আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমুতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ্,,
বিয়ে এবং পর্দার বিষয় এ আমার কিছু প্রশ্ন আছে...

১.আমার আপন খালাতো ভাই এর সাথে কিছু দিন আগে,পারিবারিক ভাবে আমার বিয়ের কথা চলছিল ,, আমার ভাই আমার সাথে সাক্ষাতে কথা বলতে চেয়েছিল, তাই পরিবারের অনুমতিতে,তার সাথে আমি এক রেস্টুরেন্টে দেখা করি,কথা বলার এক পর্যায়ে, উনি আমার মুখ দেখতে চায়,যেহেতু পরিপূর্ণ পর্দা করি থেকে আমি কারও সামনে যাই না,তাই বিয়ের উদ্দেশ্য আমি নিকাব খুলে তাকে মুখ দেখাই,,কিন্তু কারণ বসত, তার সাথে আমার বিয়েটা হয় নি আলহামদুলিল্লাহ,,, মুখ দেখা,দেখা করা,কথা বলার কারনে কি আমার গুনাহ হবে???

২.শুধু পাত্রের সামনে কতো টুকু পর্দা করে যেতে হবে???

৩.কিছুদিন আগে,পাত্রের ভাই দুলাভাই,আমাকে দেখতে আসছিল,, আমি পরিবারকে অনেক বুঝাইছি,,অনেক কান্না করেছি,তাদের সামনে আমি যাব না,,আমার পরিবার পর্দার দিক টা অনেক সাপোর্ট করে আলহামদুলিল্লাহ,, কিন্তু তাদের একটা ধারণা, কেউ না দেখলে,বিয়ে করবে না,,,আমাকে বিয়ের জন্য এতোটুকু ছাড় দিতেই হবে,,আমার গুনাহ হলে তার দায় ভার তারা নিবে,,কথা না শুনলে বলে অবাধ্য সন্তান,, আরও অনেক কিছু শুনতে হয়,,,তাদের কথা শুনলে আমার রব অসন্তুষ্ট, আর রবের হুকুম মানতে গেলে,তাদের কষ্ট দেওয়া,,,কি করা উচিৎ এই পরিস্থিতিতে আমার???আমি জানি রব কেই প্রধান্য দেওয়া উচিত,, আর আমি সেটাই করার চেষ্টা করি,,কিন্তু পরিবার আমাকে বাধ্য করে,,, সেদিনও বাধ্য করেছিল,,, সবার সামনে যেতে,,,আমি হাত,পা মজা পরে,বোরকা পড়েই গিয়েছিলাম, কিন্তু মুখ টা খোলা ছিল,,, আমার কোন উপায় ছিল না,,,এতে কি আমার গুনাহ হবে???আমার পরিবারের গুনাহ হবে??? কি ধরনের গুনাহ হবে???আমি কি ভাবে এসব থেকে বাচতে পারবো,,, প্লিজ আমাকে পরামর্শ দিন উস্তাদ,,,,

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

https://ifatwa.info/2898/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়, তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে। কথা বলতে পারবে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়, তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়। (সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

 

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম। একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই। রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো? তিনি বললেন,না। রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে। (সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

 

" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".

বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়। কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)

 

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১) খালওয়াত হতে পারবে না।

(২) মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।

(৩) ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে। যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়, অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়, তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪) মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫) মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত, টাখনু পর্যন্ত পা এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।

(৬) প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

 

(১) প্রস্তাবের পূর্বে বায়োডাটা প্রেরণ করা যাবে। তবে ছবি প্রেরণ করা যাব না। বরং পাত্র পক্ষের কোনো এক মহিলা সরাসরি পাত্রীকে দেখে আসবেন। আর প্রস্তাব দেয়ার পর যথাসম্ভব সরাসরি দেখার চেষ্টা করা হবে। কেননা যে হেকমতে পাত্রী দেখার কথা বলা হচ্ছে, সেটা একমাত্র সরাসরি দেখার মাধ্যমেই সম্ভব। হ্যা কোনো কারণে (যেমন পাত্র-পাত্রী বিদেশে অবস্থানরত)যদি পাত্র-পাত্রীকে সরাসরি দেখা সম্ভব না হয় তাহলে ভিডিওকলের মাধ্যমে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে দেখা যেতে পারে। কেননা ছবির তুলনায় ভিডিওর হুকুমে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে। ছবি ভিডিও সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2253

 

(২) বিনা প্রয়োজনে রেষ্টুরেন্ট বা পার্কে পাত্র-পাত্রী দেখা উচিৎ না। কেননা এক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাদির কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না। মহিলা প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাহিরে বের হবে না। এ সম্পর্কে জানুন- https://www.ifatwa.info/572

 

(৩) উপরোক্ত শর্তাদির সাথে নিজ বাসা বা আত্মীয়র বাসা পাত্রপাত্রী দেখা যেতে পারে।

(৪) বিয়ের প্রস্তাবের পর পাত্রীর বাসায় এসে মাহরামের উপস্থিতিতে পাত্র-পাত্রী পরস্পর পরস্পরকে দেখবে। অযথা বেহুদা কথাবার্তা থেকে উভয় বেঁচে থাকবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. বিনা প্রয়োজনে রেষ্টুরেন্ট বা পার্কে পাত্র-পাত্রী দেখা উচিৎ না। কেননা এক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাদির কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

২. পাত্রের সামনে মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত, টাখনু পর্যন্ত পা এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।

 

৩. বিয়ে করার নিয়তে মেয়েকে (পুরুষদের মধ্যে)  শুধু পাত্র দেখতে পারবে। এছাড়া পাত্রের বাবা, ভাই, দুলা ভাই মেয়েকে দেখতে পারবে না। তারা দেখলে বা তাদের সামনে দেখা দিলে গোনাহ হবে।  তাই আপনি আপনার বাড়ীতে ও পাত্র পক্ষকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন যে, আপনাকে শুধু ছেলে দেখতে পারবে এবং আরো ভালো ভাবে দেখতে চাইলে ছেলের মা, বোন, ভাবিও দ্বারাও দেখাতে পারেন।

পাত্রের বাবা বিয়ের আগে দেখতে পারবেন কি না এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/59732/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...