আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
একটি বিষয়ে আপনার থেকে পরামর্শ চাচ্ছি। আমার বড় ভাই তার একটি  ছেলে সন্তান আছে

এবং তার স্ত্রী  এই হল তার পরিবার। আমার ভাই বয়স ৪০,কুয়েত প্রবাসী,  মোটামুটি দিনের সম্বন্ধে জ্ঞান রাখেন এবং ইসলাম প্র্যাকটিস করার চেষ্টা করেন কিন্তু যদিও সম্পূর্ণরূপে পালন করতে পারছেন না,

আমার ভাবি বয়স ৩২, উনিও জেনারেল শিক্ষিত এবং মোটামুটি ইসলামের হালকা পাতলা জ্ঞান রাখেন কিন্তু মানেন না,  দুনিয়া লোভী এবং দুনিয়ার প্রতি বেশী আকৃষ্ট যার কারণে সর্বস্থায়ী এটা পেলাম না, ওটা পেলাম না এইসব বলে আক্ষেপ করে এবং ভাইকে বলে উনি কিছুই করতে পারে নি জীবনে, যদিও তাদের অভাবে পতিত হতে হয় নি কখন .
এবং ছেলের বয়স ১২ বছর ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে । ওনাদের বিয়ের বয়স প্রায় ১৭ বছর.উনি একজন প্রবাসী

 প্রবাসী হওয়ায়  ওনার ছেলে সন্তান এবং উনার স্ত্রী আমাদের পরিবারের সাথে বসবাস করেন।
এমতাবস্থায় গত চার বছর আগে উনার স্ত্রী একটি পরক্রিয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে ধরা খাওয়ায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে,এমতাবস্থায় আমরা জানতে পেরেছি যে উনার স্ত্রী বিয়ের আগেই অবৈধ সম্পর্কে জড়িত ছিলেন যার কারণে বিয়ের প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর পর সেই মানুষের সাথেই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত হতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন,ওনি তাদের অবৈধ সম্পর্ককে জোরালো করার জন্য “আমার সেজো ভাইয়ের উকিল বাপ বানিয়েছিল যার সাথে উনার আগেই অবৈধ সম্পর্ক ছিল যা আমরা জানতাম না”  পরক্ষণে আমরা বুঝতে পারি,
ছেলেও তার মায়ের কার্যকলাপের সাক্ষী দেয় যেমন যখন উনি উনার অবৈধ সম্পর্কের মানুষের সাথে কথা বলেন তখন ছেলে তা দেখতে পান এবং বুঝতে পারেন
ঘটনা ঘটার পর থেকে ওনি তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন/
এমন হত না যে আমার ভাই ২-৩ দেশে আসেন নাই, যার কারনে এমন করেছেন কিন্তু আমার ভাই প্রতিনিয়ত দেশে আশা যাওয়ার মধ্যে থাকতেন,
তখন আমার ভাই প্রবাস জীবন খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল  কি করবে বুঝতে পারছিল না এবং পরিশেষে আমরা পরিবার থেকে তাকে বুঝিয়েছি যে আপনি আপনার ছেলের জন্য হলেও আপনাদের মধ্যে সম্পর্কটা বিচ্ছেদ করবেন না এবং তিনি তার সন্তানের দিকে তাকিয়ে তাদের সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন কিন্তু উনার ওয়াইফ সেই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেনা.
কারণ উনি বলছেন আমার ভাই এর সাথে ওনার মিল নেই, তার চাহিদা ওনুযাই তার জন্য কিছু করতে পারেন নি, যেহেতু দুনিয়া লুবি, তার চাহিদা হল নিজের বিল্ডিং থাকবে, অনেক টাকা পয়সা থাকতে হবে ইত্যাদি যা আমার ভাই এর ইনকাম দারা সম্ভব না,
কিন্তু আমার ভাই ওনাকে প্রতি মাসে খরচ বাবত প্রয়োজনীয় টাকা দিয়ে ভরন পূষনের দাইত্ত পালন করছিলেন, তাদের সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার জন্য আমার ভাই ওনাকে আলাদা বাসা নিয়ে থাকার জন্য অ প্রস্তাব করেছিল যা ওণি রাজি হয় নি।
ভাবি শত দিয়েছিলেন ওনার জন্য বিল্ডিং করে দিতে হবে, ওনি যা বলবেন সব কিছু শুন্তে হবে এবং মাসে যত টাকা ইনকাম করেন সব টাকা তাকে দিতে হবে।
এই শত রাজি হতে চাচ্ছে না ভাই, কারন ইত মধ্যে যেনেছেন ভাবি তার অবৈধ সম্পর্ক টি তে এখন যরিত আছেন। যা ভাবির পরিবার অ অবগত আছেন।

তাদের পরিবার অ সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন কিন্তু ভাবি তার অবৈধ সম্পর্কের কারণে এই সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন না।  উনি নিজের মুখে বলেছেন যে উনি সেপারেট হয়ে যেতে চান
এবং ভাই দেশে ছুটিতে আসছেন,
এমতাবস্থায় উনারা কে কি জোরপূর্বক সম্পর্কে রাখার জন্য বাধ্য করলে উত্তম হবে নাকি ওনাদের মধ্যে সম্পর্কের বিচ্ছেদের মাধ্যমে আমার ভাইকে অন্যত্র বিবাহ করিয়ে নতুন জীবন শুরু করার জন্য উৎসাহিত করব?
এক্ষেত্রে ছেলের এর দাইত্ত কিভাবে বিন্যস্ত করা লাগবে ?

