আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
245 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (23 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। ৩ বছর হলো আমার বিয়ে হয়েছে,আমরা জয়েন্ট ফ্যামিলিতে থাকি।আমার সমস্যা হলো আমার শশুর বাড়ির লোকদের মধ্যে অনেক শিরক ও এ জাতীয় অনেক সমস্যা রয়েছে। এখন এই পরিবেশে ইসলাম প্র্যাকটিস করা ও পর্দা মেইনটেইন করা প্রায় অসম্ভব। উনারা কেও প্র্যাকটসিং না, পর্দা করতে সহায়ক না। কোনো প্রকার স্বাধীনতা নেই আমার। আর উনারা মুখ খারাপ করেন খুব বেশি, মাজারেও যান, অনুসরণ করেন। শশুর শাশুড়ীর বয়সও বেশিনা।

  আমার একটি ছোট ছেলে আছে যাকে এই পরিবেশে থেকে দ্বীনি শিক্ষা দেওয়াও প্রায় অসম্ভব। আমি ও আমার হাসবেন্ড চাই সেপারেট হতে কিন্তু আমার শশুর এর ইচ্ছা উনি বেচে থাকতে আলাদা হওয়া অসম্ভব, হতে হলে বারি থেকে বের হয়ে যেতে হবে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সম্পর্ক ছিন্ন করাও তো জায়েজ না, এই পরিবেশে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না একদমই।  এখন এই পরিস্থিতি তে আমাদের করনীয় কি?? আশা করি সহজ সমাধান দিবেন ইন শা আল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর যদি আলাদা বাসা ভাড়া/ক্রয় করে আপনাকে নিয়ে থাকা সম্ভব হয়,সেক্ষেত্রে আপনার জন্য আলাদা বাসস্থানে ব্যবস্থা করা ওয়াজিব।
আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা না করলে তার গুনাহ হবে।

হ্যাঁ যদি তার আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সামর্থ না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার জন্য আলাদা বাসস্থানে ব্যবস্থা করা ওয়াজিব নয়।

সেক্ষেত্রে আপনাদের জন্য করনীয় হলো পরিবারের সকলকে নিয়ে বসে আপনার পূর্ণ  পর্দায় থাকার বিষয় নিশ্চিত করা।
আপনার সন্তানের জন্য সুশিক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাঝাকাল্লাহ খায়ের 
উস্তাদ সামর্থ্য আছে আলাদা বাসা নেওয়ার। কিন্তু শশুর শাশুড়ী বলেছেন যে আলাদা বাসা নিয়ে থাকলে একবারে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবে। সেক্ষেত্রে কি আলাদা বাসা নিয়ে থাকা জায়েজ হবে? অপরদিকে আলাদা বাসায় থাকাটাও অতীব জরুরি এবং সামর্থ্যও আছে।
by (565,890 points)
বাসায় গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে পর্দা মেইনটেইন করা সম্ভব হলে আলাদা বাসা না নেওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

বাসায় গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে পর্দা মেইনটেইন করা সম্ভব বা হলে আলাদা বাসা নেওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...