আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
89 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (62 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম,

আমার বেশ কয়েকমাস ধরে কিছু সমস্যা হচ্ছে।

প্রথমত,
আমি কথা বলতে গেলে অনেক দ্বিধাদ্বন্দে ভুগি যে এইটা বলা ঠিক হবে নাকি, এইভাবে বললে সমস্যা হবে নাকি, আবার আমার কথায় কষ্ট পেলে গুনাহ হবে নাকি এইসব কারণে ঠিকমতো কথা বলতে পারিনা।

দ্বিতীয়ত,
ইসলামিক কোনো বিষয়ে কিছু বলতে পারিনা।সাহসে আসেনা।মনে হয় আমি যা বলছি সেটা কি হবে? যদি আরও অন্য কিছু বলা থাকে হাদিসে বা কুরআনে এমন সমস্যায় আছি।এর সাথে আরেকটা প্রশ্ন করতে চাই, আমি কুরআন-হাদিসের কোনো আয়াত, কথা উল্লেখ করলাম কিন্তু অনুবাদে ঠিক যেভাবে বলা আছে ওইভাবেই বলতে হবে নাকি? আমি এমনভাবে বললাম যে মেইন ভাব টা ঠিক আছে শুধু শব্দগত বা বলার স্টাইলটা অন্যরকম তাহলে কী কোনো সমস্যা হবে?আবার কোনো বিষয়ে আলোচনা বা কথা বলার সময় কুরআন বা হাদিস থেকে কথা বলা লাগছে তখন আমি আমার মতো করে আয়াত বা হাদিসের কথাটা বললাম, যেখানে মেইন আয়াত বা হাদিসের কথার ভাব ঠিক আছে কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে আমার মতো করে বললাম তাহলে সমস্যা হবে কী?

তৃতীয়ত,

আমি কোনো কথা বললাম যার ভিতর কিছু কথা আমার ভুল ছিলো বা ধারণা ভুল ছিলো।সেইক্ষেত্রে কী আমার গুনাহ হবে? ওইটা কী আবার সংশোধন করা প্রয়োজন? দেখা গেলো ওই বিষয়টা নিয়ে আবার কথা বলতে গেলে অন্যদের কাছে সেটা বিরক্তিকর বা এইটা নিয়ে কথা বলা নিজের কাছেই একটু অস্বস্তিকর লাগে, মনে হয় Immature এর মতো হয়ে যায় বিষয়টা।
চতুর্থত,

নামাজ পড়া বা আরবি পড়ার ক্ষেত্রে আমার এমন হয় যে, এত আলিফ টানতে হবে একটু বেশি হয়ে গেলো নাকি বা এখানক উচ্চারণ ঠিকভাবে হয়নি হয়তো - এইসব কারণে বার বার পড়তে হয় সেই জায়গায়। এই কারণগুলোতে কী আমার গুনাহ হবে বা সাহু সিজদাহ্ দিতে হবে?

শেষ বিষয় হচ্ছে,
অনেকে দেখি ইসলামিক ভিডিও বা পোসটে  যা যা লিখে তার ভিতর থাকে হেদায়েত, দোয়া,মোনাজাত,আখেরাত, কোরআন ইত্যাদি।
এইগুলোর বানান কী সঠিক?
হিদায়াত,দু'আ,মুনাজাত,আখিরাত, কুরআন এইগুলো সঠিক বানান না? তাছাড়া জায়েজ নাকি জায়িজ কোন শব্দটা সঠিক?

ভুল বানানের ভিডিও বা পোস্টগুলো কী শেয়ার করা যাবে?কোনো ভুল তথ্য জানানোর মতো গুনাহ হবে নাকি?

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
ভেবে চিন্তা করে কথাবার্তা বলা অবশ্যই প্রশংসনীয়, তবে এক্ষেত্রে এইসব কারণে ঠিকমতো কথা বলতে না পারার বিষয়টি কাম্য নয়।

(০২)
অনুবাদ যেভাবে আছে,ঠিক সেভাবে না বলে কোনো অর্থ আগ পিছ করলে বা একই অর্থ বিশিষ্ট অন্য কোনো বাক্য ব্যবহার করলে যেক্ষেত্রে আয়াত/হাদীসের মর্মার্থ ঠিকই থাকে,সেক্ষেত্রে সমস্যা নেই।

