আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in সালাত(Prayer) by (13 points)
closed by
আস্সালামুআলাইকুম হুজুর দয়াকরে দ্রুত উত্তর দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন,আমি খুবই চিন্তায় আছি ,আগের প্রশ্নে আমি বিস্তারিত উল্লেখ করিনি ,তাই আমার কিছু না জানা রয়ে গেছে ,

হুজুর আমাকে ক্ষমা করবেন এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করে আপনাকে কষ্ট দিচ্ছি ! আমি খুবই দুঃখিত হুজুর ! দয়া করে আমার উপরে রাগ করবেন না।
১)হুজুর কেউ বলেন ৭ বছরে সালাত ফরজ ,কেউ বলে ১০ ,কেউ আবার ১২ ,কোনটা সঠিক ?
২) আমার ঠিক মনে নেই যে আমি কত বছর বয়স থেকে সালাত আদায় করা শুরু করেছিলাম ,ক্লাস ৫ থেকেই পড়তাম,কিন্তু দিনের বুঝ কম থাকায় অনেক ওয়াক্তের সালাত  কাযা হয়েছে ,তো আমি জোর দিয়ে বলতে পারি ,খুব সম্ভবত আমার বয়স যখন ১৪/১৫ তখন থেকে আমি কোনোদিন ইচ্ছে করে সালাত কাযা করিনি ,বেদ্বীন পরিবারে থাকায় নিজের বিবেকেই আমি সালাত কে আঁকড়ে ধরে ছিলাম ,কিন্তু ইসলামিক ইলম কিছুই অর্জন করতে পারিনি তখন , এবং আমার ১৩/১৪ বছর থেকে যখন পিরিয়ড শুরু হয় তখন রোজার মাসের সেই দিনগুলোতে ৭/৮ টা করে রোজাও কাযা হয়েছে , তো এখন আমাকে কি ৭-১৪ বছর পর্যন্ত যতো কাযা সালাত এবং সাওম আছে সব পূরণ করতে হবে !? নাকি আল্লাহর কাছে অনেক অনেক তওবা করে ক্ষমা চাইলেই আল্লাহ মাফ করে দিবেন...?
৩) হুজুর আমি নিয়মিত এখানকার সব প্রশ্ন পড়ার চেষ্টা করি ,কিছুদিন আগে একজনের প্রশ্ন থেকে হুরমত সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরেছি ,এখন আমার প্রশ্ন হলো কোনো মেয়ের হাত ধরে কারো মনে যদি নোংরা চিন্তা আসে ,এবং মেয়েটি যদি(নোংরা চিন্তা ) এরকম কিছু কল্পনাও না করে থাকে তবুও কি মেয়েটির হুরমত হবে ? মানে উভয়কেই মনে কুচিন্তা আন্তে হবে ? নাকি যে কোনো একজনের মনে নোংরা চিন্তা আসলেই হুরমত হয়ে যাবে ? মেয়েটি যদি নির্দোষ হয়ে থাকে ? কিন্তু কোনো পুরুষ যদি জোর করে বা এমনিতেও মেয়ের হাত ধরে নোংরা চিন্তা আনে ? হুজুর আমি নতুন ইসলামিক ইলম অর্জন করছি ,আমি ছোটবেলা থেকেই এইসব বুঝতামনা ,আমার অনেক নন মাহরাম  দাদুভাই ,আঙ্কেল ,মামা ,আমাকে কথার চলে হাত ধরতেন , গায়ে হাত দিতেন ,আমার তখন খুবই অস্বস্তি বোধ হতো ,কিন্তু কিছু বলতে পারতামনা ,এখন আমি বুঝতে পারছি যে আমার তখন নিজেকে আড়াল রাখা ফরজ ছিল ? এক্ষেত্রে কি হুরমত হবে ? আমি তো কোনোদিন মনে নোংরা চিন্তা আনিনি ,কিন্তু ব্যক্তিটি যদি আমাকে নিয়ে কেউ চিন্তা করে ফেলে তবে ?

৪) যদি এমন হয় যে আমাকে দূরে কোথাও যেতে হচ্ছে যেখানে সালাত আদায় করার উপায় নেই , এক্ষেত্রে কি আমি ওয়াক্তের আগেই বাড়িতে সালাত আদায় করে  সেখানে যেতে পারবো ? জোহরের সালাত ১১ টায় পরে নেই যদি কাজ না হবার জন্য ?
৫)ফরজ গোসুল আদায় এর পর কি আবার ওযু করতে হবে সালাতের জন্য ? নাকি এই গোসুল দিয়েই সালাত আদায় করতে পারবো ?

৬)নিয়মিত তাহাজ্জুদ, প্রত্যেক ওয়াক্তের  ইকামতের সময় সহ সব সময় মুনাজাতের সময় যদি আল্লাহ কে বলি হে আল্লাহ আমি এবং আমার বাবা মা যতই ভুল করে থাকি আপনি আমাদেরকে মাফ করে দিন ,আমাদেরকে শহীদি মৃত্যু দিন ,আমাকে বাবা মাকে বিনা হিসাবে জান্নাতে দিয়ে দিন , এবং মনে প্রাণে যদি বিসসাস করে থাকি যে আল্লাহ তা অবশ্যই কবুল করবেন তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে বিনা হিসেবে জান্নাতে দিবেন তো না !?


https://ifatwa.info/86815/
আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো আমার পূর্বের এই লিংকের প্রশ্নের জবাব দিবেন ,আমি এখনো আগের প্রশ্নের জবাব পাইনি হুজুর !!

