আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
182 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
আস সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ উস্তাদ,আমার বিয়ের ১বছর হয়েছে আল হামদুলিল্লাহ।আমার স্বামীর যৌথ পরিবার।পরিবার খুব বেশি বড় নয়,ছোট পরিবার ই বলা চলে।আমার স্বামী আর আমার ভাসুর,শ্বাশুড়ি, ভাসুরের সন্তান,ভাসুরের স্ত্রী।শ্বশুড় মারা গিয়েছে।বিয়ের আগে আমি জেনেছি যে যৌথ পরিবার,আমার স্বামী ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করে আল হামদুলিল্লাহ।বিয়ের আগে আমি বুঝি নি যে যৌথ পরিবারে থাকা এতোটা কষ্টকর!আমার শ্বাশুড়ি আমার সাথে বেশিরভাগ সময় খিটমিট করে,কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে সেটার জন্যও শ্বাশুড়ির অনুমতি লাগে।আমার স্বামী যে কোনো কাজ করতে গেলে আমার শ্বাশুড়ির অনুমতি নিতে হয়,ছোট থেকে বড় সব কাজ করতে গেলে শ্বাশুড়ির অনুমতি।এমনকি আমার বাবার বাড়িতে যেতেও আমার স্বামী আমার শ্বাশুড়ির থেকে অনুমতি নেয়!! ভাসুরের কারণে আমাকে পর্দা মেনে চলার চেষ্টা করি আল হামদুলিল্লাহ কিন্তু উস্তাদ সারাদিন হিজাব পড়ে রান্নাঘরে গরমের মধ্যে কাজ করা আমার জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ছে।

আমি বিয়ের আগে আমি এসব কিছু বুঝি নি।যৌথ পরিবারে আমার থাকতে এখন কষ্ট হয়,আমার স্বামীকে আলাদা থাকার কথা বললে সে বলে বিয়ের আগে আমাকে জানিয়েছে আমাকে যৌথ ফ্যামিলিতে থাকতে হবে।আবার আমার স্বামী বলে তাঁর সামর্থ্য নেই আমাকে আলাদাভাবে রাখার,এখন আমার করনীয় কি উস্তাদ?

আমাকে সাহায্য করুন,আমাকে নাসীহা করুন

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
        
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
,
★সুতরাং স্বামীর যৌথ পরিবারেও মহিলাদের পূর্ণ পর্দা করতে হবে। 
এক্ষেত্রে সবসময় বোরখা পড়া জরুরি নয়,প্রয়োজনীয় কাজ নিজ ঘরেই সাড়বে,গায়রে মাহরামদের সামনে যেতে হলে পূর্ণ শরীর চেহারা সহ যেকোনো কাপড়/পোশাক দিয়ে ঢেকে যেতে হবে।
শরীরের কোনো অংশ যেনো প্রকাশ না পায়,এদিকে পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।
গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা বলবেনা,প্রয়োজন বশত কথা বলতে হলে পর্দার আড়াল হলে কণ্ঠ নরম না করে কথা বলবে।    

আরো জানুনঃ 

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামীর যেহেতু আপনাকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকার সামর্থ নেই,সেক্ষেত্রে আপনাকে এভাবেই শশুর বাড়িতে সকলের সাথে থাকতে হবে।

একমাত্র আল্লাহকে রাজী আর খুশি করার জন্য শত কথা শোনার পরেও পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন,আল্লাহ আপনার সহায় হোন।
আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তাদ আমার স্বামীর সামর্থ নাই দেখে বড় বাসা ছেড়ে আমার দেবর কে নয়ে ছোট বাসায় থাকবে । কিন্তু আমি চাই স্বামঈর সাথেই থাকতে ।স্বামী আমকেবলেছে বিয়ের সমিয় আলাদা রাখবে ।এখন তার ভাইয়ের জন্য আমকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিবে । এখন আমার স্বামীর সাথে আমার আচরন কেমন হওয়া উচিৎ? আমি কি উনাকে আমাকে সাথে রাখার জন্য ঝামেলা করলে আমার গুনাহ হবে? 
by
উস্তাদ আমার স্বামীর সামর্থ নাই দেখে বড় বাসা ছেড়ে আমার দেবর কে নয়ে ছোট বাসায় থাকবে । কিন্তু আমি চাই স্বামঈর সাথেই থাকতে ।স্বামী আমকেবলেছে বিয়ের সমিয় আলাদা রাখবে ।এখন তার ভাইয়ের জন্য আমকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিবে । এখন আমার স্বামীর সাথে আমার আচরন কেমন হওয়া উচিৎ? আমি কি উনাকে আমাকে সাথে রাখার জন্য ঝামেলা করলে আমার গুনাহ হবে? 
...
...
..
by (678,880 points)
এক্ষেত্রে আপনার শরয়ী পর্দা মেইনটেইন করতে সমস্যা হলে আপনার গুনাহ হবেনা 

আপনি আপনার সাধ্য মোতাবেক আপনার স্বামীকে বুঝাবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...