আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম, 

আমি একজন মেয়ে। আমার পরিচিত এক বোন আছে। যার সাথে পরিচয় অনেক দিনের। আলহামদুলিল্লাহ উনার দ্বীনের বিষয়ে জ্ঞানও আছে। তিনি আমাকে ভালোবাসেন। এবং সবসময় বলেন তিনি আমাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসেন। 

কিন্তু দিন দিন তার ভালোবাসা অনেক বেশি এক্সেস হয়ে যাচ্ছে।এ যে কিছুদিন আগে জোর করে, সে আমাকে চুক্তিপত্রে সাইন করাতে চাচ্ছে এজন্য যে 'আমি যেন তাকে ছাড়া আর কাউকে প্রিয় না বানাই। আমি অন্য কারো হতে পারব না। কখনোই না। এমন কখনো হলে যেন আল্লাহ ওকে নিয়ে যান এবং আমার নামে সরাসরি আল্লাহর কাছে বিচার যাবে।' কিন্তু আমি এইরকম সাইন করতে কোনোভাবে রাজি না।

তাকে সরাসরি বলেছি যে আমাকে এমন যেন না বলে। আমি চুক্তিপত্রতে সাইন করতে পারবো না। তখন সে এ কথা আর বলে নি কিন্তু সে আমাকে রিমাইন্ডার দেওয়া বন্ধই করে না। সে বলে: "তোর মনের ৯৮ ভাগ জায়গা আমার। এ জায়গা তুই কাওকে দিতে পারবি না। আমার মৃত্যুর পরেও না। " বার বার বলে আমাকে কখনো মাফ করবে না। আমি যদি অন্যের হই। আল্লাহর আরশে ঠিকি বিচার চলে যাবে। আমাকে প্রত্যেক দিন রিমান্ডার দেয়। ওকে কেন সময় দি না। আমি কি ওকে ভালোবাসি না। সারাক্ষণ এমন প্রশ্ন করে। বার বার বিচার এর কথা, ৯৮ ভাগ জায়গা এসব কথাই বলতে থাকে। 

সে আমার সাথে যারা কথা বলে তাদের সাথেও কথা বলা দেখা করা সহ্য করতে পারে না। বলে তারা নাকি ৩য় ব্যক্তি। তাদের জন্য আমার মনে কেনো জায়গা থাকবে। ও ছাড়া কেউ নাকি আমার প্রিয় হতেই পারবে না। ওর সামনে আমি অন্য বোনের সাথে মুসাফা করলেও নাকি ওর কষ্ট হয়। 


প্রশ্ন: আমার কি করা উচিৎ। ওকে কিভাবে বুঝাব। ও বলেছে আল্লাহর কাছে বিচার দিবে। ও আমাকে এত ভালোবাসার পর ও কেনো আমি অন্যের হয়েছি। ও এজন্য আমাকে মাফ করবে না ইত্যাদি। আমাকে একটু বলেন ও আমাকে ভালোবাসছে ভালো কথা। কিন্তু আমার বিচার আল্লাহ কে দিলে তা কি জায়েজ?  আর আমার জন্য ক্ষতিকর? 

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ (প্রকৃত) মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান-সন্ততি এবং অন্যান্য সকল মানুষ হতে প্রিয়তম হই।

(বুখারী ১৫, মুসলিম ৪৪, ইবনু মাজাহ ৬৭, দারিম২২৭৮৩, আহমাদ ১২৮১৪)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ يَحْيَى بْنِ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي، النَّضْرِ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ " عَبْدٌ خَيَّرَهُ اللَّهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ زَهْرَةَ الدُّنْيَا وَبَيْنَ مَا عِنْدَهُ فَاخْتَارَ مَا عِنْدَهُ " . فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ وَبَكَى فَقَالَ فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا . قَالَ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هُوَ الْمُخَيَّرُ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ أَعْلَمَنَا بِهِ . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَمَنَّ النَّاسِ عَلَىَّ فِي مَالِهِ وَصُحْبَتِهِ أَبُو بَكْرٍ وَلَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً لاَتَّخَذْتُ أَبَا بَكْرٍ خَلِيلاً وَلَكِنْ أُخُوَّةُ الإِسْلاَمِ لاَ تُبْقَيَنَّ فِي الْمَسْجِدِ خَوْخَةٌ إِلاَّ خَوْخَةَ أَبِي بَكْرٍ " .

আবদুল্লাহ ইবনু জাফার ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু খালিদ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারের উপর বসে বললেন, একজন বান্দাকে আল্লাহ তা'আলা দুটি বিষয়ের মাঝে ইখতিয়ার (স্বাধীনতা) দিয়েছেন যে, (১) দুনিয়ার সম্পদ (প্রাচুর্য) দান করা, (২) এবং তার নিজস্ব অবস্থায় বহাল থাকা। সুতরাং এ বান্দা আল্লাহর নিকট যা আছে তা বেছে নিলেন। এ কথা শুনে আবূ বাকর (রাযিঃ) কান্নাকাটি করতে লাগলেন এবং বললেন, আমাদের পিতৃপুরুষ আপনার জন্য উৎসর্গকৃত হোক। ইখতিয়ারপ্রাপ্ত এ বান্দাটি ছিলেন স্বয়ং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে আবূ বাকরই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ছিলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উপর সর্বাধিক অনুগ্রহ আবূ বাকরের- সম্পদের ও সঙ্গ দানেও। আমি যদি কাউকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে গ্রহণ করতাম তাহলে আবূ বকরকেই করতাম। এখন তো ইসলামী ভ্রাতৃত্বই রয়েছে। মসজিদের চতুস্পার্শে প্রবেশপথ যেন বন্ধ থাকে, শুধু আবূ বাকরের দ্বার উন্মুক্ত থাকবে। (মুসলিম ৬০৬.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৯৫৪, ইসলামিক সেন্টার ৫৯৯৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রথম হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, দুনিয়ার সকলের থেকে এমনকি নিজের জীবনের চেয়েও রাসুলুল্লাহ সাঃ কে বেশি মুহাব্বত করতে হবে।

২য় হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর এতো ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তিনি আবু বকর রাঃ নিজের বন্ধু বানাননি।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
দুনিয়ার সকলের চাইতে আল্লাহ ও রাসুলকেই সব চেয়ে বেশি মুহাব্বত করতে হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত বোন আপনাকে যেসব কথা বলছে,এগুলো সবই পাগলামি।
মূলত স্বামী,সন্তান,সংসার হওয়ার পর বাস্তব জীবনে এসে প্রকাশ পাবে যে আগের কথা গুলি পাগলামিই ছিলো।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার যেহেতু কোবো দোষ নেই,তাই এক্ষেত্রে আপনার বিচার আলাহর কাছে দিলে কোনো সমস্যা নেই।
এতে আপনার কোনো ক্ষতি হবেনা।
আপনি নিশ্চিন্ত মনে থাকুন, এসব বিষয় নিয়ে ভাববেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...