আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর ,,
আমার কয়েকটা প্রশ্নর উত্তর খুব জরুরি, সামনাসামনি সরাসরি কোনো হুজুরকে সব জানানো সম্ভব হয়না লজ্জার কারনে আশা করি আপনি জানাবেন।

1। আমাকে একজন তার স্বামীর জন্য কাপড় কিনার টাকা দিয়েছিলেন ।আমি কাপড় কিনেওও দিয়েছিলাম ।।কিন্তু মিথ্যা বলে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছিলাম ।। এখন এই টাকা ফিরিয়ে দিতে গেলে সম্মান হানির অনেক আসংখ্যা আছে । এক্ষেত্রে আমি কি এই টাকা টা সওয়াবের আশা ছাড়া উক্ত মহিলার নামেই দান করতে পারি ?

2। মেস জীবনে ম্যানেজার এর দায়িত্ত্ব পালন করা কালীন কিছু টাকা এদিক সেদিক করে হিসাব মিলিয়ে ছিলাম । এখন ওই মেসেও আমি থাকিনা ,, এখন এই হক নষ্টের ক্ষেত্রেও কি সওয়াবের আশা ছাড়া দান করে দিলে হক আদায় করা যাবে কি ?
3। আমার জীবনে কোনোদিন স্যারদের টাকা দিই নাই এমন হয় নাই।  কিন্তু করোনার আগে কোনো এক কারণে গাফলতির জন্য একজন হিন্দু স্যার এর শেষ মাসের টাকাটা দেয়া হয় নাই ।।এইজন্য স্যার এর কাছে মাফ চেয়ে নিছি । কিন্তু টাকা দেই নাই । স্যার বলেছে মাফ করে দিয়েছেন ,টাকা লাগবে না ।।এখন উনার এই ক্ষমায় কি দায় মুক্তি হয়েছে ? না হলে করণীয়।

4। আমি ধরে নিয়েছি উপরের 3 টা ঘটনা ছাড়া আরো অনেক ছোট বড় জানা অজানা বান্দার হোক নষ্টের মত কাজ হয়েগেছে ।। সেক্ষেত্রে আমি কি একটা আনুমানিক হিসেবে টাকা দান করে দিতে পারি কি সওয়াবের আশা ছাড়া ?

5।। আমার মা বাবা মারা যাবার সময় ব্যাংকে টাকা রাখা ছিল ।। যার সুদ হয়েছে ।। এখন এটা কি আমার জন্য জায়েজ হবে ? আর যদি না হয় তাহলে অতিরিক্ত টাকাটা কি করব জানবেন দয়া করে। আর আমি টাকা নিলে গুনাহ কী আমার ও আমার বাবার উভয়েরই হবে নাকি শুধু আমার হবে ।।

6।। উপরের সব গুলো যদি সদকা করা উত্তর হয় ।। বা যেকোনো সদকা যদি করা হয় সেটা কি গরীবের হক নাকি মসজিদ মাদ্রাসায় দিলেও হবে ।।

7।। কেউ যদি সমিতি থেকে ঋণ করে বাধ্য হয়ে। তবে এটা সুদ সে এ বিষয়ে অবগত ।। তবে তার বাড়িতে খাওয়া যাবে কিনা ।।আর যদি  না যায় তাহলে আগে যে না বুঝে খেয়েছি সে জন্য করণীয় কি ।।
8। আমি একজনকে গালি দিয়েছি বহুবার ।।সে মুখে বলেছে ক্ষমা করেছে কিন্তু ভিতরে হয়তো আমার উপর রাগ । আমার জন্য মুখে ক্ষমা করা বলাই কি যথেষ্ট হবে ?

এইসব প্রশ্নে যাদের সাথে হোক জড়িত তারা আমার জীবনে আর নাই। বা যদিও কেউ আছে সেটা তাকে বললে ফিতনা বা সম্মান হানির সম্ভাবনা আছে ।। তাই হুজুর উপরের প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিলে আমি আমার জীবনের একটা বড় বোঝা থেকে মুক্তি পেতাম।।
জাযাকাল্লাহ।।

আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো  কারো নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে।এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

ﻭَﻟَﻤَﻦِ ﺍﻧْﺘَﺼَﺮَ ﺑَﻌْﺪَ ﻇُﻠْﻤِﻪِ ﻓَﺄُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﺳَﺒِﻴْﻞٍ ، ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞُ ﻋَﻠَﻰْ ﺍﻟّﺬِﻳْﻦَ ﻳَﻈْﻠِﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻭَﻳَﺒْﻐُﻮﻥَ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟْﺤَﻖّ ، ﺃُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ

নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(৪২/৪১-৪২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
যেহেতু ঐ মহিলা জীবিত আছেন, আর তার কাছে টাকাটি পৌছে দেয়ার অনেক মাধ্যমও আছে,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এই টাকা টা সওয়াবের আশা ছাড়া উক্ত মহিলার নামে দান করতে পারবেননা।

আপনি তার বিকাশ/নগদ/রকেট ইত্যাদি  একাউন্টে টাকাটি পাঠাতে পারেন,অথবা  তাত মোবাইল নাম্বারে ফ্ল্যাক্সিলোড করে দিতে পারেন,অথবা তার ব্যাংক একাউন্টে টাকাটি পাঠাতে পারেন।

(০২)
আপনি যদি সেখান হয়ে কোনো টাকা গ্রহন করে থাকেন,সেক্ষেত্রে মেস এর সদস্য দের নিকট তাহা ফিরিয়ে দিতে হবে,অথবা তাদের থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

(০৩)
হ্যাঁ, দায় মুক্তি হয়েছে।

(০৪)
হ্যাঁ, এমনটি করতে পারেন।

তবে কোনো ব্যাক্তির বিষয় মনে থাকলে টাকাটি দান না করে সেই ব্যাক্তিকেই টাকাটি দিতে হবে।

(০৫)
আপনি পুরো টাকা উত্তোলন করে অতিরিক্ত টাকাটি ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন,এবং আল্লাহর কাছে বাবা মার মাগফিরাত এর জন্য দোয়া করবেন।

সূদের টাকাটি আপনি নিলে আপনার বাবা ও আপনার উভয়েরই গুনাহ হবে।
সূদ গ্রহনের গুনাহ আপনার হবে।
আর সূদী কাজে সহযোগিতার গুনাহ আপনার বাবার হবে।

(০৬)
উপরে উল্লেখিত কোনো টাকাই মসজিদ মাদ্রাসায় দেয়া যাবেনা।

এই টাকা ফকির মিসকিনকে দিতে হবে।

(০৭)
সে সূদ প্রদান করছে। সেতো সূদ গ্রহন করছেনা।
সুতরাং তার বাসায় খাবার খাওয়া যাবে।

হ্যাঁ যদি সে হারাম টাকায় উক্ত ঋন পরিশোধ করে,সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল না হলে তার বাসায় খাবার খাওয়া জায়েজ হবেনা।

খাবার খেয়ে থাকলে উক্ত খাবার সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০৮)
তার সাথে এমন ভালো ব্যবহার করতে হবে,যাতে সে অন্তর থেকে ক্ষমা করে দেয়।

অনুনয় বিনয় করে ক্ষমা চাইবেন,এক্ষেত্রে কোনো প্রকারের চাপ প্রদান ছাড়াই সে যদি মৌখিক ভাবে ক্ষমা করে,সেক্ষেত্রে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 141 views
...