মানসিকতা। ইসলাম একটি মানবিক ধর্ম। সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন বিধান। কোনো মানবিক গর্হিত কাজকে ইসলাম অনুমোদন দেয়নি।

বিবাহিত কোন নারী বা পুরুষ স্বীয় স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সঙ্গে কোনও ধরণের সর্ম্পক কিংবা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মত গর্হিত কর্মকে কীভাবে ইসলাম সমর্থন করতে পারে?

এ বিকৃত কর্মের অসারতা বিবেকও ধিক্কার দেয়। নিজ স্বামী বা স্ত্রী অন্য কারো সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করবে, সুস্থ বিবেকবান কোনো মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না। এ কর্মের কারণে সমাজ যেমন শৃঙ্খলতা হারায়, তেমনি পারিবারিক বন্ধনেও ধরে ফাটল। পর্যুদুস্ত হয়ে পড়ে সামাজিক সকল রীতিনীতি।

এ কাজের বিষফল মানবাজাতি কয়েক যুগ ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ্য করে আসছে। ইসলাম হলো নীতি ও আদর্শের ধর্ম। ইসলামে পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্ক থেকে নারী-পুরুষকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

পবিত্র কুরআন শরিফ   অপ্রয়োজনে পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনে কথা বলতে হলেও সুরা আহজাবের ৩২ নং আয়াত 
( আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
فلا تخضعن بالقول )
আল্লাহ তায়ালা পরপুরুষের সঙ্গে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। যাতে নারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোনো পুরুষ আকর্ষণবোধ না করেন।

শুধু নারীদেরই নয়, বরং সুরা নুরের ৩০ নম্বর আয়াতে প্রথমে আল্লাহ তায়ালা পুরুষদেরকে দৃষ্টি সংযত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর ৩১ নম্বর আয়াতে মহিলাদেরকে তাদের দৃষ্টি সংযত রাখার পাশাপাশি তাদের গোপন শোভা অনাবৃত করতে নিষেধ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
قل للمؤمنين  يغضوا  من أبصارهم... وقل للمؤمنات  يغضضن  من ابصارهن...
অপাত্রে সৌন্দর্য প্রদর্শনকে হারাম করে সবটুকু সৌন্দর্য স্বামীর জন্য নিবেদনে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কারণ, স্বামী তার স্ত্রীর সৌন্দর্যে মোহিত হলে সংসারের শান্তিই বাড়বে। পক্ষান্তরে স্ত্রীর সৌন্দর্য দিয়ে অন্যকে মোহিত করার পথ অবারিত করলে তা কেবল বিপদই ডেকে আনবে।
পুরুষ-মহিলা সবাইকে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। 
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
ولا تقربوا  الزني انه  كان فاحشة  وساء سبيلا 
 ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, ৩২)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার ভাইয়ের জন্য করনীয় হলো স্ত্রীর সাথে পারিবারিক ভাবে বসে কোনো একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার। যদি স্ত্রী ওয়াদা দেয় যে সে আর পরকীয়া চালিয়ে যাবেনা,তওবা করে একেবারে ভালো হয়ে যাবে,সেক্ষেত্রে তার কথার উপর বিশ্বাস হলে সংসার চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

قال تعالى: (فإن كرهتموهن فعسى أن تكرهوا شيئاً ويجعل الله فيه خيراً كثيراً)
অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
(সূরা নিসা-১৯)

তালাক সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «أبغض الحلال إلى الله تعالى الطلاق»
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেন,
“মহান আল্লাহ পাকের নিকট সর্বাপেক্ষা অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে 'তালাক'।
(আবু দাউদ-২১৭৮)

এরপরেও কোনো সমস্যা হলে তাকে এক তালাক দিবে।

তালাকের পর সন্তানের ভরনপোষণ, লালনপালন আপনার ভাইকে করতে হবে।
এক্ষেত্রে সন্তানের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে আপনার ভাইয়ের।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...