আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
259 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামুয়ালাইকুম সম্মানিত মুফতি, আপনার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাই!

(আমি)ছেলে নিজেকে হানাফি বলে থাকে,আর আকিদায় ও মানহাযে সালাফি, মেয়ে আহলে হাদিস বলে থাকে নিজেকে! কাজি অফিসে বিবাহ হয় এবং তালাক বিষয়ক অজ্ঞতার কারণে হানাফি মাযহাব অনুযায়ী ৩ তালাক হয়ে যায় যা  সম্মানিত মুফতি কাছে শুনেছি!

মেয়ে সুইসাইড করতে ও রাজি, কারণ সে পচন্ড ভালবাসে আমায়,তার মতে বিবাহ ই হয়নি! পুনরায় বিয়ে করা যাবে,ও আমিও সেই বিশ্বাস রেখেছিলাম যে হিল্লাহ ছাড়াই পুনরায় বিবাহ করা যাবে! কিন্তু বিজ্ঞ আলেমদের মতে মতবিরোধ পাই, কেউ বলে বিয়ে ও তালাক হয়নি, কেউ বলে হয়ে গেছে! এই নিয়ে চরম সিদ্ধান্থীনতায় ভুগছি!

মেয়ে বলে তুমি যদি মনেই করো বিবাহ ও তালাক হয়ে গেছে,তাহলে আহলে হাদিস অনুযায়ী সুযোগ আছে তা সত্যেও যদি তুমি তা গ্রহণ না করো তবে তোমার কাছে তো হিল্লাহ বিবাহ তো সুযোগ আছে,আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো কিভাবে ইত্যাদি,খুব কান্না করে, সাথে আমিও কান্না করি!

আমি চাচ্ছিলাম বুকে পাথর বেধে হলেও কিছুদিনের জন্য তাকে অন্যের করে দিয়ে হলেও আমৃত্যু যদি তাকে  হালাল ভাবে পেতাম তবে ভালোই হতো,আর আল্লাহ ক্ষমাশীল তিনি নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবেন আমাদের!ইং শা আল্লাহ!

তাই আমি চাচ্ছিলাম তাকে অন্যত্র হিল্লাহ বিবাহ দিতে, মেয়ের অভিভাবক অনুমতি ছাড়া ২ জন সাক্ষীর উপস্থিতে তাকে অন্যত্র বিবাহ দিয়ে সহবাস শেষে ওই ব্যক্তি যদি তাকে তালাক দিয়ে দেয় তবে তারপর আমি তাকে ইদ্দত শেষে বিবাহ করতে চাই! হিল্লাহ বিবাহ হারাম,কিন্তু হিল্লাহ বিবাহের মাধ্যমে উক্ত স্ত্রী আগের স্বামীর জন্য হালাল হয়ে যায় শুনেছি, স্যার ডা. জাহাঙ্গীর রা এক ফতোয়া পেইজে বর্তমানে ওনার পেইজে যিনি উত্তর দেন,শায়েহ আহমাদুল্লাহ এক ইউটিউব ভিডিও তে তাই ই দেখি  হালাল হয়ে যাবে তবে গুনাহ হবে প্রচন্ড শুনেছি! আবার অন্যত্র কেউ কেউ বলেন হিল্লাহ বিবাহ হারাম  তাই স্ত্রী আগের স্বামীর জন্য এভাবে হালাল হবে না,যারা বলেন হালাল হবেনা,তাদের মতে আবার আমাদের বিয়ে ও তালাক ই হয়নি!
সব কিছু মিলে আমি  সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা,আবার তাকে সারাজীবন অন্য কারো করে দিতেও ইচ্ছে করেনা! আমরা লুকিয়ে বিয়ে করে ১ বছর কিছু বেশি সময় সংসার করেছি,দুই পরিবারের কেউ জানেনা এখনো!

২টি মতের মধ্যে কোন মত সঠিক কোনটা গ্রহন করবো তা বুঝতে পারছিনা! মনের মধ্যে সন্দেহ সংশয় কাছ করে যদি পারিবারিক ভাবে বিবাহ মাধ্যমে হালাল না হয় তবেতো আমৃত্যু যেনায় লিপ্ত থাকবো এই ভেবে!
তাই আমি সিদ্ধান্ত নিতে যাওয়া আগে জিজ্ঞাসা করে নেওয়া আলেম ও মুফতি কাছে উত্তম মনে করে আপনার এখানে প্রশ্ন করা দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েন!

আমি চাচ্ছিলাম তাকে হিল্লাহ বিবাহ দিতে ও পরবর্তী আল্লাহ কাছে ক্ষমা চাইতে, তাতে সেও হানাফি মাযহাব অনুযায়ী অন্য স্বামীর দারা তালাক প্রাপ্ত হয়ে ইদ্দত শেষে আমার সাথে বিবাহ মাধ্যমে হালাল হয়ে যেত! যারা বলেন এই হিল্লাহ বিবাহ মাধ্যমে স্ত্রী হালাল হবেনা তাদের মতে আমাদের বিয়েটাই হয়নি( আহলে হাদিস অনুযায়ী)! সুতরাং পারিবারিক ভাবে বিবাহ মাধ্যমে হালাল হয়ে যাবো ১০০% দুটো মতেই ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি!কেননা হানাফি মাযহাব আলেম ফতোয়া অনুযায়ী হিল্লাহ বিবাহ করাই নিলে হারাম হওয়া সত্যেও আগের স্বামীর জন্য হালাল হবে,আর আহলে হাদিস মতে আগের বিয়ে ও তালাক ই হয়নি,! এমতঅবস্থায় পরবর্তীতে আমি পুনরায় বিবাহ  করলে কিংবা পারিবারিক ভাবে বিবাহ করলে আমার আর পরবর্তীতে বিবাহ সংসার হারাম আছে এই সংশয় থাকবেনা,বরং হালাল ভাবেই সংসার করতে পারবো, আর আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন ইং শা আল্লাহ!