যদি অন্য কোথাও বিয়ে করাতে চাই ভাই এর একজন ছেলে সন্তান আছে এবং কেন বিচ্ছেদ হয়েছে এই বিষয় গুলা কিভাবে বলব পাত্রি পক্ষ কে,
পাত্রির বয়স কেমন হলে ভাল হবে ভাই এর জন্য? আমরা কি আহলিয়া মেটামনি ওয়েবসাইট থেকে পাত্রি দেখতে পারব?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

শরীয়তের পরিভাষায় পরকিয়া বলা হয় বিবাহ পরবর্তী কাহারো সাথে কোনো ধরনের প্রেম ভালোবাসাকে। ইসলামে এটা সম্পূর্ণরুপে হারাম করা হয়েছে। পরকীয়া মানবতা বিরোধী একটি অপরাধ। বিকৃত মানসিকতা। ইসলাম একটি মানবিক ধর্ম। সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন বিধান। কোনো মানবিক গর্হিত কাজকে ইসলাম অনুমোদন দেয়নি। বিবাহিত কোন নারী বা পুরুষ স্বীয় স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সঙ্গে কোনও ধরণের সর্ম্পক কিংবা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মত গর্হিত কর্মকে কীভাবে ইসলাম সমর্থন করতে পারে?

এ বিকৃত কর্মের অসারতা বিবেকও ধিক্কার দেয়। নিজ স্বামী বা স্ত্রী অন্য কারো সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করবে, সুস্থ বিবেকবান কোনো মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না। এ কর্মের কারণে সমাজ যেমন শৃঙ্খলতা হারায়, তেমনি পারিবারিক বন্ধনেও ধরে ফাটল। পর্যুদুস্ত হয়ে পড়ে সামাজিক সকল রীতিনীতি।

এ কাজের বিষফল মানবাজাতি কয়েক যুগ ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ্য করে আসছে। ইসলাম হলো নীতি ও আদর্শের ধর্ম। ইসলামে পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্ক থেকে নারী-পুরুষকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সুরা নূর ৩০)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তোমরা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর। কেননা, তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছো আল্লাহর জামানত এবং আল্লাহর নির্দেশে তাদের যৌনাঙ্গকে করেছো হালাল। তাদের প্রতি তোমাদের অধিকার হল, তোমরা যাকে অপছন্দ কর তারা যেন তোমাদের বিছানায় আসতে না দেয়, [অর্থাৎ তোমাদের সন্তুষ্টি ছাড়া কাউকে যেন তোমাদের গৃহে আসতে না দেয়। চাই সে পুরুষ হোক বা নারী]। যদি তারা এটা করে [অর্থাৎ অপছন্দের ব্যক্তিকে আসতে দেয়] তবে তাদের মৃদু প্রহার কর। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার, তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের অন্ন ও বস্ত্রের ব্যবস্থা করবে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১২১৮ নং হাদীসের অংশ বিশেষ}

পরকীয়ার শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/2018/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!

ইসলামে তালাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনে বাধ্য না হলে ইসলাম তালাক দেওয়া পছন্দ করেনা। কারণ, ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম এক তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে।

সুতরাং আপনার ভাইয়ের স্ত্রী যদি তওবা করতে সম্মত না হয়, তাহলে পারিবারিকভাবে বিষয়টির সুরাহা করতে চেষ্টা করুন। তার স্ত্রী কী চায়? সেকি স্বামীর সাথে থাকতে চায়? সেকি এ অপকর্ম ছেড়ে দিবে কি না? এসব বিষয়ে পারিবারিকভাবে মিটমাট করতে চেষ্টা করুন। যদি এতেও সক্ষম না হোন তাহলে আপনার ভাই তাকে এক তালাক প্রদান করে আলাদা করে দিন। তিন তালাক কিছুতেই প্রদান করবেন না। যেহেতু এক তালাক দ্বারাই বিচ্ছেদের প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ হয়ে যায়, তাই একাধিক তালাক দেয়া অর্থহীন কর্ম ছাড়া আর কিছু নয়। যেন ভবিষ্যতে স্ত্রী অনুতপ্ত হয়ে স্বামীর নিকট ফিরতে চাইলে আবার একত্রে বসবাসের সুযোগ বাকি থাকে।

তালাকের পর আপনার ভাইয়ের বায়োডাটা মেট্রোমনি ওয়েবসাইটে দিতে পারেন। এবং পারিবারিক অবস্থা বিস্তারিত মেয়ে পক্ষকে অবগত করতে পারেন। ছেলের দেখাশুনার দায়-দায়িত্ব বাবার উপর। এসম্পর্কে আরো জানুন: https://ifatwa.info/67661/

https://ifatwa.info/81124/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...