আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।।
আমার দাদিমার পালিত ছেলে আমার আব্বু।।আমার দাদিমার ভাইয়ের বউ,ভাই,তাদের মেয়ে আমার আব্বু, আম্মু, আমাকে, আমার বোনকে নিয়ে নানান ধরনের কথা বলে.. যেগুলো শুনতে খুব খারাপ লাগে....তারা যেগুলো কথা বলে সেগুলোর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার আম্মুর সাথে  তাদের কথা কাটাকাটির মাঝে ঝগড়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়...আমিও তাদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে দুই একটা কথা বলে ফেলি খুব রেগে গিয়ে....আল্লাহ মাফ করুক... আল্লাহ হেদায়াত দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ... কথা কাটাকাটির মাঝে  তারা আমার অতীত নিয়ে কথা বলে..আমরা আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ অনেকটাই স্বচ্ছল সার্বিক  দিক থেকে,,,তারা আমাদের এই ভালোভাবে চলাফেরা,, সবার সাথে ভালো সম্পর্ক এগুলো মন থেকে মেনে নিতে পারে না... তারা প্রায় সময় আমাদের পরিবার নিয়ে নানান বাজে কথা বলে....এখন আমার প্রশ্ন তারা তো আমাদের রক্তের সম্পর্কের কেউ না,,, তাদের(দাদিমার ভাই,ভাইয়ের বউ,তাদের মেয়ের) সাথে সম্পর্ক না রাখলে বা তাদের সাথে কখনো আর কথা না বললে কি গুনাহ হবে???

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

হযরত আবু আইয়ুব রাযি থেকে বর্ণিত।

 وعَنْ أَبِي أَيُّوبَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ، يَلْتَقِيَانِ, فَيُعْرِضُ هَذَا، ويُعْرِضُ هَذَا، وخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির জন্য হালাল নয় যে সে তার ভাই এর সাথে তিন দিনের বেশী এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু’জনে সাক্ষাৎ হলেও একজন এদিকে আর অপর জন সে দিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের মধ্যে যে সর্বপ্রথম সালামের সূচনা করবে, সেই উত্তম ব্যাক্তি। (সহীহ মুসলিম-২৫৬০)

উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় মুল্লা আলী কারী রাহ লিখেন,

وَأَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ مَنْ خَافَ مِنْ مُكَالَمَةِ أَحَدٍ وَصِلَتِهِ مَا يُفْسِدُ عَلَيْهِ دِينَهُ أَوْ يُدْخِلَ مَضَرَّةً فِي دُنْيَاهُ يَجُوزُ لَهُ مُجَانَبَتُهُ وَبُعْدُهُ، وَرَبَّ صَرْمٍ جَمِيلٍ خَيْرٌ مِنْ مُخَالَطَةٍ تُؤْذِيهِ.

উলামাগণ একমত যে, কারো সাথে কথা বললে বা মিলিত হলে যদি তার দ্বীন নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বা তার দুনিয়া তার জন্য কষ্টকর হবে বলে ধারণা হয়, তাহলে এমন মানুষ থেকে দূরে থাকার জায়েয রয়েছে।অনেক সম্পর্ক বর্জন বা দূরত্ব এমন রয়েছে যা মিলিত হওয়ার চেয়ে অনেক উত্তম।

সুতরাং যাদের সাথে সম্পর্ক রাখলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে সম্পর্কচ্ছেদ করা বা কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ করা জায়েয রয়েছে তারা রক্ত সম্পর্কীয় বা একান্ত নিকটাত্মীয় হলেও। সমাজের কিছু মানুষ অন্যের ক্ষতি করতে বা মানুষকে কষ্ট দিতে সিদ্ধহস্ত। তাই অন্যরা সাধ্যমত তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। এমন মানুষ আল্লাহ তায়ালা;আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট। মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে অথবা কারো কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খারাপ হলে তাদের থেকে দূরে থাকার অনুমতি পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদীস সমূহ থেকে:

আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ شَرِّهِ

নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তায়ালা;আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে যাকে অন্যরা পরিত্যাগ করে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে । (বুখারী ৬০৩২; মুসলিম ২৫৯১)

রাসূল () বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ

النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ

কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি নিকৃষ্ট স্তরের বলে গণ্য হবে যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরিত্যাগ করে। (মুসলিম: ৬৪৯০; বুখারী: ৬০৩২; আবূ দাউদ; ৪৭৯১)।

রাসূল () বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ ـ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ ـ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ

নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে। (বুখারী: ৬০৫৪)।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

কারো চরিত্র খারাপ হলে বা কেউ বদ মেজাজী থাকলে কিংবা তার সাথে  চলাফেরা করলে, আর্থিক, শারীরিক, মানসিক, দ্বীনি, দুনিয়াবি ইত্যাদি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তখন ঐ ব্যক্তি থেকে দূরে অবস্থান করা জায়েয আছে। তবে সাক্ষাৎ হলে একজন সাধারণ মুসলিম হিসেবে সালাম কালাম করবেন ও কুশল বিনিময় করবেন। এবং যাদের থেকে ক্ষতি হওয়ার আশংকা বোধ করছেন তাদের থেকে  আল্লাহ তায়ালার নিকট পানাহ চাইবেন । ইনশাআল্লাহ আপনারা ক্ষতি থেকে মাহফুজ থাকবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...