বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
5227 নং ফাতাওয়ায়ে আমরা বলেছি যে,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বা সাহাবায়ে কেরামগণ কি খতমে কুরআন বা খতমে বোখারী পড়েছেন?
উত্তর হল, না।
তাহলে কি এ বা এজাতীয় খতম বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত ?
এর উত্তর বুঝার পূর্বে এ সম্পর্কীয় একটি মূলনীতি আমাদের বুঝতে হবে। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-1286
এসব খতমের অবস্থান হল, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতালব্দ পথ্যের মত। অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ যেমন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বের করেছেন যে, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে ভাল হয়, ঠান্ডা লাগলে ওরাডিন ইত্যাদি ঔষধ খেলে ভাল হতে পারে,তেমনি বুযুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনেছেন যে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট খতমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফায়দা হয়ে থাকে। তাই তারা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে বিভিন্ন খতমের প্রমাণ পাওয়া যায়।এসবই অভিজ্ঞতালব্দ বিষয়। কোনটিই দ্বীনের বিষয় নয়। বা কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত বিষয় নয়। এসবকে কেউ সওয়াবের কাজও মনে করে না। বরং প্রয়োজন পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।যেমন ডাক্তারের সাজেশন অনুপাতে ঔষধ সেবন। তা’ই ডাক্তারের পরামর্শ অনুপাতে পথ্য সেবন যেমন হারাম ও বিদআত নয়, তেমনি কতিপয় দুনিয়াবী উদ্দেশ্য হাসিলের আশায় বুযুর্গদের অভিজ্ঞতালব্দ উপরোক্ত খতম পড়াও হারাম বা বিদআত নয়।হ্যাঁ, এসবকে সুন্নত মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত। কেননা দু'আয়ে ইউনুস হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলে ও সংখ্যা কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।নতুবা এমনিতে আমল করতে কোন সমস্যা নেই।
সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে,বিপদআপদ থেকে মুক্তি ও মাকসাদ হাসিল করতে উক্ত খতম কেউ যদি ঈমান ও ইয়াকিনের সাথে পড়ে তবে তার মাকসাদ পূর্ণ হতে পারে।তবে এক্ষেত্রে কোনো সময় বা সংখ্যা হাদীসে নির্ধারিত নেই।যে কোনো সময়ই পড়া যাবে।এবং যত ইচ্ছা পড়া যাবে।এক্ষেত্রে কোনো কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যাকে সুন্নাত মনে করা যাবে না।এটা বেদাআত হবে।কুরআন বা বোখারী কে সম্পূর্ণ পড়তে হবে ,এমনটা জরুরী মনে করা বিদ’আত।সম্পূর্ণ না পড়লে দু'আ কবুল হবে না এবং পড়লে দু'আ কবুল হবে, এরকম আকিদা-বিশ্বাস পরিত্যাগ করে যদি কেউ পূর্ববর্তী বুজুর্গানে কেরামদের তরিকাকে গ্রহণ করে তবে তা অবশ্য নিন্দনীয় হবে না।নির্দিষ্ট সংখ্যা সম্পূর্ণ কিতাব সম্পন্ন্ করে বিভিন্ন খতম পড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- 1145
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এবার আপনার প্রশ্নের জবাবে আসি,
(১)
কোনো মানুষ মারা গেলে কিছু লোক ভাড়া করে এনে মৃতের দাফনকালীন এবং কথিত কুলখানির দিন একাধিক লোক মিলে সম্পূর্ণ কুরআন খতম করাকে অবশ্যকীয় ধরে নিয়ে বেশ কদরের সাথে কুরআন খতম করা হয়।এটা সম্পূর্ণই বিদ'আত ও পরিত্যাজ্য। এরকম কোনো নিয়ম রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জামানায় ছিল না।টাকার বিনিময়ে ঈসালে সওয়াব করালে,সওয়াব উল্টো তাদের (দাতা ও গ্রহিতা) গোনাহ হবে।
(২)
আকিদা বিশুদ্ধ রেখে
নূতন গাড়ি, বাড়ি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি উদ্ধোধনের সময় কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করা বা করানো যেতে পারে।তবে বিশেষ কোনো নিয়মকে জরুরী মনে করা,যেমন পানিতে পড়ে তা ছিটিয়ে দেয়াকে জরুরী মনে করা, এসব বিদ'আত ও পরিত্যাজ্য আ'মল।বিশেষকরে খতম নিয়ে দালালি করা অত্যান্ত গর্হিত ও মন্দ কাজ।এত্থেকে আমাদের সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে।