আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
70 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)

আমি একটি অনলাইন মার্কেটে কাজ করতাম (মার্কেটটির নাম ফাইবার) সেই মার্কেটে আমি মেয়েদের (মেয়েগুলোর ছবি বেপর্দাযুক্ত) ও ছেলেদের এবং প্রানীর ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অর্থাৎ ছবির পিছনের অংশটিকে কেটে ফেলেদিতাম শুধু মানুষ বা প্রানীটিকে রাখতাম। আমি এক্ষেত্রে প্রানী বা মানুষের ছবির আকৃতিতে পরিবর্তন করতাম না শুধু পিছনের অংশটিকে কেটে ফেলতাম। পরিবর্তন বলতে চেহারা সুন্দর করা ফর্সা করা এসব করতাম না। এবং ছবিগুলি হলো ক্যামেরা দিয়ে তোলা (soft copy)। ছবিগুলি অংকন করা নয় ছবিগুলি ক্যামেরা দিয়ে তোলা ডিজিটাল ছবি (soft copy) কাজ করতাম সফটওয়্যার দিয়ে। তিন ধরনের ছবির মধ্যে মেয়েদের ছবির কাজ বেশি আসতো এজন্য মেয়েদের ছবির কাজ বেশি করা হয়েছে। এবং এই ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তনের বিনিময়ে আমি টাকা নিতাম। আমি সেখান থেকে ১ লাখের মতো টাকা ইনকাম করেছি। যেই টাকার ৩ ভাগের আড়াই ভাগ টাকা খরচ করেছি। ১ ভাগেরও কম টাকা আমার কাছে এখন আছে।


প্রথম প্রশ্ন : ইনকামকৃত টাকা কি হারাম? হারম হলে করনীয় কি?

এবং আমি যেই মর্কেটে কাজ করতাম তারা আমার থেকে আমি যে টাকা ইনকাম করতাম তার থেকে ২০% টাকা তারা নিতো। যেহেতু তাদের মার্কেটে আমাদের টাকার নিরাপত্তা তারা দেয়। এজন্য তারা এই ২০% টাকা নিয়ে থাকে।


দ্বিতীয় প্রশ্ন : যদি আমার ইনকামকৃত টাকা হারাম হয় তাহলে আমাকে তো এই টাকা গরিবদের দিতে হবে তো এক্ষেত্রে আমি কি এই যে তারা ২০% টাকা আমার থেকে নিলো এই টাকা সহ আমি যে টাকা পেয়েছি এই মোট টাকা দান করে দিতে হবে নাকি শুধু আমি যে টাকাটা নিয়েছি বা পেয়েছি সেটুকু দান করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 


https://www.ifatwa.info/13052/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সহিহ হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ

‘প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।’ (বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম ৫৬৬২)

প্রচলিত ফটো স্টুডিওগুলোর অধিকাংশ কাজই নাজায়েয। মানুষ সাধারণত শখের বশবর্তী হয়ে ছবি তোলে। বড় বড় ছবি টানানো হয়, বেপর্দা নারীর ছবি তোলা হয়। এসবই নাজায়েয। তাই এ ব্যবসা থেকে অর্জিত আয়ও নাজায়েয। সুতরাং ঐ ব্যক্তির দাওয়াত গ্রহণ না করা ঠিকই হয়েছে। অবশ্য পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং এর চেয়ে ছোট ছবি, যা অফিসিয়াল প্রয়োজনে তোলা হয় তা জায়েয এবং এ থেকে অর্জিত আয়ও জায়েয। কিন্তু স্টুডিওতে এর পরিমাণ খুবই কম। তাই স্টুডিওতে আপনার অধিকাংশ কাজ নাজায়েয এবং অধিকাংশ উপার্জনও নাজায়েয। অতএব আপনার কর্তব্য এ ব্যবসা বাদ দিয়ে অন্য কোনো হালাল ব্যবসা করা। 

তবে যদি স্টুডিওটি এমন পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারেন যে, তাতে শুধু মানুষের পাসপোর্ট বা স্ট্যাম্প সাইজের প্রয়োজনীয় ছবিই তোলা হবে, যেমন কোনো কোনো ভূমি রেজিষ্ট্রি অফিসে দেখা যায়; তাহলে সেক্ষেত্রে ঐ কাজ জায়েয হবে এবং এর ইনকামও হালাল হবে।
(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৪৮; মাজমাউল আনহুর ৩/৫৩৩; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫০; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৬৪)

ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে সব ইমাম ও ফিকহ বিশেষজ্ঞ ও সমকালীন মুফতিদের মতে হারাম। তবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট তৈরি বা এজাতীয় বিশেষ প্রয়োজনে ফটো তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা যায়। (ফিকহি মাকালাত; তকি উসমানী : ৪/১২৩)

বিনা প্রয়োজনে কোন প্রাণীর ছবি প্রস্তুত করার পর প্রস্তুতকারীর জন্য যেমন তার মূল্য নেয়া নাজায়িয তেমনি ক্রয়কারীর জন্য তার মূল্য দেয়াও নাজায়িয, এজন্য স্টুডিও ইত্যাদিতে ছবি বানানোর কাজে চাকুরী করাও নাজায়িয। তবে চিত্রকর ছবি বানাতে যে রং ইত্যাদি ব্যয় করেছে তার মূল্য দিয়ে দিবে। (শামী ১/৬৫১)

এ বিষয়ে আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,
تصوير ذوات الأرواح حرام والكسب حرام

‘প্রাণীর ছবি বানানো হারাম এবং এর উপার্জনও হারাম।’ (ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা লিল বুহুসিল ইলমিয়্যা ওয়াল ইফতা, ফাতওয়া নং ৬৪০২)
,
★যে ছবি তোলা জায়েজ আছে,তার ইনকাম জায়েজ আছে।
যে ছবি তোলা জায়েজ নেই,তার ইনকামও জায়েজ নেই।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ইনকামকৃত টাকার অধিকাংশই হারাম।
ছেলেদের ছবির কাজের টাকা শুধু হালাল বলে বিবেচিত হবে,মেয়েদের ছবির কাজের টাকা হারাম।

যেহেতু মেয়েদের ছবির কাজ বেশি করেছেন,তাই 
আপনার ইনকামকৃত টাকার অধিকাংশই হারাম।

এই টাকা আপনি ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।
 
তবে ছেলেদের ছবির কাজের সমপরিমাণ টাকা আপন রেখে দিতে পারেব,কেননা সেটি হালাল ছিলো।

(০২)
আপনি যেই টাকা পেয়েছেন,সেই টাকার মধ্যে মেয়েদের ছবিত কাজ সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...