আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
356 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
closed by
ক)উস্তাদ দরসে বললেন যে সূরা ফাতিহার আগে তাশাহহুদ পড়লে সাহু সিজদাহ লাগে না। কিন্তু https://ifatwa.info/5646/ এই প্রশ্নে বলেছিলেন লাগে। একটু বুঝিয়ে বললে ভালো হয়। কেন সাহু সিজদাহ লাগবে না বা কেন লাগবে!

খ) আস্তে নামাযের সময় একা একা পড়ার সময় ভুলে জোরে কিরাত পড়লে কি সাহু সিজদাহ দিতে হবে?

গ) ইমাম এর আস্তে পড়ার সময় আমি যদি ভুলে মুক্তাদি হিসেবে সূরা ফাতিহা পড়ার সময় জোরে পড়ে ফেলি তাহলে কি আমার একা একা সিজদাহ্ সাহু দিতে হবে?/ (ইমামের সিজদাহ্ সাহু দিতে হবে আমার জন্য)?

4)ঘুমন্ত বা পাগল বা নাবালক এর তিলাওয়াত এর আয়াত শুনলে কি করবো আমি? সিজদাহ্ দিব নাকি না? বইয়ে আছে দিতে হবে না,আর উস্তাদ বলেছেন দিতে হবে।

5)আমি বাস জার্নি করবো।তো বাসা থেকে হেঁটে যদি সায়েদাবাদ যাই। তারপর বাসে করে সায়েদাবাদ  থেকে বাস স্টেশন এ যাই। বাস স্টেশন ঢাকার সীমানার বাইরে। কিন্তু সীমানা থেকে ৭৮ কি.মি. এর কম। কিন্তু সায়েদাবাদ বা আমার বাসা থেকে ৭৮ কি.মি. এর বেশি৷ এই ক্ষেত্রে আমি দূরত্ব হিসাব কি বাসা থেকে করবো নাকি সায়েদাবাদ থেকে নাকি ঢাকার সীমানা থেকে। ঢাকার সীমানা থেকে করলে আমি মুক্বীম আর বাকি দূইটা থেকে করলে আমি মুসাফির।  কোনটা হবে?
closed

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(ক)

নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

★কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে সূরা ফাতিহার আগে তাশাহহুদ পড়লে সাহু সিজদাহ আদায় করা মুস্তাহাব।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
قوله عليه الصلاة والسلام : ( لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ ) رواه أبو داود (1038) ، وحسنه الشيخ الألباني رحمه الله في " صحيح سنن أبو داود "
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,  প্রত্যেকটা ভুলের জন্য সেজদায়ে সাহু দিতে হবে।
,
يستحب له أن يسجد للسهو ؛ لأنه جاء بذكر مشروع في غير موضعه ، فالتشهد مشروع في الصلاة ، لكن ليس موضعه القيام ، فيستحب السجود للسهو لأجل ذلك ، ولعموم قوله عليه الصلاة والسلام : ( لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ ) رواه أبو داود (1038) ، وحسنه الشيخ الألباني رحمه الله في " صحيح سنن أبو داود " .
সারমর্মঃ   তার জন্য সেজদায়ে সাহু আদায় করা মুস্তাহাব  কেননা সে ভিন্ন জায়গায় তাশাহুদ পড়েছে,দাড়ানো অবস্থা তাশাহুদ পড়ার জায়গা নয়।
রাসুল সাঃ এর উক্ত হাদীস সেই দিকেই ইঙ্গিত বহন করে।      
★★তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামদের মত হলোঃ   
শরীয়তের বিধান মতে ১ম রাকাতে সুরা ফাতেহার আগে তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
সুরা ফাতেহার পর তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 
,
 ২য় ও অন্যান্য রাকাতে সুরা ফাতেহার আগে তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়া নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
ছহীহ কথা হলো সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
,   
সুরা ফাতেহার পর তাশাহুদ পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 
 .
الفتاوى الهندية (1/ 127)
'' ولو قرأ التشهد في القيام إن كان في الركعة الأولى لا يلزمه شيء، وإن كان في الركعة الثانية اختلف المشايخ فيه، والصحيح أنه لا يجب، كذا في الظهيرية.
ولو تشهد في قيامه قبل قراءة الفاتحة فلا سهو عليه، وبعدها يلزمه سجود السهو، وهو الأصح؛ لأن بعد الفاتحة محل قراءة السورة، فإذا تشهد فيه فقد أخر الواجب، وقبلها محل الثناء، كذا في التبيين۔ ولو تشهد في الأخريين لا يلزمه السهو، كذا في محيط السرخسي''.

সারমর্মঃ  যদি দাড়ানো অবস্থায় তাশাহুদ পড়ে,তাহলে ১ম রাকাত হলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। 
২য় রাকাত হলে ছহীহ কওল হলো সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।        

حاشية الطحطاوي على مراقي الفلاح شرح نور الإيضاح (ص: 461)
''ولو قرأ التشهد مرتين في القعدة الأخيرة أو تشهد قائماً أو راكعاً أو ساجداً لا سهو عليه، منية المصلي۔ لكن إن قرأ في قيام الأولى قبل الفاتحة أو في الثانية بعد السورة أو في الأخيرتين مطلقاً لا سهو عليه، وإن قرأ في الأوليين بعد الفاتحة والسورة أو في الثانية قبل الفاتحة وجب عليه السجود؛ لأنه أخر واجباً''۔
সারমর্মঃ কেহ যদি দাড়ানো,রুকু,সেজদাহর সময় তাশাহুদ পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।     