(০৩)
কাহারো হক নষ্ট হয়,এমন কথা না বললে পুনরায় সেই কথা বলার দরকার নেই।

(০৪)
https://ifatwa.info/19542/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
নামাজে মাখরাজ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত জরুরি। 
কেননা মাখরাজ গত ভূল হলে অনেক সময় অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ হয়ে যায়,যাতে প্রায়ই অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর শরীয়তের বিধান হলো নামাজে অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,
তাই অবশ্যই মাখরাজ অনুযায়ী প্রত্যেক অক্ষর উচ্চারণ করে নামাজ আদায় করতে হবে।
,    
আরো জানুনঃ  

মদ অনুযায়ী নামাজ আদায় না করলে এক্ষেত্রে বিধান হলো যদি টান থাকা সত্ত্বেও টান না দেওয়া হয়,বা তিন/চার আলিফের জায়গায় এক আলিফ টানা হয়,এক্ষেত্রে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
কিন্তু যেখানে টান নেই,সেখানে টান দিলে প্রায়ই অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর শরীয়তের বিধান হলো নামাজে অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,

আমরা তাজবিদ সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
 
“তাজবিদ ও কিরাআতবিদগণ কর্তৃক উল্লেখিত তাজবিদের নিয়ম-কানুনগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া ভালো। এটি কিরাআত সুন্দর করার অন্তর্গত। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

« زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ »

“তোমরা সুন্দর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত কর।” [হাদিসটি ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং তা সহীহ]

সুতরাং যদি গুন্নাহ, তারকিক (বারিক/চিকন করা), তাফখিম (পোর/মোটা করা) ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয় তাহলে তা উত্তম। কিন্তু আমার কাছে যা মনে হয় এটা আবশ্যক নয়-যদি স্পষ্টভাবে ত্রটি-বিচ্যুতি ছাড়া পাঠ করে।”

 শাইখ সালেহ আল ফাউযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

“قراءة القرآن بالتجويد مستحبة من غير إفراط، وليست واجبة، وإنما الواجب تجويد القرآن من اللحن والخطأ في الإعراب”

“তাজবিদ সহ কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। এটা ওয়াজিব নয়। বরং ওয়াজিব হল, ইরাব (উচ্চারণ ও প্রকাশ করা) এর ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত করে সুন্দরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা।”

শাইখ উসাইমিন রহ. বলেন,

أما التجويد فليس بواجب، التجويد تحسين للفظ فقط، وتحسين اللفظ بالقرآن لا شك أنه خير، وأنه أتم في حسن القراءة، لكن الوجوب بحيث نقول من لم يقرأ القرآن بالتجويد فهو آثم قول لا دليل عليه، بل الدليل على خلافه”

“আর তাজবিদ ওয়াজিব নয়। তাজবিদ শব্দকে সুন্দর করে মাত্র। কুরআনের শব্দকে সুন্দর করা নি:সন্দেহে কল্যাণকর। এটি কিরাআতকে সুন্দর করার ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গতা দান করে। কিন্তু তাজবিদকে ওয়াজিব বলা অর্থাৎ “এ কথা বলা যে, যে ব্যক্তি তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন পড়বে না সে গুনাহগার হবে” এর পক্ষে কোনও দলিল নাই। বরং এর বিপরীতেই দলিল রয়েছে।”

★★যাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত সম্ভব। শুধুমাত্র তাদের জন্যই পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব।আর যাদের বেলায় সম্ভব নয়, তাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব নয়।বরং অর্থে পরিবর্তন আসেনা এমনকরে কুরআন পড়াই তাদের জন্য যথেষ্ট হবে।এমনকি তারা পূর্ণ তাজবিদ সহকারে না পড়লেও তাদের কোনোপ্রকার গোনাহগার হবেন না।(শরহু তাইয়্যিবাতুন-নাশর-৬৩)

যেখানে টান নেই,সেখানে টান দিলে প্রায়ই অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর শরীয়তের বিধান হলো নামাজে অর্থ বিকৃত হলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এই কারণগুলোতে আপনার গুনাহ হবেনা, সাহু সিজদাহ্ দিতে হবেনা।
এর দরুন সালাতের বিশুদ্ধতায় সমস্যা হবেনা।

(০৫)
হিদায়াত,দু'আ,মুনাজাত,আখিরাত, কুরআন,জায়িয এইগুলো সঠিক বানান। 

তবে বাংলা ভাষা হিসেবে উপরে উল্লেখিত বানানগুলিকে ভুল বলা যায়না।

ভুল বানানের ভিডিও বা পোস্টগুলো শেয়ার করা যাবে।
কোনো ভুল তথ্য জানানোর মতো গুনাহ হবেনা।
কেননা এক্ষেত্রে এর দ্বারা আপনি তো বানান শিখানোর কোনো পোস্ট করছেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...