আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
3,091 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম,আমি ১ বছর পূর্বে বিয়ে করেছিলাম বিয়ের সময় আমার কাবিনের টাকা পরিশোধ করা হয় নাই আর কাবিন অনেক টাকা চায় বলে আমি বিয়ে করতে রাজি ছিলাম না এমতবস্থায় মেয়ের এক গার্জিয়ান বলেছিল যে এই টাকা তো মাফ করে দেওয়া হবে এতে সমস্যা কি?

বাসর ঘরে স্ত্রীর কাছে মাফ চাওয়া হলে সে মাফ করে দেয় পরবর্তীতে তাকে বার বার আমি জিজ্ঞেস করি তুমাকে কি তুমার দেনমোহর এর টাকা পরিশোধ করতে হবে নাকি মন থেকে ছেড়ে দিয়েছ সে বলছে মন থেকে ছেড়ে দিয়েছি।

তার পরে যখন আমি মালেশিয়াতে চলে আসি তার কিছুদিন পরে ঝগড়া-বিবাদ বাড়তে থাকে তখন রাগ উঠলেই তাকে আমি বলতাম যা তুই তোর পথ দেখ আমি আমার পথ দেখবো সেও আমাকে রাগের মাথায় বলতো ওকে আপনি আপনার পথ দেখেন আমি আমার পথ দেখি,একদিন আরো বেশি রাগের মাথায় ১ তালাক দেওয়ার নিয়তে ১ তালাক বলেই দেই তবে কথাটা তার শুনার জন্য মুবাইল এ কথা সুস্পষ্টভাবে বোঝার জন্য তাকে তিন বার করে বলি যে আপনাকে ১ তালাক দিলাম এর পরে যদি আপনি ভালো হোন তাহলে আপনার সাথে সংসার করবো আর তা না হলে পরের মাসে আরেক তালাক দিবো তার পরে আর তালাক দেই নি কথা ফিরিয়ে নিয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করি,তার পরে আবার ঝগড়ার সময় অবার বলি তোকে ছেড়ে দিলাম তোর সাথে থাকবো না আমার মায়ের কাছে অবধি বলি যে ওরে নিয়ে আমি খাবো না আমার বাবার কাছে আমার দাদী আমার বোন সবার কাছেই বলি ওরে নিয়ে আমি খাবো না ও আমার কথা শুনে না পরে তারা আমাকে বুজায় তার পরে আর শুধু ঝগড়া লাগলে বলতাম আপনার যা মনে চায় আপনি করেন গা,তার পরে আমার যখন বুজে আসে ব্যাপার গুলো এখন আমার ভয় হচ্ছে যে তালাক হলো কিনা?

আর যদি তালাক হয়ে যায় তাহলে তাকে ফেরত আনার উপায় আছে কি বা করনিয় কি?

আর কোনো উপায় যদি না থাকে তাহলে তার দেনমোহর এর টাকা কি দিয়ে তাকে বিদায় দিতে হবে?
by
মাসয়ালা জানা নেই এ-ই।সভ কথা বলে দিছে,,  
পরে মাসয়ালা জানলো তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম এক তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে। 

হাদীস শরীফে এসেছে   

عن ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: أبغض الحلال إلی اللّٰہ عزوجل الطلاق۔ (سنن أبي داؤد ۱؍۳۰۳، المستدرک للحاکم ۲؍۲۱۸ رقم: ۲۸۰۹، السنن الکبریٰ ۷؍۳۱۶)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল হলো তালাক প্রদান করা।

★প্রশ্নের শেষ দিকে উল্লেখ আছে যে,
 "" ঝগড়ার সময় আবার বলি তোকে ছেড়ে দিলাম তোর সাথে থাকবো না""

এটা বলার দ্বারা এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে গেছে।

'তোমাকে ছেড়ে দিলাম' ‘তোমাকে মুক্ত করে দিলাম’ বা ‘স্বাধীন করে দিলাম’ শব্দগুলো প্রচলনে সারীহ বা স্পষ্ট তালাকের স্থলে ব্যবহার হয়ে থাকে। 
আর সারীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রয়োজন হয় না। বরং যদি কেউ স্ত্রীকে কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেও এজাতীয় কথা বলে তাহলেও এর দ্বারা তালাক হয়ে যায়। (জামিউল ফাতাওয়া ১০/১২০ কিতাবুন নাওয়াযিল ৯/২৯৩, ২৯৬, ২৯৯, ৩০০)
,

