আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।

প্রশ্ন: ১: বর্ডার এরিয়া থেকে গরু কিনা কি জায়েজ?

কারন এসব গরু তো বর্ডার দিয়ে চোরাই পথে আসে। 

প্রশ্ন: ২: আর যদি বাজারে এনে বিক্রি করে, তাহলে তো বুঝারও উপায় নাই যে এগুলো বর্ডার ক্রস গরু। তাহলে বাজার থেকে এসব গরু কেনা জায়েজ হবে?

ফার্মে পালনের জন্য এভাবেই তো গরু কিনতে হয়,

প্রশ্ন: ৩: আর আমি তো আমার হালাল টাকা দিয়েই এসব গরু ক্র‍য় করতেছি। তারপরও কি এসব জায়গা থেকে গরু কেনা জায়েজ হবে না?

প্রশ্ন: ৪: ধরেন, আমি যদি ৮৩ হাজার+/- দিয়ে একটি গরু কিনি, ৫-৬, মাস পালার পর গরুর খাবার খরচ হয় ১৬ হাজার+/- অর্থাৎ গরু কেনা + খরচ সহ মোট হয় ৯৯ হাজার+/- টাকা।

এখন গরুটা যদি আমি কিছু লাভে বিক্রি করি যেমন ধরেন ১.০৬ লাখে বিক্রি করি। তাহলে লাভ থাকে ৭ হাজার টাকা।

এখন গরুটা হাটে বিক্রি করার সময় নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা খেয়াল করি, গরুটা একটু পর পর রাস্তায় বসে পড়ে। হয়তো পায়ে কোনো সমস্যা বা অন্য কোনো কারনে।

এখন আমরা ১০০% সঠিক জানি না যে গরুটা কি আসলেই অসুস্থ নাকি অনেক গরু একটু অলস থাকে এই কারনেও বসে পরতে পারে বারবার।

এরপর যদি আমরা সেই গরুটা কোরবানির সময় হাটে কারো কাছে বিক্রি করি, এবং ক্রেতাকে এই সমস্যার কথা না জানাই, তাহলে কি আমার সেই গরুর পিছনে যত টাকা খরচ হয়েছে সকল টাকা হারাম হয়ে যাবে? নাকি যতটুকু লাভ হয়েছে সেই টাকা হারাম হবে? নাকি সম্পুর্ণ টাকাই হালাল হবে?

হারাম হলে তার কাছে গিয়ে বললে লজ্জা পাবো। এমন অবস্থায় করনীয় কি?

 

প্রশ্ন: ৫: আমরা একটা গরু কিনেছিলাম ৮ মাস আগে কোরবানির সময় বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। গরুটা কেনার সময় সেটার,সঠিক বয়স আমরা জানতাম না। ৮ মাস পালার পর এই কোরবানির সময় সেই গরুটা বিক্রি করার জন্য খেয়াল করলে দেখি গরুটার এখনো ২ দাত উঠেনি। আমি জানি ২ দাত না উঠলেও কোরবানি হয়, যদি ২ বছর হয়। কিন্তু আমরা তো গরু টা ৮ মাস আগে কেনার সময় সঠিক বয়স জানতাম না। আর গরুটা এখনো দাতে নি। তাহলে বুঝতেও পারতেছি না যে গরুটার বয়স ২ বছর হয়েছে কিনা।

এখন কেউ যদি আমাদের থেকে সেই গরুটা কিনে এবং কোরবানি দেয়, তাহলে কি তাকে বিক্রি করার জন্য আমাদের সেই বিক্রি করার টাকাটা হারাম হবে?

(বি:দ্র: যিনি গরুটা কিনেছে, উনি গরুটা দেখেই কিনেছে, আমরা মিথ্যা কথা বলিনি যে, গরুর বয়স ২ বছর হয়েছে। উনি কিনেছে কারন গ্রামের অনেক মানুষ ভাবে গরুর শিং দুই ইঞ্চি হলে বা গরুটা দেখতে বড় হলে কোরবানি হয়। কিন্তু আসলে তো তা নয়)

এমন অবস্থায় কি আমাদের সেই গরুর পিছে সব টাকা হারাম নাকি শুধু বিক্রি করার পর লাভের টাকা হারাম নাকি হালাল?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন প্রতিটি নাগরিকের জন্য মান্য করা আবশ্যক-যতক্ষণ না তা শরিয়া বিরোধী হয়। 
শরীয়াহ বিরোধী আইন না হলে বিনা ওযরে তাহা না মানলে গুনাহগার হতে হবে।

