আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ,

আমার কাবিন হয়েছে ৩বছর+ কিন্তু স্বামী ছাত্র হওয়ার কারনে এখনও ঘরে তুলতে পারেনি এদিকে আমার বয়স ২৪চলে, বাসা থেকে প্রচুর প্রেশার আসছে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার জন্য। উনি বলছে আরও ২বছর লাগবে পড়া শেষ করতে এমন অবস্থায় আরও অপেক্ষা করা আমার জন্য একদম দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে পরিবারের চাপের কারনে উনি আমার খরচ বহন করতে পারেন না।
আমার স্বামী বলছেন, উনার মা চান বউ যেনো চাকুরী করে যাতে স্বামীর ইনকামের সাথে তাল দিয়ে সংসারে উন্নতি করি, তারা চান স্বামীর ভালো আয় না হওয়া অব্দি বউও স্বামীকে সাহায্য করবে যেহেতু ছেলের ইনকাম কম মা বাবাকে দেখবে না বউকে দেখবে সেজন্য।এদিকে আমি পর্দা করি,মাহরাম মেইনটেইন করি, অনার্স পড়া মাঝপথে থেমে গেছে। এজন্য স্বামী শাশুড়ীকে বলে দিয়েছে চাকুরী করাবেনা এ নিয়ে প্রচুর ঝগড়াঝাটি করেছে মা ছেলে। আমি চাকুরী করতে চাইনা কারও..এখন স্বামীও আমতা আমতা করে আমাকে বলেছে চাকুরী করতে মায়ের কথাতে। প্রচুর ঝগড়া হয়েছে আমাদের মধ্যে কারন আমি ইসলামের পথে চলতে শুরু করেছি ইসলামে এরকম বিধান নেই মেয়েরা দরকার ছাড়া বাইরে যাবে। আমি স্বামীর ওপর থাকতে চাই, সংসার করতে চাই সাধারণ নারীর মতো...। যখন দীনের পথে ছিলাম না তখন উনাদেরকে বলেছিল চাকুরী করবো কিন্তু এখন করার ইচ্ছে নেই কিন্তু স্বামী বারবার আমাকে আগের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলে আগে তো চাকুরী করতে চাইতাম!
আমার ফ্যামিলি যদি এই কথা শুনে তারা অনেক কষ্ট পাবে...মেয়েরা বাইরে চাকুরী করবে বা কাজ করবে পছন্দ করেনা।

আমি এই দোটানায় পরে গেছি, একে তো বাসা থেকে যাওয়ার প্রেশার, উনার সময় লাগবে ২বছর তার ওপর বিয়ের পর কাজ বা চাকুরী...মাঝে আমার পর্দা, সংসার করা সব ভেস্তে যাবে।

প্লিজ বলবেন আমার কী করা উচিত...এখানে কী আমার ভূল নাকি তাদের?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। 
যেমন,
★ যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
★চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
★ কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
★ চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
★কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
★নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

বিস্তারিত  জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর উপর তো প্রথমে আপনার ভরনপোষণ আবশ্যক, যদি তার পরেও বেঁচে যায়,সেক্ষেত্রে তিনি চাইলে তার বাবা মাকে অতিরিক্ত হতে খরচ দিতে পারেন। আপনার ভরনপোষণ তার উপর আবশ্যকীয় দায়িত্ব। 
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ভরনপোষণ যদি আপনার স্বামী দিতে না পারে,সেক্ষেত্রে তার বিবাহ করাই উচিত হয়নি।
,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার প্রতি পরামর্শঃ
আপনার স্বামী যদি সত্যি সত্যিই নিজে আপনাকে চাকুরী করতে জোড় আদেশ দেন,সেক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্ত গুলো পূর্ণ ভাবে মেনে আপনি বৈধ যেকোনো চাকুরী করতে পারেন।

উপরোক্ত শর্ত সমূহ পূর্ণ ভাবে মানা যায়,এমন চাকুরী খুজতে পারেন।   
প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকা হতে পারেন,মেয়েদের ও ছোট ছেলেদের প্রাইভেট ইত্যাদি পড়াতে পারেন।

★তবে আপনার স্বামী যদি আপনাকে চাকুরী করতে জোড় আদেশ না দেন,এমনিতেই তার মায়ের চাপে বলে থাকে,তার নিজের আদেশ যদি এমনটি না হয়।
সেক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া চাকুরী না করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...