★প্রশ্নের মাঝ দিকে উল্লেখ রয়েছে,আপনি মোবাইলে বলেছেন যে,

""আপনাকে ১ তালাক দিলাম এর পরে যদি আপনি ভালো হোন তাহলে আপনার সাথে সংসার করবো আর তা না হলে পরের মাসে আরেক তালাক দিবো তার পরে আর তালাক দেই নি কথা ফিরিয়ে নিয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করি""

এটার দ্বারা এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে গেছে।

★প্রশ্নের  শুরুতে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি তাকে বলেছেন,

""তখন রাগ উঠলেই তাকে আমি বলতাম যা তুই তোর পথ দেখ আমি আমার পথ দেখবো""
এই শব্দটি কেনায়া শব্দ।

كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك 

তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫
,
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না।কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১
,
সুতরাং এই শব্দ আপনি যেহেতু মাঝে মাঝেই বলেছেন,তাই এই শব্দ বলার সময় আপনি কোনো সময় যদি বিবাহ বিচ্ছেদ, তালাক এর নিয়ত করেন,তাহলে ১+১+১=৩ তালাক পতিত হয়ে গেছে।

উক্ত স্ত্রী আপনার জন্য একেবারে হারাম হয়ে গেছে। 
,
মোহরানা যেহেতু সে খুশি মনেই মাফ করে দিয়েছিলো,তাই শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে সে আর মোহরানা পাবেনা।
,
★আর যদি ""তুই তোর পথ দেখ আমি আমার পথ দেখবো""

এটা বলার সময় আপনি কোনোদিন বিবাহ বিচ্ছেদ,তালাকের নিয়ত না করে থাকেন,তাহলে শুধু ২ তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। 
,
আপনি যদি উক্ত স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে নিতে চান,তাহলে ইদ্দত (৩ হায়েজ) অতিক্রম করার আগেই ফিরে নিতে চাইলে,তাকে ফিরিয়ে নিলাম বললেই সে আবার আপনার স্ত্রী হয়ে যাবে।
,
আর ইদ্দত যদি অতিক্রম হয়ে যায়,তাহলে নতুন করে বিবাহ পড়ে নিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (19 points)
হুজুর,আমি আমার স্ত্রীকে শুধু একবার তালাকের নিয়তে তালাক দিয়েছি যেটা সরাসরি তালাক শব্দ উচ্চারণ করে এর বাইরে যে সব কথা বলেছি তার সব গুলো ছিলো হুমকি ও ভয় দেখানোর জন্য সে যে অপরাধ গুলো করেছিলো সেগুলো যেনো আর না করে সেই জন্য ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য করে হুমকি সরূপ কথা গুলো বলেছি,এর পরে সে অবার যখন মাফ চাইতো তখন আবার ভালো ভাবে কথা বলা শুরু করতাম,আর আল্লাহর কাছে তওবা করে আল্লাহ কে বলতাম আমাদের মাঝে মিল মহাবত বাড়িয়ে দাও,আমাদের ভালোবাসা বাড়িয়ে দাও,এক সাথে মিলে মিশে থাকার তৌফিক দান করো।
আর তাকে তালাকের কথা উঠিয়ে নিলাম এটাও বলছি তাহলে কি এখন আবার বিয়ে পড়ানোর দরকার আছে?
আর আমি কিন্তু এখনো বিদেশেই আছি যা হইছে সব শুধু মুবাইল ফোনের মধ্যে।

by (19 points)
তোকে ছেড়ে দিলাম তোর সাথে থাকবো না এই কথাটা অনেক বার ঝগড়ার সময় বলা হয়েছে সেই ক্ষেত্রে কি তাহলে যতবার বলেছি ততবার তালাক হয়ে গেছে???
তবে এই কথা গুলো কিন্তু তালাক এর নিয়তে বলা হয় নাই।
আর এই কথা বললে যদি তালাক হয়ে যায় তাহলে তো দেখা যায় তিন তালাকের জায়গাতে ৩৩ তালাক হয়ে গেছে কারণ আমি তো জাস্ট উদাহরণ স্বরূপ আপনাকে বলেছিলাম তবে এই কথাটা তাকে আমি প্রায় প্রায়  ঝগড়া লাগলে বলতাম,সমস্যা টা হলো এই জায়গাতে আমি জানতাম না যে এই কথার দ্বারা তালাক হয়ে যাবে,আর আমি নয় শুধু বাংলাদেশের ৯০% সংসারে ঝগড়ার সময় এই কথা গুলো ব্যবহার করে থাকে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...