আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
304 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (48 points)
অনেক সময় দেখা যায় ফজরের সালাত শুরু হয়ে গিয়েছে তাও মানুষ  সুন্নত আদায় করে তারপর ফজরের সালাতে অংশ গ্রহণ করছে।

কিন্তু আল্লাহর রাসুল সা বলেছেন তোমার ঘর থেকে সুন্নত নফল পরে আসো।

 দেখা যায় মানুষ  তারাহুরা করে এসে সুন্নত ধরে,  তার পর ফজর আদায় করে।

এখন তো বেশির ভাগ মানুষ  মাসজিদে সুন্নত থেকে নফল সব নামাজ আদায় জরে।যা স্পষ্ট হাদিস বিরুদ্ধী


আবার অনেক সময় দেখা যায় মানুষ তারা হুরা করে আশার কারনে নামাজে খুশুখুজু থাকে না
এমন কি কুরআন তেলোয়াত শুনা ওয়াজিব,  কিন্তু ওয়াজিব তরক করে সুন্নত আদায় করছে।

কিছু আলেমদের থেকে শুনা যায় যেহেতু ফজরের আগে সুন্নত এর গুরুত্ব অনেক সেই সাথে মুয়াকাদ্বা  তাই আদায় করে নাও।

আমি এমনো শুনেছি কেউ যদি আশা রাখে যে সে ফজর এর শেষ বৈঠক পাবে এমন আশা রাখে তাও যেন সে সুন্নত আদায় করে নেয়।


আমাকে জানাবেন এই ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?  আর কেন আজ কাল মিমবার থেকে এমন কথা আসে যেন ঘর থেকে মাসজিদে  ফরজ ব্যতিত অন্য নামাজ গুলো পড়তে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে?

1 Answer

0 votes
by (707,840 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(মাওলানা আব্দুর রহমান এর একটি গবেষণা থেকে সংগৃহিত)
কখনো যদি এমন হয় যে, ইকামত শুরু হয়ে গেছে বা নামায শুরু হয়ে গেছে, তাহলে ফজরের সুন্নত ছাড়া অন্য সুন্নত হলে আর সুন্নতের নিয়ত বাঁধবে না; বরং জামাতে শরীক হয়ে যাওয়া জরুরি।

আর যদি ফজরের সুন্নত হয় এবং এ কথা মনে হয় যে, তা পড়ে জামাতের অন্তত এক রাকাত পাওয়া যাবে, তাহলে মসজিদের বাইরে তো তা নিঃসন্দেহে পড়া জায়েয; বরং পড়ে নেওয়াই উত্তম। এমনভিাবে মসজিদের ভেতরে জামাতের কাতার থেকে দূরে বারান্দায় বা মসজিদের এক কোণায় অথবা খুঁটির আড়ালে পড়াও জায়েয আছে। কিন্তু জামাতের কাতারে বা তার নিকটে পড়া মাকরূহে তাহরিমী।

সুন্নত নামাযের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত। হাদীসে এর প্রভূত ফযীলত বর্ণিত হয়েছে এবং এর প্রতি বিশেষ তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যা অন্যান্য সুন্নতের ক্ষেত্রে হয়নি। এখানে ফজরের সুন্নত সম্বন্ধে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করছি।

(ক) আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

ركعتا الفجر خير من الدنيا وما فيها.

ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৫

(খ) তিনি আরো বর্ণনা করেছেন-

لم يكن النبي صلى الله عليه وسلم على شيء من النوافل أشد منه تعاهدا على ركعتي الفجر.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) নামাযে এত গুরুত্ব দিতেন যা অন্য কোনো নফল (বা সুন্নত) নামাযে দিতেন না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৬৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৪

(গ) তিনি আরো বর্ণনা করেছেন-

صلى النبي صلى الله عليه وسلم العشاء، ثم صلى ثماني ركعات، وركعتين جالسا، وركعتين بين النداءين، ولم يكن يدعهما أبدا.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার নামায পড়লেন। তারপর আট রাকাত নামায পড়লেন। তারপর বসে দুই রাকাত। তারপর আযান ও ইকামতের মধ্যে দুই রাকাত। এই দুই রাকাত তিনি কখনো বাদ দিতেন না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৫৯

(ঘ) আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

لا تدعوهما، وإن طردتكم الخيل.

