আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

১) আহকামে যিন্দেগি বইয়ের ১৭৮ পৃষ্ঠার (চতুর্থ সংস্করন) এই( https://drive.google.com/file/d/1uqAFk3dKdEElDVhDsxKMRxZ-V9z7UA-N/view?usp=sharing ) কথার সাথে আমি একমত হতে পারছিনা । বইয়ে কি সঠিক লেখা আছে ?

২) যারা জিহাদ করছে বলে দাবি করে তাদের কর্ম পন্থা কি ইসলাম সমর্থিত ? অনেকে তাদের উগ্র বলে , আসলে সঠিক কি ?

৩) কর্ম পন্থা সঠিক হলে/না হলে যে সকল যায়গায় তালেবান আল কায়দার বিরুদ্ধে মুসলিম কোন সামরিক/বেসামরিক বাহিনি যুদ্ধে লিপ্ত হয় তাহলে কি তারা মুরতাদ হয়ে যাবে ? ( যেমন বাংলাদেশ ,পাকিস্তান ,তুরস্ক,... দেশ থেকে শান্তি রক্ষা বাহিনি পাঠানো হয় যারা তাদের সাথে লড়ে/ ওই দেশের স্থানীয় সামরিক/বেসামরিক বাহিনি )

৪) ৭২ দল যে জাহান্নামে যাবে তারা কি অনন্ত কাল থাকবে নাকি এক সময় জান্নাতে যাবে ?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত মাসয়ালা ছহীহ আছে।
এটি হানাফি মাযহাব মোতাবেক ফতোয়া।
,
বিস্তারিতঃ 
এক সূরা পড়ার পর মাঝখানে এক সূরা বাদ দিয়ে পরের সূরা পড়া মাকরূহ্ তবে দুই সূরা বাদ দিয়ে পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

যেমন, প্রথম রাকাতে সূরা ফীল পড়ার পর, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সূরা মা’ঊন পড়া মাকরূহ। কিন্তু সূরা কাউসার বা কাফিরূন বা এর পরের সূরাগুলো পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।
,
ইচ্ছপূর্বক ভাবে মাঝের ছোট এক সুরা বাদ দেওয়া মাকরুহ।
তবে নামাজ হয়ে যাবে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
ويكره فصله بسورة بين سورتين قرأهما فى ركعتين لما فيه من شبهة التفضيل والهجر، (مراقى الفلاح على هامش الطحطاوى، فصل فى المكروهات-287، الدر المختار مع الشامى- 2/269)
সারমর্মঃ
দুই সুরার মাঝে এক সুরা দ্বারা ফাসেলাহ করা, যে দুই সুরা দুই রাকাতে পড়েছে,এট মাকরুহ।

وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،
وقال ابن عابدين الشامى رح: (قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)
সারমর্মঃ
 ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট সুরা দ্বারা ফাসেলাহ করা মাকরুহ।
,
অন্যা কিছু মাজহাব ও কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে একাজ মাকরুহ নয়।
সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।        
(০২)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,

لاَّ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُوْلِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُـلاًّ وَعَدَ اللّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا

গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।(সূরা নিসা-৯৫)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنفِرُواْ كَآفَّةً فَلَوْلاَ نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآئِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُواْ فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُواْ قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُواْ إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ

আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্বজাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

জাবির ইবন সামুরা (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন,

 "لن يبرح هذا الدين قائما يقاتل عليه عصابة من المسلمين حتى تقوم الساعة" 

 এ দ্বীন (ইসলাম) সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানদের একটি দল এর পক্ষে (قتال-ক্বিতাল) লড়তে থাকবে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত। (সহিহ মুসলিম ৪৮৪৭, মান: সহিহ)

আরো জানুনঃ 
,
★তাদের কর্মকাণ্ড শরীয়তের খেলাফ না হলে তাদেরকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করা যাবেনা।
তারা মহান আল্লাহর বিধান পালন করছেন।
,
(০৩)
যদি তারা জেনে বুঝে ইসলাম প্রতিষ্ঠার এই জিহাদকে ঘৃণা করে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহে যারা মুজাহিদ হিসেবে আছেন,তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন,তাহলে তো তারা মুরতাদ।
,
আর যদি চাপে পড়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন,মনের ভিতরে জিহাদ নিয়ে ঘৃণা না হয়,তাহলে তারা মুরতাদ হবেননা,তবে তাদের এই কাজ হারাম হবে,তাদের বেতন হারাম হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০৪)
তারা যেহেতু মুসলিম,ঈমান আছে,তাই তারা জাহান্নামে তাদের শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহর অনুগ্রহে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবেননা।
শুধু মাত্র কাফেররাই চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...