এটা সত্য যে প্রচন্ড কষ্ট হবে কিছু সময় জন্য স্ত্রীকে অন্যের করে দিতে, কিন্তু আমার ভুলেই তালাক হয়েছিল ভেবে অপরাধবোধ ও কাজ করে! হারাম ভাবে আবার সংসার ও করতে চাইনা, অতিত কে আকড়ে না ধরে নতুন করে দুজনে সুন্দর একটি সংসার  পুনরায় বিবাহ মাধ্যমে আমৃত্যু কাটিয়ে দিতে পারতাম হালাল ভাবে  ইং শা আল্লাহ!

আমার প্রশ্ন হলো: উপরিক্ত বর্ণণায় গুছিয়ে বলতে পেরেছি কিনা জানিনা,তবে আপনি আমার প্রশ্ন আশাকরি বুঝতে পারছেন!  উক্ত বর্ণনা অনুযায়ী, স্ত্রী কে কোন পুরুষ সহিত বিবাহ দিয়ে সহবাস শেষে কিংবা কিছুদিনে মধ্যে  ওই স্বামী তালাক দিয়ে দিলে আমি তাকে পুনরায় বিবাহ করলে আমাদের বিবাহ হালাল হবে কিনা?

স্ত্রী আহলে হাদিস,আমি নিজেকে হানাফি বলে থাকি কেউ জিজ্ঞাসা করলে..তবে  কুরআন সুন্নাহ আলোকেই আমল চেষ্ঠা করি,যদিও মাযহাব কুরআন সুন্নাহ বিরোধী নয়, কুরআন সুন্নাহ এর ব্যাখা মত ও পথ!মাযহাব মানা জায়েজ মনে করি তবে একটি নির্দিষ্ট মাযহাব ই মানতে হবে অন্য কোনো মানা যাবেনা সেটা বিশ্বাস করিনা,অথাৎ এক মাযহাবের হয়েও অন্য মাযহাবের কোন মত শক্তিশালী হলে সে অনুযায়ী আমল করতে পারবে!  তবে আমি যেহেতু আমি একটি ফিকহি মত গ্রহণ করেছি (হানাফি মাযহাব)তাই আমরা নতুন করে অন্য মাযহাব অনুযায়ী বিবাহ বাতিল ভেবে পুনরায় বিবাহ করতে পারবোনা যা হানাফি মাযহাব অনুযায়ী মুফতি বা আলেমদের ফতোয়া নিকট পেয়েছি!

দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতে তাকে বিবাহ দিয়ে পরবর্তীতে ওই  নতুন স্বামী তালাক দিলে আমি কি তাকে গ্রহন করতে পারবো পুনরায় বিবাহ মাধ্যমে যা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী হালাল হবে??

 দয়া করে আমাকে উত্তর টি দিয়েন শায়েখ,কুরআন ও সুন্নাহ আলোকে!

উক্ত এই ফতোয়া অনুযায়ী আমল করবো ইং শা আল্লাহ!!

এই পেইজেই বিবাহ ও তালাক সংক্রান্ত এটাই আমার শেষ প্রশ্ন ইং শা আল্লাহ!

প্রশ্নটি মুফতি ইমদাদুল হক হজুরের নিকট!

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
যদি প্রথম স্বামীর সাথে পূনরায় বিয়ে হালাল হওয়ার শর্তে অন্য কারো সাথে উক্ত স্ত্রীর বিয়ে হয়, তাহলে সেই পদ্ধতি নাজায়েয হিসেবে বিবেচিত হবে। হ্যা, যদি এমন বিয়ে হওয়ার পর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস হয়ে যায়, তাহলে প্রথম স্বামীর সাথে পূনরায় বিয়ে  বৈধ হয়ে যাবে, কেননা এখানে কুরআনে বর্ণিত শর্ত পাওয়া গিয়েছে। 
তবে যদি স্বামী স্ত্রী কারো মুখ থেকে বা তৃতীয় কারো মুখ থেকে বিয়ের পর তালাক হবে, এ জাতীয় কোনো শর্ত উল্লেখিত না হয়, বরং স্বামী বা স্ত্রীর কারো মনের মধ্যে এমনটা থাকে, এবং বিয়ের পরবর্তী সহবাসের পর স্বামী বা স্ত্রীর কেউ তালাক দেয় বা চায়, তাহলে তখন তালাক পরবর্তী প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ জায়েয হবে ।এবং উক্ত ত্বরিকাটাও নাজায়েয বা মাকরুহ হবে না।

দারুল উলূম দেওবন্দের একটি ফাতাওয়ায় বলা হয় যে,
 اگر صرف آپ کے دل میں یہ بات ہو کہ میں نکاح کے بعد طلاق لینے کی کوشش کروں گی تاکہ سابق شوہر کے لیے حلال ہو جاوٴں اور آپ کی اس نیت کا علم کسی کو نہ ہو، تو شرعا یہ نکاح جائز ہوگا اور محض دل کی نیت کی وجہ سے کوئی گناہ نہیں ہوگا۔ اور اس کے بعد اگر دوسرا شخص طلاق دیدے گا تو وہ ماجور ہوگا۔ (۳، ۴، ۵) 
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ, ফাতাওয়া নং
Fatwa ID:758-798/sd=9/1437 (۱، ۲)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/64436


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...