জাযাকাল্লাহু খাইরান হুজুর !! আপনাদের জবাব থেকে আমি কতটা উপকৃত হয়েছি বলে বুঝানো /প্রকাশ করা সম্ভব নয় ,অন্তরের গহীন থেকে দোআ আপনাদের জন্য।
closed

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ. رَوَاهُ أَبُوْ دَاوٗدَ 

‘আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) তার পিতার মাধ্যমে, তিনি তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমার সন্তানদের বয়স সাত বছরে পৌঁছবে তখন তাদেরকে নামাজ আদায়ের জন্য নির্দেশ দিবে। আর (সলাত আদায় করার জন্য) তাদের শাস্তি দিবে যখন তারা দশ বছরে পৌঁছবে এবং তাদের ঘুমানোর স্থান পৃথক করে দিবে।
(আবূ দাঊদ ৪৯৫, সহীহুল জামি‘ ৫৮৬৮, আহমাদ ২/১৮০ ও ১৮৭।)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
যেহেতু সাত বছর বয়সেই বাচ্চাদের ভালো-মন্দের পার্থক্যের জ্ঞান বিকশিত হয় সেহেতু এ বয়সেই ইসলামের বিধানাবলী প্রতিপালনের নিমিত্তে অভিভাবককে তার সন্তানের প্রতি দায়িত্ব সচেতন করা হয়েছে। তবে এখানে প্রহার করা দ্বারা হালকা প্রহার বুঝানো হয়েছে। বেদম প্রহার নয়। এর দ্বারা শুধুমাত্র ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষা দেয়াই উদ্দেশ্য। সাত বছর বয়সে নির্দেশ প্রদান করতে হবে আর ১০ বছর বয়সে প্রয়োজনে প্রহার করতে হবে। সেই সাথে বিছানাও পৃথক করে দিতে হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
মূলত বালেগ/বালেগাহ হওয়ার পর নামাজ ফরজ হয়। 
তবে ৭ এবং ১০ বছরের যে কথা বলা হয়েছে,তাহা নামাযের গুরুত্বের কারনে বলা হয়েছে। যাতে করে শিশু অবস্থাতেই নামাজের প্রতি অভ্যাস গড়ে উঠে।

এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে শরীয়তে নামাজের গুরুত্ব অনেক।

(০২)
আপনার যেদিন পিরিয়ড হয়েছিলো,সেদিন থেকে আপনি বালেগাহ হয়েছিলেন।
সুতরাং ১ম পিরিয়ড থেকে পবিত্র হওয়ার পর আপনার যতগুলি নামাজ ও রোযা কাজা রয়েছে, সবগুলির কাজা আস্তে-ধীরে হলেও আদায় করতে হবে।

আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিলে তাহা যথেষ্ট হবেনা।

(০৩)
তাদের মনের মধ্যে উত্তেজনা ছিলো কিনা,হুরমতে মুসাহারা সাব্যস্ত হওয়ার মতো তারা উত্তেজিত হয়েছিলো কিনা,সেগুলো নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না।

তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

(০৪)
না,এমনটি করার সুযোগ নেই।
ওয়াক্ত আসলে নামাজ পড়তে হবে,ওয়াক্ত আসার আগে নামাজ পড়া যাবেনা।
পড়লে সেই নামাজ আদায় হবেনা।
তাহা নফল বলে গন্য হবে। 

(০৫)
না,নতুন করে গোসল করতে হবেনা।
এই গোসল দিয়েই নামাজ আদায় করা যাবে।

(০৬)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.

‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪।)

ব্যাখ্যা: মহিলার পাঁচ ওয়াক্ত সালাত তার রজঃকাল ছাড়া পবিত্র কালের সালাত। আর একমাস সওম হলো রমাযানের ফরয সওম! তাই তা রমাযান মাসেই আদায়ের মাধ্যমে পালন করা হোক অথবা অসুস্থাজনিত কারণে পরবর্তীতে কাযা আদায়ের মাধ্যমে পালন করা হোক।

(وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا) এর অর্থ হলো যদি নারী তার যৌনাঙ্গকে হিফাযাত করে, অর্থাৎ নিজের ইজ্জত সম্ভ্রম ও সতীত্বকে রক্ষা করে। ব্যাখ্যাকারকগণ নিজের নফস্ বা প্রবৃত্তিকে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার কথাও বলেছেন।

(وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا) ‘যদি সে স্বামীর ইত্বা‘আত বা আনুগত্য করে, স্বামীর আনুগত্য বলতে যা অবশ্য পালনীয় তা পালন করে। তাহলে সে জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। এর অর্থ হলো আটটি জান্নাতের যে কোনোটি সে প্রবেশ করতে পারবে। এখানে ইশারা রয়েছে জান্নাতের কোনো একটিতে যেতে তার বাধা নেই এবং সে দ্রুত তা অর্জন করতে পারবে এবং তাতে পৌঁছতে পারবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
সারাজীবন পরিপূর্ণ ভাবে নামাজ রোযা আদায় ও যাকাত হজ্জ (এ দুটি ফরজ হলে) পূর্ণ ভাবে আদায়, স্বামীর হক আদায়,বান্দার হক আদায় ও শরীয়তের যাবতীয় বিধিনিষেধ মানার পাশাপাশি https://ifatwa.info/54844 নং ফতোয়াতে উল্লেখিত চারটি গুন নিজের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

তাহলেই মহান আল্লাহ তায়ালা বিনা হিসেবে জান্নাতে দিবেন,ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...