আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালমুআলাইকুম শায়েখ,
হুজুর চিন্তায় আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে,আমি একজন চূড়ান্ত পর্যায়ের ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত মানুষ। আমার পুরোনো কথা মনে হচ্ছে , অনেক বছর আগের কথা মনে পড়ছে , দিয়ে চিন্তা হচ্ছে।  বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি , আমাকে একটু চিন্তা মুক্ত করুন।
আজ থেকে ৮ বছর  পূর্বে যখন আমার বয়স ১৫ কি ১৬ হবে তখন আমি নবম ক্লাস এ পড়তাম, ছোটো ছিলাম দ্বীনের বুদ্ধি ছিল না, । সেই সময় আমি কাউকে এমন কথা বলেছি বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু সঠিক ভাবে মনে পড়ছে না, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি বলেছি, কিন্তু কাকে বলেছি কখন বলেছি সেটা মনে পড়ছে না, আদেও বলেছি কিনা সেটা মনে নেই, কিন্তু বলেছি বলে সন্দেহ হচ্ছে  । কথাটা হলো, -----
"আমি মুসলিম, হিন্দু,  খ্রীষ্টান সব" আস্তাগিরুল্লাহ  বা এমন বলেছি হয়ত , "আমি সব ধর্ম মানি" এমনি মুখের কথা বলেছি কিন্তু কখনো ইসলাম ছাড়া আমি আর কোনো ধর্ম কে মানিনা।
হুজুর দ্বীনের বুদ্ধি ছিলনা সেইসময় , ছোটো ছিলাম ভুল করে বলেছি। কোনো মুভি দেখেছি আবেগে বলেছি হয়ত। হুজুর না জেনে না বুঝে ভুল হয়েছে।
এই ঘটনা ৮ বছর হয়ে গেল, এখন মনে পড়ছে দিয়ে খুবই দুশচিন্তা হচ্ছে ঈমান চলে যাবে নাকি তাই বলে, হুজুর অনেক দিন হলো, তার পর সেই কথা ভুলে গিয়ে সাধারণ জীবন যাপন করেছি, নামাজ পড়েছি, ভুল হলে তৌবা করেছি, আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি। কালেমা পড়েছি। আর বিয়ের পর এই বিষয় টা মাথায় এসেছে তখন  থেকে  অনেক তৌবা করেছি , আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি , কালেমা সাহাদাত পড়েছি । কিছু মাস হলো বিয়ে করেছি , বিয়ের আগে অনেক বার কালেমা সাহাদাত পড়েছি। আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি।
১. হুজুর ওই ঘটনার জন্য কি আমার ঈমান চলে গিয়েছিল?
২. হুজুর অনেক দিন আগের ঘটনা, যা হয়েছে ভুল বসত হয়ে ছিল , তার পর তো  অনেক নামাজ পড়েছি, কালেমা সাহাদাত পড়েছি এই ঘটনা কে উদ্দেশ্য করে কালেমা সাহাদাত পাঠ করিনি, এমনি কালেমা সাহাদাত পাঠ করেছি, ঈমান নিয়ে চিন্তা হলে কালেমা সাহাদাত পাঠ করেছি। । এখন হুজুর আমার ঈমান ঠিক আছে তো?  আমাকে কি নতুন করে আবার ঈমান আনতে হবে? আমি তো কালেমা সাহাদাত পড়েছি।
৩. হুজুর বিয়ের আগে কালেমা সাহাদাত পড়েছি, আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি, তৌবা করেছি, এবং বিয়ের সময় ও কালেমা সাহাদাত পড়েছি, দিয়ে বিয়ে করেছি।  এই কথা মনে হলেই আমি কালেমা সাহাদাত পড়ি, আর তৌবা করি। অনেক দিন আগের কথা বিয়ে এর অনেক আগের কথা ,  । তার পর তো অনেক বার কালেমা সাহাদাত পড়েছি।
***হুজুর আমার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো ? ***আমার বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে তো?
*** হুজুর আমাকে কি পুনরায় বিবাহ পড়তে হবে? হুজুর এখন আমার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে?
৪. হুজুর আমার আগের সমস্ত আমল কি বাতিল হয়ে যাবে?
৫. হুজুর আমি প্রস্রাব করছিলাম, হটাৎ মনে পড়ে  স্বপ্নে  প্রস্রাব করছিলাম , দিয়ে সেই কথা মনে হয়। এমন ভাবতে ভাবতে মনে হচ্ছিল স্বপ্নে আর কি দেখেছি , দিয়ে মনে মনে নবী সাঃ এর কথা মনে হয়, দিয়ে প্রস্রাব করার সময় নবী সা: এর কথা মনে হয় , মনে মনে কল্পনা হয়। । দিয়ে যখন ই আমার মনে হয় , সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগিরুল্লাহ পড়ি। হুজুর প্রস্রাব করার সময় এমন মনে হয়েছে এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

