ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১) কুরআনের অসংখ্য স্থানে "হে ঈমানদারগণ!" বলে সম্ভোধন করা হয়েছে। আরবী হল يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
সুতরাং আপনি কুরআন তিলাওয়াতের সময় খাতা কলম নিয়ে নোট করে নিবেন।
(২)
এটা বিশুদ্ধ যে,মহিলারা ইহরাম অবস্থায় চেহারাকে কাপড়ের স্পর্শ থেকে বাঁচাবে।ফুকাহায়ে কেরাম লিখেন,
والمرأة احرامها في وجهها باتفاق الفقهاء
এজন্য ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মহিলারা মাথা ক্যাপ বা এ জাতীয় এমন কিছু বেঁধে নিবে যে,যার উপর দিয়ে মাথা থেকে কাপড় ছেড়ে দিলে উক্ত কাপড় চেহারা কে স্পর্শ না করে নিচের দিকে চলে যাবে।চেহারা বলতে মুখের ঐ অংশ যা অজুতে ধৌত করা হয়ে থাকে।অর্থাৎ কপালের উপরাংশের চুল থেকে নিয়ে থুতনি পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত।(কিতাবুল ফাতাওয়া-৪/৩৭)
প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
ইহরাম অবস্থায়ও মহিলাদের চেহারার পর্দা করার বিধান রয়েছে- ইহরাম অবস্থায় চেহারায় কাপড় লাগানো নিষেধ। তবে চেহারা ঢাকা নিষেধ নয়। হযরত আয়েশা রা. থেকে বার্ণিত আছে, তিনি বলেন-
كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْرِمَاتٌ، فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا عَلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.
ইহরাম অবস্থায় আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের পাশ দিয়ে যেত তখন আমরা আমাদের চাদর মাথায় সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। আর চলে যাওয়ার পর তা সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৩৩)
এ হাদীস থেকেই বুঝা যায় যে,ইহরাম অবস্থায় চেহারা ঢাকার গুরুত্ব রয়েছে।
হজ্বের মৌসুমে মহিলাগণের দায়িত্ব হল,যথাসম্ভব পর্দায় থাকা এবং পুরুষদের দায়িত্ব হল,নিজ নিজ চোখের হেফাজত করা। সুতরাং ক্যাপ বা হ্যাট জাতীয় কিছু মাথায় লাগিয়ে চেহারাকে ঢেকে নেওয়াই উত্তম হবে। অবশ্য রাস্তায় চলাচলের সময় অথবা বেশি ভিড়ের মধ্যে প্রয়োজনে চেহারা খোলারও অবকাশ আছে। আর কারো জন্য যদি কোনো কারণে ক্যাপ ব্যবহার করা কষ্টকর হয়ে যায় তাহলে তার জন্য ছাড় গ্রহণের অবকাশ থাকবে ইনশাআল্লাহ। অবশ্য সতর্কতামূলক এজন্য ইস্তিগফার করতে থাকবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৪৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৬; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী পৃ.১১৫
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় নামায পড়তে কষ্টকর হলে, এবং অাশপাশে গায়রে মাহরাম লোক থাকলে তখন ক্যাপের পরিবর্তে নেকাব পরিধান করে নামায পড়া যাবে।
(৩) ইহরাম অবস্থায় সরাসরি নেকাব পরিধান করা যাবে না।
(৪) যদি ঐ এলাকায় কোনো পুরুষ শিক্ষক না থাকেন,তাহলে ফিতনার আশংকা না থাকলেই কেবল ১২ বছরের উপরের কাউকে কুরআন পড়ানো যাবে। তবে মসজিদের ইমাম মুওয়াজ্জিনের নিকট কেন কুরআন পড়া পসিবল না,সেটা বোধগম্য হচ্ছে না। ইমাম মুওয়াজ্জিনের নিকট কুরআন পড়াই সর্বদিক থেকে সবচেয়ে নিরাপদ।