بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
অভিশাপ দেওয়া সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أنَّ رَجُلًا
اِسْمُه عَبْدُ اللّٰهِ يُلَقَّبُ حِمَارًا كَانَ يُضْحِكُ النَّبِىَّ ﷺ وَكَانَ
النَّبِىُّ ﷺ قَدْ جَلَدَه فِى الشَّرَابِ فَأُتِىَ بِهِ يَوْمًا فَأَمَرَ بِه
فَجُلِدَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ : اَللّٰهُمَّ الْعَنْهُ مَا أَكْثَرَ مَا
يُؤْتٰى بِه فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ : «لَا تَلْعَنُوْهُ فَوَ اللهِ مَا عَلِمْتُ
أَنَّه يُحِبُّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه». رَوَاهُ البُخَارِىُّ
‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির
নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ,
কিন্তু তাকে ‘হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে (অবোধের ন্যায় কথাবার্তা বলে)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদ্যপায়ীর জন্য নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে চাবুক
মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ! তার ওপর তোমার অভিসম্পাত
বর্ষিত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হলো? এমতাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও
তাঁর রসূলকে ভালোবাসে। (সহীহ : বুখারী ৬৭৮০,মিশকাত ৩৬২৫)
কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে অভিশাপ দেয়া সর্বাবস্থায় হারাম।
এমনকি নির্দিষ্ট কোনো অমুসলিমকেও লানত কিংবা অভিশাপ করা যাবে না— যতক্ষণ না কুফরি অবস্থায় তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হবে।
হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,
‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান
নিরাপদ থাকে।’ (তিরমিজি,
হাদিস : ২৬২৭; আবু
দাউদ, হাদিস
: ২৪৮১)
অপর মুসলমান কষ্ট পেতে পারে— এমন কাজ করা কোনো মুসলমানের জন্য শোভা পায় না। কখনো অজান্তে
কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেললে,
বোঝার সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে মাফ চেয়ে নেওয়া উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। তেমনিভাবে
কারো কাছ থেকে কোনো জুলুমের শিকার হলেও তাকে ক্ষমা করে দেওয়াই মহৎ চরিত্রের পরিচায়ক।
হাদিসে এসেছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, যে তোমার সঙ্গে
সম্পর্ক ছিন্ন করে,
তুমি তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করো, যে তোমাকে বঞ্চিত করে, তুমি তাকে তুষ্ট
করো, যে
তোমার প্রতি জুলুম করে,
তুমি তার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার (ক্ষমা) করো। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৭৩৩৪)
কাউকে অভিশাপ দেওয়া কোনো মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.)
বলেছেন, ‘মুমিন
কখনো অভিসম্পাতকারী হয় না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৮৮)
রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর আল্লাহর লানত, তার গজব ও জাহান্নামের
অভিশাপ দেবে না।’ (তিরমিজি,
হাদিস : ১৯৮৬)
অভিসম্পাতকারী আখেরাতেও মান-মর্যাদা পাবে না। রাসুল (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন
অভিশাপকারীরা সুপারিশ করতে পারবে না এবং সাক্ষ্যপ্রদানও করতে পারবে না। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৯৮)
এ সব হাদিস দ্বারা এ কথা সহজেই অনুমেয় হয় যে- অন্যায়ভাবে কাউকে
অভিশাপ দেওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ। প্রিয়নবী (সা.) অভিশাপ ও অভিশাপকারীকে পছন্দ করেননি।
রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন কোনো বান্দা কোনো ব্যক্তিকে অভিশাপ
দেয়, তখন
অভিশাপ আকাশে চলে যায়,
আকাশের দরজাগুলো তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়, অতঃপর তা জমিনের দিকে নেমে আসে। তখন জমিনের দরজাগুলোও তার থেকে বন্ধ করে
দেয়া হয়, অতপর
তা ডানে বাঁয়ে ঘুরতে থাকে,
যখন কোনো উপায় না পায়, তখন যাকে অভিসম্পাত
করা হয়েছে, সে
যদি এর যোগ্য হয়, তাহলে
তার প্রতি পতিত হয়। অন্যথায় অভিশাপকারীর দিকেই ধাবিত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৭)
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার ভাইয়ের গুনাহ মাফের দোয়া চাইবেন, তার আখলাক ও ব্যবহার সুন্দর ও মার্জিত করার জন্য দোয়া করবেন, অভিশাপের বিপরিত
তার জন্য ভালো কিছু আল্লাহর কাছে চাইবেন এবং তওবা ইস্তেগফার পাঠ করবেন। ইনশাআল্লাহ
ক্ষতি হবেনা।