আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
154 views
in সালাত(Prayer) by (62 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমার জীবনে অনেক সমস্যার কারনে আমার খুব আগ্রহ থাকে তাহাজ্জুদ পড়ার। এখন তাহাজ্জুদ পড়তে গেলেই ফজরে আর উঠতে পারিনা। কিন্তু আমার তাহাজ্জুদে উঠতে খুবই ভাল লাগে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ফজর মিস হয়ে যায়। বাচ্চাটা আগে ঘুমায় না তাই আমারো ঘুমাতে দেরি হয়। এখন ফজর কাযা হচ্ছে এটা তো বিরাট গুনাহ হচ্ছে। আমি বহুদিন বহুবার আল্লাহকে বলেছি আল্লাহ যেন ফজরে উঠায়ে দেন। ইভেন যেদিন তাহাজ্জুদে উঠেছি সেদিন তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছি আল্লাহ যেন ফজরে উঠায়ে দেন। তারপরেও ফলাফল শুন্য। আল্লাহর কাছে তাহাজ্জুদে এতবার সাহায্য চাইলাম তাও আল্লাহ আমাকে ফজরে ওঠালেন না,  এটা কি আমার গুনাহের জন্য?
কিভাবে আমি তাহাজ্জুদ ও ফজরের মধ্যে মেলবন্ধন করে দুই সময়েই জাগ্রত হতে পারি?  উল্লেখ্য যে এশার পরপরই ঘুমানো যায় না,  বাচ্চা কোনভাবেই ১২ টার আগে শুবেইনা। অনেক চেষ্টা করে দেখেছি

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

তাহাজ্জুদের পূর্বে ঘুমানো উত্তম হলেও তাহাজ্জুদের পূর্বে ঘুমানো জরুরী নয়। এবং তাহাজ্জুদের পরে ঘুমানোও জরুরী নয় বরং উত্তম। (আহসানুল ফাতাওয়া ৩/৪৯৩)

কেননা আল্লাহ পাক দিনকে বানিয়েছেন কাজ করার জন্য এবং রাত্রকে বানিয়েছেন বিশ্রাম গ্রহণের জন্য। তাই রাত্রে আমাদেরকে ঘুমাতে হবে এবং শেষরাত্রে ফজরের ওয়াক্ত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো এক মুহুর্তে ২-১২ রা'কাত নামায পড়তে হবে এবং পড়াটা সুন্নাত।

পবিত্র কুরআনে মুত্তাকীদের জন্য জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍ.

সেদিন নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবণবিশিষ্ট জান্নাতে। -সূরা যারিয়াত (৫১) : ১৫

সাথে তাদের কিছু গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণও এসেছে। তন্মধ্যে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল-

وَ بِالْاَسْحَارِ هُمْ یَسْتَغْفِرُوْنَ.

রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত। -সূরা যারিয়াত (৫১): ১৮

ইবাদুর রহমান-রহমানের বান্দাদের কতিপয় বৈশিষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে কুরআনে কারীমের সূরা ফুরকানে। সেখানেও উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট্যটি বিবৃত হয়েছে-

وَ الَّذِیْنَ یَبِیْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّ قِیَامًا.

আর তাঁরা রাত অতিবাহিত করে তাঁদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজদারত হয়ে এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। -সূরা ফুরকান (২৫) : ৬৪

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

يَنْزِلُ رَبّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلّ لَيْلَةٍ إِلَى السّمَاءِ الدّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي، فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ.

আমাদের রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছো, দুআ করবে আমি তার দুআ কবুল করব। কে আছো, আমার কাছে (তার প্রয়োজন) চাইবে আমি তাকে দান করব। কে আছো, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৫৮

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি চেষ্টা করবেন তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার কিছু সময় (আনুমানিক ৩০মিনিট) পূর্বে ঘুম থেকে জাগ্রত হতে , যেন তাহাজ্জুদ নামাজ ও দুআ শেষ করার পরই ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়। ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পরেই ফজরের নামাজ আদায় করে নিবেন ইনশাআল্লাহ। তাহলে আপনি ফজর ও তাহাজ্জুদ উভয়টিই আদায় করতে পারবেন ইনশআল্লাহ। উল্লেখ্য যে, তাহাজ্জুদের কারণে কোন ভাবেই ফজর কাযা করা যাবে না। আপনার বাচ্চাকে রাত্রি বেলায় দ্রুত ঘুমানোর চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে চিকৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। কারণ, একজন সাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির জন্য বিনা ওজরে রাত ১২টার পর ঘুমানো কোন ভাবেই উচিত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 276 views
0 votes
1 answer 201 views
...