আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার এক জন পরিচিত মানুষ জানতে চাচ্ছে হোমিওপ্যাথি হারাম নাকি হালাল। তিনি এ বিষয় অনেক খুঁজেছেন। কিন্তু এর অনেক মতামত থাকায় তিনি ঠিক বুঝতে পারছেন না এটি হারাম নাকি হালাল। ব্যপারটি আমার কাছেও পরিষ্কার না। তাই আপনাদের সহায়তা কামনা করছি।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জায়েজ রয়েছে। এখানে একটি বিষয় রয়েছে। সেটি হলো, হোমিওপ্যাথি ওষুধের মধ্যে অ্যালকোহল মাত্রা আছে। হোমিওপ্যথিতে ব্যবহৃত অ্যালকোহল সাধারণত মাদক হয় না, অনেক সময় বিষাক্ত হয়, যা পান করলে মাতাল না হলেও মৃত্যু হতে পারে। এ ধরনের অ্যালকোহল মিশ্রিত ওষুধ ব্যবহার বা অ্যালকোহল মিশ্রিত ওষুধ নেশা না আসা পর্যন্ত পান করা বৈধ। ফতোয়ার কিতাবগুলোতে এসেছে,

والمحرم منها أربعة ) أنواع الأول ( الخمر وهي النيء من ماء العنب إذا غلى واشتد وقذف بالزبد وحرم قليلها وكثيرها ) بالإجماع ( و ) الثاني ( الطلاء وهو العصير يطبخ حتى يذهب أقل من ثلثيه  وقيل ما طبخ من ماء العنب حتى ذهب ثلثاه وبقي ثلثه ) وصار مسكرا ( وهو الصواب ونجاسته كالخمر ) به يفتي ( و ) الثالث ( السكروهو النيء ماء الرطب )

( و ) الرابع ( نقيع الزبيب وهو النيء من ماء الزبيب ) بشرط أن يقذف بالزبد بعد الغليان ( والكل ) أي الثلاثة المذكورة ( حرام إذا غلي واشتد ) وإلا لم يحرم اتفاقا وإن قذف حرم اتفاقا وظاهر كلامه فبقية المتون أنه اختار ها هنا قولهما

যে সমস্ত অ্যালকোহল খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হয় নি, তেমন বস্তু নেশা না আসা পর্যন্তের জন্য ব্যবহার জায়েয ইমাম আবু হানীফা রহ. এবং ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর মতানুসারে। (ফাতহুল কাদীর-৮/১৬০, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৪১২, আল বাহরুর রায়েক-৮/২১৭-২১৮, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৯)

বর্তমান যুগে অ্যালকোহলমুক্ত ওষুধ পাওয়া এক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশ্চাত্য দেশগুলোর প্রায় সব ওষুধেই অ্যালকোহল মেশানো হয়। কিন্তু বিষয়টি কেবল পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ওষুধের সঙ্গে অ্যালকোহল মেশানোর এ সমস্যা আজ প্রায় ইসলামি দুনিয়ার সব দেশেই বিদ্যমান।”

এ প্রসঙ্গে আল্লামা রমলি রহ. (তিনি জুনিয়র শাফেয়ী হিসেবে পরিচিত, মৃত্যু ১০০৪, মিশর) লিখেছেন: “এমন মাদকদ্রব্য, যা অন্য ওষুধের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে তার প্রকৃত অস্তিত্ব নিঃশেষ হয়ে গেছে, এজাতীয় ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা করা বৈধ। যেমনঅন্যান্য নাপাক বস্তুর ক্ষেত্রেও একই বিধান রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো, চিকিৎসাশাস্ত্রে ওই ওষুধের দ্বারা রোগ নিরাময় প্রমাণিত হতে হবে, কিংবা পরহেজগার কোনো ডাক্তারকে ওই ওষুধের উপকারিতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে অবগত করতে হবে। এরই সঙ্গে ওই ওষুধ ছাড়া রোগ নিরাময়ের আর কোনো বিকল্প পবিত্র ওষুধ না থাকতে হবে।” [নিহায়াতুল মুহতাজ : খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা : ১২]

ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগ (রাবেতা) কর্তৃক পরিচালিত ইসলামি ফিকহ কাউন্সিলের সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফতোয়া বোর্ড পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল যুক্ত ওষুধ ব্যবহারের বৈধতার পক্ষে ফতোয়া প্রদান করেছে। যেমন: ইসলামি ফিকহ কাউন্সিলের এই সংক্রান্ত কয়েকটি সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি হলো:

يجوز استعمال الأدوية المشتملة على الكحول بنسب مستهلكة تقتضيها الصناعة الدوائية التي لا بديل عنها ، بشرط أنب عدل ، كما يجوز استعمال الكحول مطهرًا خارجيًّا للجروح ، وقاتلاً للجراثيم ، وفي الكريمات والدهون الخارجية .

“ঔষধ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণে অ্যালকোহল মেশানো হলে উক্ত ঔষধ ব্যবহার করা জায়েয যদি এ ছাড়া বিকল্প কিছু না থাকে। তবে শর্ত হলো, কোন বিশ্বস্ত ও ন্যায়-নীতিবান ডাক্তার কর্তৃক তা ব্যবহার করার নির্দেশনা (প্রেসক্রিপশন) থাকতে হবে। যেভাবে ক্ষত বা আহত স্থানের জন্য অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে, জীবাণু নাশক হিসেবে এবং ক্রিম ও মলমে অ্যালকোহল ব্যবহার করা বৈধ।” [২৬-১০-১৪২২ হি. মোতাবেক ৫-১০-২০০২ খ্রিস্টাব্দ তারিখে মক্কা মুকাররামায় অনুষ্ঠিত ইসলামি ফিকহ কাউন্সিলের ১৬তম অধিবেশন] (সংগৃহিত)

আরো জানুন: https://ifatwa.info/36138/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...