بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
হযরত আবু আইয়ুব রাযি থেকে
বর্ণিত।
وعَنْ
أَبِي أَيُّوبَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ
يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ، يَلْتَقِيَانِ, فَيُعْرِضُ هَذَا،
ويُعْرِضُ هَذَا، وخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির জন্য হালাল নয় যে সে তার ভাই এর সাথে তিন
দিনের বেশী এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু’জনে সাক্ষাৎ হলেও একজন এদিকে আর অপর জন সে দিকে মুখ
ফিরিয়ে নেবে। তাদের মধ্যে যে সর্বপ্রথম সালামের সূচনা করবে,
সেই উত্তম ব্যাক্তি। (সহীহ মুসলিম-২৫৬০)
উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় মুল্লা
আলী কারী রাহ লিখেন,
وَأَجْمَعَ
الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ مَنْ خَافَ مِنْ مُكَالَمَةِ أَحَدٍ وَصِلَتِهِ مَا
يُفْسِدُ عَلَيْهِ دِينَهُ أَوْ يُدْخِلَ مَضَرَّةً فِي دُنْيَاهُ يَجُوزُ لَهُ
مُجَانَبَتُهُ وَبُعْدُهُ، وَرَبَّ صَرْمٍ جَمِيلٍ خَيْرٌ مِنْ مُخَالَطَةٍ
تُؤْذِيهِ.
উলামাগণ একমত যে,
কারো সাথে কথা বললে বা মিলিত হলে যদি তার
দ্বীন নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বা তার দুনিয়া তার জন্য কষ্টকর হবে বলে ধারণা হয়,
তাহলে এমন মানুষ থেকে দূরে থাকার জায়েয
রয়েছে।অনেক সম্পর্ক বর্জন বা দূরত্ব এমন রয়েছে যা মিলিত হওয়ার চেয়ে অনেক উত্তম।
সুতরাং যাদের সাথে সম্পর্ক
রাখলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে সম্পর্কচ্ছেদ
করা বা কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ করা জায়েয রয়েছে তারা রক্ত সম্পর্কীয় বা একান্ত নিকটাত্মীয়
হলেও। সমাজের কিছু মানুষ অন্যের ক্ষতি করতে বা মানুষকে কষ্ট দিতে সিদ্ধহস্ত। তাই অন্যরা
সাধ্যমত তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। এমন মানুষ আল্লাহ তায়ালা;আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট। মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার
স্বার্থে অথবা কারো কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খারাপ হলে তাদের থেকে দূরে থাকার অনুমতি
পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদীস সমূহ থেকে:
আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ
النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ
اتِّقَاءَ شَرِّهِ
নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্
তায়ালা;আলার
নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে যাকে অন্যরা পরিত্যাগ করে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে ।
(বুখারী ৬০৩২;
মুসলিম ২৫৯১)
রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ
النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ
تَرَكَهُ
النَّاسُ
اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে
ঐ ব্যক্তি নিকৃষ্ট স্তরের বলে গণ্য হবে যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরিত্যাগ করে।
(মুসলিম: ৬৪৯০;
বুখারী: ৬০৩২;
আবূ দাউদ;
৪৭৯১)।
রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ
النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ ـ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ ـ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক
সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।
(বুখারী: ৬০৫৪)।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
কারো চরিত্র খারাপ হলে বা কেউ
বদ মেজাজী থাকলে কিংবা তার সাথে চলাফেরা করলে,
আর্থিক, শারীরিক, মানসিক, দ্বীনি, দুনিয়াবি ইত্যাদি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তখন ঐ
ব্যক্তি থেকে দূরে অবস্থান করা জায়েয আছে। তবে
সাক্ষাৎ হলে একজন সাধারণ মুসলিম হিসেবে সালাম কালাম করবেন ও কুশল বিনিময় করবেন। এবং যাদের থেকে ক্ষতি হওয়ার আশংকা বোধ করছেন তাদের থেকে আল্লাহ তায়ালার নিকট পানাহ চাইবেন । ইনশাআল্লাহ আপনারা ক্ষতি থেকে মাহফুজ থাকবেন।