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, 
রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ না করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি এবং নানা দুর্ভোগে পতিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মানুষের নিরাপত্তা, কল্যাণ সাধন এবং বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব-যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেউ যদি এসব আইন লঙ্ঘন করে তাহলে সে নিজেকে নানা বিপদাপদ, শাস্তি ও লাঞ্ছনার মধ্যে নিক্ষেপ করবে-যা ইসলামে নিষেধ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدُبٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْبَغِي لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُذِلَّ نَفْسَهُ " . قَالُوا وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ . قَالَ " يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيقُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কোন মু'মিন ব্যক্তির জন্য নিজেকে অপমানিত করাটা শোভনীয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, সে নিজেকে কিভাবে অপমানিত করে? তিনি বললেনঃ এমন কঠিন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া যার সামর্থ্য তার নেই।

সহীহ,তিরমিযী ২২৫৪, ইবনু মাজাহ ৪০১৬, আহমাদ ২৩৪৪৪, সহীহাহ্ ৬১৩।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।

শাইখ বিন বায রাহ. বলেন,

أن القوانين إذا كانت لا تخالف الشرع فلا بأس بها، النظم تسمى بالقوانين وتسمى بالنظم، فكل قانون ونظام ينفع المسلمين ولا يخالف شريعة الله لا بأس به، من المرور أو في القضاء أو في أي الدوائر الحكومية أو في أي مكان.

“আইন-কানুন যদি শরিয়ত বিরোধী না হয় তাহলে তাতে কোনও সমস্যা নাই। শৃঙ্খলাকে আইন বলা হয়। সুতরাং যে সকল আইন-শৃঙ্খলা মুসলিমদের উপকার করে ও আল্লাহর আইন লঙ্ঘন করে না তাতে কোনও সমস্যা নাই। যেমন: ট্রাফিক, বিচার বিভাগ, সরকারি অফিস বা অন্য যে কোন স্থানে হোক না কেন।” 

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে যেহেতু এধরণের গরু চোরাই পথে আসে,তাই চড়াই পথে আসা বর্ডার এরিয়া থেকে গরু ক্রয় করা জায়েজ নেই।

(০২)
এক্ষেত্রে বাজারে এধরণের গরু এনে আপনার জন্য তাহা বিক্রয় জায়েজ হবেনা।
তবে ক্রেতা যদি বিষয়টি না জেনেই ক্রয় করে,সেক্ষেত্রে তার কোনো গুনাহ হবেনা।

(০৩)
চোরাইপথে আসার কারনে উক্ত গরু ক্রয় নাজায়েজ।
তবে এক্ষেত্রে আপনার মালিকানা ঠিকই সাব্যস্ত হবে,আর উক্ত গরু জবাই করে খাওয়া আপনার জন্য হালাল হবে।

চোরাইপথ থেকে ক্রয়ের দরুন আপনার গুনাহ হবে।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে সম্পুর্ণ টাকাই হালাল হবে।

তব এক্ষেত্রে সেই গরু যদি চার পায়ের উপর ভর দিয়ে চলতে না পারে,সেক্ষেত্রে তার দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবেনা।
এক্ষেত্রে গরুটিকে সুস্থ্য দাবী করলে আপনাদের ধোকা দেয়ার গুনাহ হবে।

আর যদি সেই গরু চার পায়ের উপর ভর দিয়ে চলতে পারে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের ধোকা দেয়ার গুনাহ হবেনা।
তবে বিক্রয়ের আগে তার সুস্থতা সম্পর্কে আপনাদের নিশ্চিত হয়ে আসা উচিত ছিলো।

(০৫)
এক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের সেই বিক্রি করার টাকাটা হারাম হবেনা।

কুরবানীর হাটে যেহেতু কুরবানী উপযুক্ত গরুই বিক্রয় করা হয়,আর সাধারণ জনগন সেই বিশ্বাস নিয়েই কুরবানী হাট হতে গরু ক্রয় করে যে এগুলো দ্বারা আসলে কুরবানী হবে।

তাই এক্ষেত্রে গরুর বয়স সম্পর্কে আপনাদের অজ্ঞতার বিষয় ক্রেতাকে বলা উচিত ছিলো। 

না বলার কারনে আপনাদের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...