আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
197 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
এক বোনের স্বামী তার ভাইয়ের সাথে কোনো কারণে ঝগড়া করেছিলো এরপর থেকে বোনটাকে তার বাসার কারো সাথেই যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না কিন্তু বাবা মা কি মেয়ের খবর না নিয়ে থাকতে পারবে নাকি।তো বোনটি স্বামীর কথায় কল দেন না কিন্তু বোনের বাবা-মা কল দেন তো তাদের সাথে কথা বলায় বোনটির স্বামী তাকে মানসিক টর্চার করছে।বোনটার স্বামী বিদেশ থাকেন তো সে বলছে বোনটি যদি তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ না করেন তাহলে তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে আর প্রায় কয়েক সপ্তাহ হয়েছে তার স্বামীর সাথে কোনো যোগাযোগ নেই তার শুধু বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার জন্য।আবার কিছুদিন আগেই বোনটির মা স্টোক করেছে এরপর থেকে প্রায় ৮মাস হয়ে গিয়েছে একটিবারের জন্যেও বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে যান নি স্বামী বারণ করেছেন তাই।তো প্রশ্ন হলোঃ স্বামীর কথা রাখতে কি বোনটি তার বাবা-মা কে কল করতে বারণ করে দিবে? বা যোগাযোগ ছিন্ন করে দিতে পারেন?

যদিও জানি যে আত্মীয়তা ছিন্নকারী কখনো জান্নাতে যাবে না বা জান্নাতের ঘ্রাণ ও পাবে না সেখানে বাবা মায়ের সাথে এরূপ আচরণ ইসলাম কিভাবে দেখে? অন্যদিকে স্বামীর কথা মান্য করাও স্ত্রীর কর্তব্য! আল্লাহ তা'য়ালা মাফ করুন এবং সহজ করুন।যথাযথ সমাধান জানিয়ে সাহায্য করুন শায়েখ।


জাযাকাল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


শরীয়তের বিধান হলোঃ-
স্বামীর জন্য জায়েজ নেই,যে সে তার স্ত্রীকে বাবা মার সাথে কথা বলা ও দেখা সাক্ষাৎ হতে নিষেধ করে।

স্ত্রীর জন্য তার বাবা মার সাথে সাক্ষাৎ করার ক্ষেত্রে বিধান হলো,যদি স্ত্রীর বাবা মা তার কাছে আসতে পারে।
তাহলে তারাই এসে দেখা করে যাবে।
আর যদি তাদের আসা অসম্ভব হয়,তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে এক দিন স্ত্রীকে তার বাবা মার সাথে সাক্ষাৎ এর জন্য যেতে দিতে হবে।
আসা যাওয়ার খরচ স্বামী বহন করবে।

যদি দূরে বাড়ি হয়,তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে না পাঠালেও মুনাসিব তথা উপযুক্ত সময় পর সাক্ষাৎ করার জন্য যেতে অনুমতি দিতে হবে।

কুরআনের ঘোষনা হলঃ

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩

"وإذا أراد الزوج أن يمنع أباها، أو أمها، أو أحدًا من أهلها من الدخول عليه في منزله اختلفوا في ذلك، قال بعضهم: لايمنع من الأبوين من الدخول عليها للزيارة في كل جمعة، وإنما يمنعهم من الكينونة عندها، وبه أخذ مشايخنا -رحمهم الله تعالى-، وعليه الفتوى، كذا في فتاوى قاضي خان، وقيل: لايمنعها من الخروج إلى الوالدين في كل جمعة مرةً، وعليه الفتوى، كذا في غاية السروجي، وهل يمنع غير الأبوين عن الزيارة في كل شهر؟ وقال مشايخ بلخ: في كل سنة، وعليه الفتوى، وكذا لو أرادت المرأة أن تخرج لزيارة المحارم كالخالة والعمة والأخت فهو على هذه الأقاويل، كذا في فتاوى قاضي خان، وليس للزوج أن يمنع والديها وولدها من غيره وأهلها من النظر إليها وكلامها في أي وقت اختاروا، هكذا في الهداية". (الفتاوى الهندية ، کتاب الطلاق، الباب السادس عشر، الفصل الثانی (11/415) ط: دار الفکر)
সারমর্মঃ
যদি স্বামী তার বাবা, তার মা, বা তার পরিবারের একজনকে তার বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দিতে চায়, তবে ইসলামী স্কলারদের মধ্যে মত বিরোধ রয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে: প্রতি শুক্রবার তাদের সাথে দেখা করা থেকে বাধা দেয়া যাবেনা,তবে তাদের সাথে থাকতে বাধা দেয়া যাবে।

এর উপরেই ফতোয়া। 
কেহ কেহ বলেছেন যে প্রতি শুক্রবার একবার তাদের সাথে দেখা করতে স্ত্রী যেতে পারবে,স্বামী এতে বাধা দিতে পারবেনা। 

ولا یمنعھا من الدخول الیھا فی کل جمعۃ وغیرھم من الاقارب فی کل سنۃٍ ھوالمختار الخ وعن ابی یوسف فی النواء تقیید خروجھا بان لایقدر علی اتیانھا فان قدرا لاتذہب وھو حسن والحق الاخذ یقول ابی یوسف اذا کان الابوان علی الصفۃ التی ذکرت والاینبغی ان یاذن لھا فی زیارتھا فی الحین بعد الحین علی قدر متعارف الخ۔ (ردالمختار ص ۲۵۳، ج ۳)
সারমর্মঃ
স্ত্রীর সাথে তার বাবা মার প্রতি শুক্রবার দেখা করা থেকে স্বামী নিষেধ করতে পারবেনা। 
অন্যান্য আত্মীয়দের ক্ষেত্রে বছরে একবার।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর এহেন আদেশ বড় ধরনের জুলুম।
এতে স্ত্রীর উপর খুবই অন্যায় করা হয়েছে।
,
উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রীর জন্য স্বামীর এহেন শরীয়তে অগ্রহণযোগ্য আদেশ মান্য করা জরুরী নয়।
বরং উক্ত আদেশ অমান্য করে বাবা মার এহেন অবস্থাতে তাদের সাথে দেখা করতে যাওয়াই উচিত।

স্ত্রী নিয়মিত তার বাবা মার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে,সম্পর্ক ছিন্ন করা বা যোগাযোগ ছিন্ন করা বৈধ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...