৬. হুজুর হটাৎ আমি নবী সাঃ এর মিরাজ এর কথা ভাবছিলাম আর কল্পনা করছিলাম, দিয়ে কেমন একটা সন্দেহ হচ্ছিল আস্তাগফিরুল্লাহ,  , সঙ্গে সঙ্গে  তওবা করেছি। আমি বিশ্বাস করি নবী সাঃ এর সমস্ত কথা, শয়তানের ওয়াসওয়াসা এর জন্য এমন হলে কি ঈমান চলে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://ifatwa.info/64861/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো ইচ্ছাপূর্বক ভাবে নিজেকে নিজে কাফের বলে পরিচয় দেওয়া কুফরী। 

সূরা নাহলের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (106)

“কেউ বিশ্বাস স্থাপনের পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় মুক্ত রাখলে তার উপর আল্লাহ ক্রোধ পতিত হবে এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে (সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অটল।” (১৬:১০৬)
,

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী তে আছে
"وَمَنْ يَرْضَى بِكُفْرِ نَفْسِهِ فَقَدْ كَفَرَ."
(كتاب السير، الْبَابُ التَّاسِعُ فِي أَحْكَامِ الْمُرْتَدِّين ، مطلب فِي مُوجِبَاتُ الْكُفْرِ أَنْوَاعٌ مِنْهَا مَا يَتَعَلَّقُ بِالْإِيمَانِ وَالْإِسْلَامِ، ٢ / ٢٥٧، ط: دار الفكر)
"এবং যে কুফরীতে সন্তুষ্ট থাকে, সে কাফের হয়ে গেছে।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিলে
সেক্ষেত্রে সে কাফের হয়ে যাবে।
তাকে পুনরায় ঈমান আনতে হবে।
বিবাহিত হলে বিবাহ নবায়ন করতে হবে।

فتاوی عالمگیریہ:
"مسلم قال: أنا ملحد يكفر، ولو قال: ما علمت أنه كفر لا يعذر بهذا."
(کتاب السیر ،باب احکام المرتدین،ج:2،ص:279،ط:رشیدیہ)
সারমর্মঃ-
কোনো মুসলিম বলেছে যে আমি মুরতাদ, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে যদি সে বলে যে আমি তো জানিনা যে এটি কুফর,তাহলে সেই ওযর গ্রহণযোগ্য হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
ঐ ঘটনার জন্য আপনার ঈমান চলে গিয়েছিলো।
কিন্তু এরপরেও আপনি তো অনেকবার কালেমা পাঠ করেছেন,মুসলিম মাত্রই তো প্রতিদিন নামাজের মধ্যে,নামাজের বাহিরে কালেমা পাঠ করেই থাকে,সুতরাং ১ম বার কালেমা পাঠের সঙ্গে সঙ্গে আপনার ঈমান নবায়ন হয়ে গিয়েছে। 

(০২)
যেহেতু আপনি কালেমায়ে শাহাদাত পড়েছেন,তাই
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাকে নতুন করে আবার ঈমান আনতে হবেনা। 

(০৩)
আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।  বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে।
*আপনাকে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।

(০৪)
৮ বছর পূর্বে যখন আপনি নবম ক্লাস এ পড়া অবস্থায় উক্ত বাক্য বলেছিলেন,তার আগের সমস্ত আমল বাতিল হয়ে যাবে।


তবে এরপরে ১ম বার কালেমা পাঠের পর থেকে আমল গুলি বাতিল হবেনা। 

(০৫)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৬)
এমন হলে ঈমান চলে যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...