জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উল্লেখিত ব্যাক্তি ইসলামি বিধান জিহাদ কে বিকৃত ভাবে উপাস্থাপন করেছে।
,
তিনি এ থেকে বদর যুদ্ধ উদ্দেশ্য নিয়েছেন,
নিচের আলোচনা থেকে আশা করি বিষয়টি স্পষ্ট হবে, ইনশাআল্লাহ।
,
বদর যুদ্ধের কারনঃ
মুসলমানদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অর্থ জোগান ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ক্রয় করার উদ্দেশ্যে আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মক্কার একটি বিশাল বাণিজ্য কাফেলা শামে গিয়েছিল। মক্কার প্রতিটি ঘর থেকে প্রত্যেকের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিয়ে গঠন করা হয়েছিল ৪০ জন সশস্ত্র অশ্বারোহী যোদ্ধার পাহারায় এক হাজার মালবাহী উটের একটি বাণিজ্যিক বহর।
,
বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল মুসলমানরাও। তাই যখন তারা শাম থেকে ব্যবসা শেষে অস্ত্র নিয়ে ঘরে ফিরছিল, তখন তাদের ওপর হামলা করার সিদ্ধান্ত হলো। কেহ কেহ এটাও বলেছেন যে মুসলমানদের আত্মরক্ষার্থে হামলা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না।
,
তখন তাদের কিছু সাথীর পথ আটক দেওয়া হয়েছিলো,
বিষয়টি পিছন থেকে আবু সুফিয়ান টের পেয়ে দ্রুত সাহায্যের জন্য মক্কায় খবর পাঠায়। তবে খবরটি ছিল, মুসলমানরা আবু সুফিয়ানের কাফেলার ওপর হামলা করেছে। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ আবু জাহেলের নেতৃত্বে এক হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার এক বিশাল বাহিনী মদিনা আক্রমণের জন্য বের হয়। অথচ মুসলমানরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে আসেনি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু আবু সুফিয়ানকে আটকানো।
,
এই যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে যেসব বিষয় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছিল তা ছিল নাখলার খণ্ডযুদ্ধ, কাফেরদের রণপ্রস্তুতি, আবু সুফিয়ানের অপপ্রচার, যুদ্ধপ্রস্তুতির জন্য ওহি লাভ, মক্কাবাসীর ক্ষোভ ইত্যাদি। আর পরোক্ষ কারণ হিসেবে দেখা হয়, মদিনা শরিফে সাফল্যজনকভাবে ইসলাম সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কুরাইশদের হিংসা, আবদুল্লাহ বিন উবাই ও ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, কুরাইশদের যুদ্ধের হুমকি, তাদের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা, কাফেরদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা, ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তির ধ্বংসসাধন এবং রাসুল (সা.)-কে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার কাফেরদের অশুভ বাসনা।
,
তারপর কাফেররা পুরো দল মক্কা থেকে এসে বদর নামক এলাকায় মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করে।
,
এ যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হয়,যুদ্ধের নিয়ম হিসেবে পরাজিত অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়,পরবর্তীতে মুক্তিপণ নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
,
★জিহাদ দুই প্রকার আত্মরক্ষামূলক জিহাদ।
আর আক্রমানাত্মক জিহাদ।
,
যেসব রাষ্ট্রে কাফেরদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ চলছে।
তাদের উপর আক্রমানাত্মক জিহাদ বেশ কিছু শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ।
,
কিন্তু যেসব রাষ্ট্রে যুদ্ধ চলছে না। বরং বিধর্মী এবং মুসলিমরা একত্র বসবাস করছে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে যেমন বাংলাদেশ এর মত যেসব রাষ্ট্রে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চলছে না, এসব এলাকা ও রাষ্ট্রে আত্মঘাতি হামলা কিছুতেই বৈধ নয়।
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ [٩:١١١
আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য। {সূরা তওবা-১১১}
,
দারুল হরবের বাসিন্দারা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, যুদ্ধে লিপ্ত, তাই তাদের জান-মালের ক্ষতি সাধন করা মৌলিকভাবে জায়েজ।
,