النهر الفائق شرح كنز الدقائق (1/ 324)
''وقالوا: لو أتى بالتشهد في قيامه أو قعوده أو سجوده فلا شيء عليه؛ لأنها محل الثناء، وهذا يقتضي تخصيص القيام بالأولى، ومن ثم قال في (الظهيرية): إنه في الأولى فلا شيء عليه، واختلف المشايخ في الثانية، والصحيح أنه لا يجب، وقيده الشارح بما قبل الفاتحة، أما بعدها قبل السورة فيجب على الأصح؛ لتأخير السورة''۔
সারমর্মঃ কেহ যদি দাড়ানো,বৈঠক,সেজদাহর সময় তাশাহুদ পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।  

البحر الرائق شرح كنز الدقائق ومنحة الخالق وتكملة الطوري (2/ 105)
''ومنها: لو تشهد في قيامه بعد الفاتحة لزمه السجود، وقبلها لا، على الأصح؛ لتأخير الواجب في الأول ـ وهو السورة ـ ، وفي الثاني محل الثناء وهو منه،  وفي الظهيرية: لو تشهد في القيام، إن كان في الركعة الأولى لا يلزمه ،شيء وإن كان في الثانية اختلف المشايخ فيه، والصحيح أنه لا يجب'' اهـ.
সারমর্মঃ  যদি কেহ ফাতেহার পর তাশাহুদ পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।
তার আগে পড়লে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।

المحيط البرهاني في الفقه النعماني (1/ 504)
''ولو قرأ التشهد قائماً أو راكعاً أو ساجداً لا سهو عليه؛ لأن التشهد ثناء، والقيام موضع الثناء والقراءة.أرأيت لو افتتح فقال: السلام عليك أيها النبي إلى قوله عبده ورسوله، فإنه يكون بمنزلة الدعاء، ولا سهو عليه. وعن أبي يوسف رحمه الله: فيمن تشهد قائماً فلا سهو عليه، وإن قرأ في جلوسه فعليه السهو، أرأيت لو كبر فقرأ بعد الثناء : أشهد أن لا إله إلا الله، وأشهد أن محمداً عبده ورسوله، فقال هذا أو نحوه، هل يجب عليه سجود السهو! ؛ لأنه إن كان في موضع الثناء، فموضع الثناء منه معروف، وإن قرأ في الركعتين الأخيرتين، فليس عليه سجود السهو؛ لأنه يتخير في الركعتين الآخيرتين''
,
সারমর্মঃ কেহ যদি দাড়ানো,রুকু,সেজদাহর সময় তাশাহুদ পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। 

(খ)
ছোট আয়াত হলে তিন আয়াত,বড় আয়াত হলে এক আয়াত সমপরিমাণ আস্তে পড়লে  সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।    

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 81):
"(والجهر فيما يخافت فيه) للإمام، (وعكسه) لكل مصل في الأصح، والأصح تقديره (بقدر ما تجوز به الصلاة في الفصلين. وقيل:) قائله قاضي خان، يجب السهو (بهما) أي بالجهر والمخافتة (مطلقاً) أي قل أو كثر.
(قوله: والجهر فيما يخافت فيه للإمام إلخ) في العبارة قلب، وصوابها: والجهر فيما يخافت لكل مصل، وعكسه للإمام، ح وهذا ما صححه في البدائع والدرر، ومال إليه في الفتح وشرح المنية والبحر والنهر والحلية على خلاف ما في الهداية والزيلعي وغيرهما، من أن وجوب الجهر والمخافتة من خصائص الإمام دون المنفرد.
والحاصل: أن الجهر في الجهرية لا يجب على المنفرد اتفاقاً؛ وإنما الخلاف في وجوب الإخفاء عليه في السرية، وظاهر الرواية عدم الوجوب، كما صرح بذلك في التتارخانية عن المحيط، وكذا في الذخيرة وشروح الهداية كالنهاية والكفاية والعناية ومعراج الدراية. وصرحوا بأن وجوب السهو عليه إذا جهر فيما يخافت رواية النوادر اهـ فعلى ظاهر الرواية لا سهو على المنفرد إذا جهر فيما يخافت فيه، وإنما هو على الإمام فقط.

(قوله: والأصح إلخ) وصححه في الهداية والفتح والتبيين والمنية؛ لأن اليسير من الجهر والإخفاء لا يمكن الاحتراز عنه، وعن الكثير يمكن، وما تصح به الصلاة كثير، غير أن ذلك عنده آية واحدة، وعندهما ثلاث آيات هداية. (قوله: في الفصلين) أي في المسألتين مسألة الجهر والإخفاء"

সারমর্মঃ 
যতটুকু দ্বারা নামাজ ছহীহ হয়ে যায়,ততটুকু কেরাত পড়লেও সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।     
,
(০৩)

এমন ভুল,যার দ্বারা সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব  হয়,সেই কাজ যদি মুক্তাদি করে,তাহলে  সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
,
(০৪)
ঘুমন্ত বা পাগলের থেকে আয়াতে সেজদাহ শুনলে সেজদায় ওয়াজিব হবেনা।
নাবালেগ থেকে আয়াতে সেজদাহ শুনলে সেজদায় ওয়াজিব হবে।  
(ফাতাওয়ায়ে শামী ২/১০৮) 

(০৫) এখানে আপনার বাসা থেকে দুরত্ব  ধর্তব্য।
আপনার বাসা থেকে যেহেতু ৭৮ কিলোমিটার এর দুরত্বে, তাই সেখানে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়তে সফর করলে আপনি মুসাফির হবেন।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...