আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
330 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাহতুল্লাহ।

বিভিন্ন উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ভাড়া ভিত্তিক কুরআন বা বুখারী খতমের বিধান এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রথম তিন যুগের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

১. কোনো মানুষ মারা গেলে কিছু লোক ভাড়া করে এনে মৃতের দাফনকালীন এবং কথিত কুলখানির দিন একাধিক লোক মিলে সম্পূর্ণ কুরআন খতম করা অবশ্যকীয় ধরে নিয়ে বেশ কদরের সাথে কুরআন খতম করা হয়।

২. নূতন গাড়ি, বাড়ি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি উদ্ধোধনের সময় কুরআনের কিছু অংশ অথবা সম্পূর্ণ কুরআন খতম করানো এবং দুআ করানো রেওয়াজে পরিণত হয়েছে; খতমকারী এক বা একাধিক লোক একটি পাত্রে কিছু পানি নিয়ে তাতে দম করে সে পানি যে বস্তুকে কেন্দ্র করে কুরআন তিলাওয়াত করা হয়েছে সেটার ওপর ছিটানোর তাগাদা দেওয়া হয়। কোনো লোক যদি সম্পদশালী হোন তাহলে তার ক্ষেত্রে বুখারী খতমের দাওয়াত পাওয়া নিজেদের অধিকার বিবেচনা করা হয়। কেনো কুরআন রেখে বুখারী খতম করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে জানানো হয় অধিক বরকতের জন্য; কারণ বুখারীতে দুআ, দরুদের সংখ্যা অধিক। কুরআন খতমে প্রতিজনকে যত টাকা দেওয়া হয় বুখারী খতমে সে টাকার তিন থেকে পাঁচ গুণ দেওয়া হয়। কিছু লোক কুরআন খতম করানোর দালালি নিয়ে থাকে; যদি দাওয়াতদাতার কাছ থেকে ২,৫০০ টাকা নেওয়া হয় তাহলে দালালসহ ১০ লোক সম্পূর্ণ কুরআন খতম করে বাকি নয়জনকে ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়।

মাস'সালাম,
মুহাম্মাদ হুসাইন কিবরিয়া,
কক্সবাজার সদর।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
5227 নং ফাতাওয়ায়ে আমরা বলেছি যে,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বা সাহাবায়ে কেরামগণ কি খতমে কুরআন  বা খতমে বোখারী পড়েছেন? 
উত্তর হল, না।
তাহলে কি এ বা এজাতীয় খতম বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত ?  
এর উত্তর বুঝার পূর্বে এ সম্পর্কীয় একটি মূলনীতি আমাদের বুঝতে হবে। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-1286

এসব খতমের অবস্থান হল, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতালব্দ পথ্যের মত। অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ যেমন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বের করেছেন যে, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে ভাল হয়, ঠান্ডা লাগলে ওরাডিন ইত্যাদি ঔষধ খেলে ভাল হতে পারে,তেমনি বুযুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনেছেন যে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট খতমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফায়দা হয়ে থাকে। তাই তারা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে বিভিন্ন খতমের প্রমাণ পাওয়া যায়।এসবই অভিজ্ঞতালব্দ বিষয়। কোনটিই দ্বীনের বিষয় নয়। বা কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত বিষয় নয়। এসবকে কেউ সওয়াবের কাজও মনে করে না। বরং প্রয়োজন পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।যেমন ডাক্তারের সাজেশন অনুপাতে ঔষধ সেবন। তা’ই ডাক্তারের পরামর্শ অনুপাতে পথ্য সেবন যেমন হারাম ও বিদআত নয়, তেমনি কতিপয় দুনিয়াবী উদ্দেশ্য হাসিলের আশায় বুযুর্গদের অভিজ্ঞতালব্দ উপরোক্ত খতম পড়াও হারাম বা বিদআত নয়।হ্যাঁ, এসবকে সুন্নত মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত। কেননা দু'আয়ে ইউনুস হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলে ও সংখ্যা কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।নতুবা এমনিতে আমল করতে কোন সমস্যা নেই।

সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে,বিপদআপদ থেকে মুক্তি ও মাকসাদ হাসিল করতে উক্ত খতম কেউ যদি ঈমান ও ইয়াকিনের সাথে পড়ে তবে তার মাকসাদ পূর্ণ হতে পারে।তবে এক্ষেত্রে কোনো সময় বা সংখ্যা হাদীসে নির্ধারিত নেই।যে কোনো সময়ই পড়া যাবে।এবং যত ইচ্ছা পড়া যাবে।এক্ষেত্রে কোনো কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যাকে সুন্নাত মনে করা যাবে না।এটা বেদাআত হবে।কুরআন বা বোখারী কে সম্পূর্ণ পড়তে হবে ,এমনটা জরুরী মনে করা বিদ’আত।সম্পূর্ণ না পড়লে দু'আ কবুল হবে না এবং পড়লে দু'আ কবুল হবে, এরকম আকিদা-বিশ্বাস পরিত্যাগ করে যদি কেউ পূর্ববর্তী বুজুর্গানে কেরামদের তরিকাকে গ্রহণ করে তবে তা অবশ্য নিন্দনীয় হবে না।নির্দিষ্ট সংখ্যা সম্পূর্ণ কিতাব সম্পন্ন্ করে বিভিন্ন খতম পড়া সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- 1145


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এবার আপনার প্রশ্নের জবাবে আসি,
(১)
কোনো মানুষ মারা গেলে কিছু লোক ভাড়া করে এনে মৃতের দাফনকালীন এবং কথিত কুলখানির দিন একাধিক লোক মিলে সম্পূর্ণ কুরআন খতম করাকে অবশ্যকীয় ধরে নিয়ে বেশ কদরের সাথে কুরআন খতম করা হয়।এটা সম্পূর্ণই বিদ'আত ও পরিত্যাজ্য। এরকম কোনো নিয়ম রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জামানায় ছিল না।টাকার বিনিময়ে ঈসালে সওয়াব করালে,সওয়াব উল্টো তাদের (দাতা ও গ্রহিতা) গোনাহ হবে।

(২)
আকিদা বিশুদ্ধ রেখে 
নূতন গাড়ি, বাড়ি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি উদ্ধোধনের সময় কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করা বা করানো যেতে পারে।তবে বিশেষ কোনো নিয়মকে জরুরী মনে করা,যেমন পানিতে পড়ে তা ছিটিয়ে দেয়াকে জরুরী মনে করা, এসব বিদ'আত ও পরিত্যাজ্য আ'মল।বিশেষকরে খতম নিয়ে দালালি করা অত্যান্ত গর্হিত ও মন্দ কাজ।এত্থেকে আমাদের সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...