 তোমরা এই দুই রাকাত কখনো ত্যাগ করো না, শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া করলেও। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১২৫৮

(ঙ) আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি। (এরপর তিনি পাঁচটি বিষয় বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে)-

...وركعتا الفجر حافظوا عليهما، فإنهما من الفضائل.

তোমরা ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত)-এর ব্যাপারে পুরোপুরি যতœবান হও। কারণ তা ফযীলতপূর্ণ বিষয়সমূহের অন্তর্ভুক্ত। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৫৫৪৪

উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে স্পষ্ট যে, ফজরের দু’রাকাত সুন্নত অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ এবং পারতপক্ষে তা ত্যাগ না করা উচিত।

এ কারণে বহু সংখ্যক সাহাবী-তাবেয়ী এমন ছিলেন, যারা কখনো যদি মসজিদে এসে দেখতেন যে, ফজরের ইকামত বা জামাত শুরু হয়ে গেছে, তাহলে মসজিদের ভেতরে জামাতের কাতার থেকে দূরে বারান্দায় বা মসজিদের এক প্রান্তে কিংবা খুঁটির আড়ালে ফজরের দু’রাকাত সুন্নত পড়ে নিতেন। তারপর জামাতে শরীক হতেন। আর কিছুসংখ্যক সাহাবী-তাবেয়ী মসজিদের ভেতরে তা পড়তেন না। তবে মসজিদের বাইরে ঘরে বা পথে অথবা মসজিদের দরজায় পড়তেন। তারপর ইমামের সাথে শরীক হতেন। এখানে তাঁদের কিছু আমল ও ফতোয়া উল্লেখ করা হল।

১. আবু মূসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, (কূফার গভর্নর) সায়ীদ ইবনে আস তাঁকে এবং হুযায়ফা ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-কে ফজরের নামাযের আগে ডাকলেন। তাঁরা (কাজ শেষে) তার কাছ থেকে বিদায় নিলেন। ইতিমধ্যে মসজিদে ফজরের নামাযের ইকামত শুরু হয়ে গেছে। ইবনে মাসউদ রা. মসজিদের একটি খুঁটির আড়ালে ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) পড়লেন। তারপর জামাতে শরীক হলেন। -শরহু মাআনিল আসার ১/৬১৯

حدثنا سليمان بن شعيب، قال: ثنا عبد الرحمن بن زياد، قال: ثنا زهير بن معاوية، عن أبي إسحاق، قال: حدثني عبد الله بن أبي موسى، عن أبيه، حين دعاهم سعيد بن العاص، دعا أبا موسى، وحذيفة، وعبد الله بن مسعود رضي الله عنهم، قبل أن يصلي الغداة، ثم خرجوا من عنده وقد أقيمت الصلاة، فجلس عبد الله إلى أسطوانة من المسجد، فصلى الركعتين، ثم دخل في الصلاة.

এ ঘটনাটি আবু ইসহাক সাবেয়ী থেকে কিছু ভিন্নতার সাথে মুতাররিফ ইবনে তরীফ ও সুফিয়ান সাওরী রাহ.ও বর্ণনা করেছেন। মুতাররিফের বর্ণনায় এ কথাও আছে যে, আবু মূসা আশয়ারী রা. জামাতে শরীক হয়ে গেলেন। -দ্রষ্টব্য : মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৪০২১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৬৪৭৬

বদরুদ্দীন আইনী রাহ. (৮৫৫হি.) বলেন, فأخرجه من ثلاث طرق صحاح  ইমাম তহাবী রাহ. এটি তিনটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন। -নুখাবুল আফকার ৩/৬৮২


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 255 views
0 votes
1 answer 69 views
...