আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
186 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (33 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

আমি একজন জেনারেল পড়ুয়া ছেলে। আমি ইউটিউবে ফেসবুকে বিভিন্ন জায়গায় হুজুরদের বলতে শুনি  ইসলামে এটা ফরজ, এটা ওয়াজিব,  এটা সুন্নত, এটা নফল, এটা মুস্তাহাব। এখন আমি নিজে বুঝিনা ইসলামে ফরজ ওয়াজিব সুন্নত নফল মুস্তাহাব কিসের ভিত্তিতে নির্ণয় হয়?অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একই বিষয়ে হুজুররা বিভিন্ন মত প্রদান করেছেন। আমার মা-বাবা এবং অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের মধ্যে দেখা যায় যে তারা ইসলাম সম্পর্কে অনেক কম জানে। এখন তাদেরকে কিছু বলতে গেলে আমাকে তখন এভাবে বলতে হবে যে এই হুজুর বলসে এটা ফরজ, ওই হুজুর বলসে ওটা ওয়াজিব। হুজুরদের কথা বললে অনেকে আবার বলতে পারে এই হুজুরকে আমি চিনি না বা হুজুর বলসে বলেই কি মানতে হবে। তাই আমি তাদেরকে বলতে চাই ইসলামে এটা আছে। যেহেতু হুজুরদের মধ্যেও অনেক বিষয়ে মতানৈক্য থাকে তাই আমি হুজুর কেন্দ্রীক না হয়ে কোন মূলনীতির আলোকে কোনটি ফরজ, ওয়াজিব,সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব তা জানতে চাই। আবার কুরআনে পর্দার ব্যাপারে আছে এবং জামাআতে নামাজের ব্যাপারে আছে। এখন হুজুররা বলে পর্দা করা ফরজ, আর নামাজ জামায়াতে পড়া ওয়াজিব। এখন দুইটাই কুরআনে আছে কিন্তু একটা ফরজ এবং একটা ওয়াজিব হল কেন? আর  হাদিসে যা থাকবে তা কিসের আওতাভুক্ত হবে? আমি বুঝবো কিভাবে কোন সুন্নত মানতেই হবে আর কোনটা না মানলেও হবে। যেমন হুজুররা বলে দাড়ি রাখা ওয়াজিব কিন্তু সাধারণ জেনারেল পড়ুয়ারা অনেকেই মনে করে দাড়ি রাখা সুন্নত। রাখলে ভালো না রাখলে গুনাহ নেই। আমি কোনো মুফতি বা আলেমকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। আর হুজুরদের মধ্যে মতানৈক্য আবার জেনারেল পড়ুয়া ইসলাম সম্পর্কে কম জানা ব্যক্তিদের কথা শুনে বুঝে উঠতে পারি না আমি সঠিকভাবে ইসলাম মানছি নাকি।


 

১) ইসলামের কোন বিধানটি ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব এটা কোন মূলনীতির ভিত্তিতে নির্ণয় করা হয়?সেই মূলনীতিটা আমাকে একটু বলে দিন। 


 

২) কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর সকল আদেশ নিষেধ কেন ফরজ নয়? আর কোন আদেশটি ফরজ এবং কোনটি ওয়াজিব সেটা কিসের ভিত্তিতে নির্ণয় করা হয় ?  রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি এ ব্যাপারে বলে গিয়েছিলেন।


 

৩) হাদিসে বর্ণিত বিষয়গুলোর হুকুম কি?  এগুলোর মধ্যে কোনগুলো সুনাতে মুয়াক্কাদা

এবং কোনগুলো সুন্নাতে যায়েদা কিভাবে বুঝবো?



 

জাযাকাল্লাহু খাইরান 


 

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ফরজ কাকে বলে?
যে বিধানটি ক্বতয়ী তথা অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। তাকে ফরজ বলা হয়। অর্থাৎ যা আল্লাহর নির্দেশিত পালনীয় আমল হবার বিষয়ে বিন্দু পরিমাণ কোন সন্দেহ না থাকে। সেটি ফরজ।
যেমন নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি।
ফরজ অস্বিকারকারী কাফের।
فالفرض أعم منهما (من الشرط والركن) وهو ما قطع بلزومه، (الدر المختار، كتاب الصلاة، اركان الوضوء-1/94)
وهو بمعنى قولهم: ما لزم فعله بدليل قطعى، (البحر الرائق، كتاب الطهارة-1/24)
وكذا فى منحة الخالق على البحر الرائق-1/24)
فرضية: وهى ما لا يحتمل زيادة ولا نقصانا، ثبت بدليل لا شبهة فيه: (نور الأنوار-166)

ওয়াজিব কাকে বলে?
যা করার আদেশটি জন্নী দলীল তথা ফরজের তুলনায় দুর্বল দলীল দ্বারা প্রমাণিত।
واجب: وهو ما ثبت بدليل فيه شبهة، (قمر الأقمار حاشية نور الأنوار-166)
وأما الحنفية فيقولون……. والواجب، فهو ما ثبت بدليل ظنى فيه شبهة، (أصول الفقه الإسلامى-1/47)
ওয়াজিব অস্বিকারকারী গোমরা এবং ফাসিক হয়। কাফের হয় না।

সুন্নত কাকে বলে?
সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়, যে আমলকে রাসূল সাঃ ইবাদত হিসেবে পাবন্দীর সাথে করেছেন। কখনো ওজর ছাড়া ছেড়ে দিয়েছেন বা নিজেতো ছাড়েননি কিন্তু যে ছেড়ে দিয়েছে তাকে ভর্ৎসনা করেননি। এরকম আমলকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়।আর যেগুলোকে মাঝেমধ্যে ছেড়ে দিয়েছেন, সেগুলোকে সুন্নতে গায়রে মু'আক্কাদা বা যায়েদা বলা হয় {আততাআরিফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ-৩২৮, আলমুজিজ ফি উসুলিল ফিক্বহ-৪৩৯-৪০}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কোনটা ফরয কোনট ওয়াজিব?কোনটা কোন কারণে ফরয এবং কোনটা কোন কারণে ওয়াজিব বা সুন্নত? সেগুলো বুঝতে হলে কুরআন হাদীস সম্পর্কে ব্যাপক পান্ডিত্ব অর্জন করতে হবে। সাধারণ জনগণের দায়িত্ব হল, কোনো একটি মাযহাবকে অনুসরণ করে সকল বিষয়ে ঐ মাযহাবের অনুসরণ করা।তখন বিধানে পার্থক্য আর সামনে আসবে না। জাযাকুমুল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (588,060 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...