আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (68 points)
১.কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীকে বলে " আমাকে ছেড়ে দাও" আর স্বামী তার বউ এর না বুঝেই বলে দেয় " ওকে/আচ্ছা" এতে কি সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে?

২. আজকে আমার বউ অসুস্থ থাকার পরেও বাইরে খেতে যাওয়ার কথা বলায় বলে"তুমি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাও" বলে আরেটা কি জানি বলে আমি বুঝি নাই, না বুঝে বলে দেই "আচ্ছা/ওকে"  তার পর থেকে আমার মনে ওসওয়াসা শুরু হয়েছে, তাক তখন জিগ্যাস করি নাই কি বলেছে, এখন মাথায় আসছে তাকে কি জিগ্যেস করা দরকার? বিষয়টা এট্টু অস্বাভাবিক তাছাড়া মনে আছপ কি না কে জানে?না জিগ্যেস করলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

৩. আজকে এক হিন্দু ছেলে, (জুনিয়র)  হঠাৎ আমাকে দেখে সমানে এসে দুই হাত উপরে  তুলে কিছু মাথা নুয়ায় (রুকুর মতো এতো না) তখন আমি "ধুর মিয়া/,এই মিয়া!!!" এভাবে একটা কথা বলি। তার পর বললাম, এটা কি করো,মুখে কিছু হাসি ছিলো হয়তো, তবে মনে মনে বিরক্ত হয়েছিলাম তার কাজে, পরে সে বলে সালাম দিচ্ছি, পরে তার সাথে এই বিষয়ে কথা না বলে মটরে পানি নাই কেনো সেই বিষয়ে কথা বলে হাসি মুখে চলে আসি। এর ফলে কি কুফর হবে? এভাবে এই কাজ করায় আমি যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছি, এবং এসব কোনো ণানবেই সমর্থন দিচ্ছি না।

৪. মনে মনে কেনায়া/সরিহ/ শর্তযুক্ত, তালা* এর কথা বলার সময় যদি তার যদি অন্য কথা বলা/কাজ করার দরূন জিহ্বা নড়ে, মুখ নড়ে, অন্য শব্দ বের হয়। এতে কি তালা* হবে?

৫. " প্রতিদিন তোমার ডাকে সূর্য হাসে, ও আমার দেশ" এই গানের লাইন গাইলে কি কুফর হবে?

৬. আমার বউ জানতো না সাদাস্রাব নাপাক, এবং স্রাব লাগানো কাপড়ে অবস্থায়, অনেক নামাজ পরেছে, এখন কি করনীয় তার?

৭. https://ifatwa.info/74769/
এই লিংকে একজনকে বলেছিলেন যে আল্লাহ সাক্ষী এটা করবো না বললে শপথ/কসম হয়ে যাবে।

আমি একই রকম বলেছিলাম,  তখন আমাকে বলেছিলেন লাগবে না,( https://ifatwa.info/53380/?show=53380#q53380 ) সে আবার কমেন্ট ও করেছে।আসলে কি কসম ভঙ্গ হয়েছে না কি হয় নি, দুই রকম বলায় কনফিউশানে পরে গেছি কি করবো শায়েখ?
৮. আমার মনে হচ্ছে আমি একদিন আমার বউকে বলেছিলাম একটা হোটেল/রেস্টুরেন্ট উদ্দেশ্য  করে বলেছিলাম "আল্লাহ সাক্ষী কখনোই এইখানে তোমার সাথে অন্তরঙ্গ হবো না / তোমার সাথে এইসব করবো
 না"
এই খানে বলতে ওই জায়গাটাই বুঝিয়েছিলাম, এর ফলে কি ইলা হয়েছিলো?

৯. ৮ এর ক্ষেত্রে আল্লাহর কসম বললে কি ইলা হয়ে যেতো?

১০. সর্বোপরি আল্লাহ সাক্ষী এটা করবো না বললে কি কাফফারা চলে আসবে? আপনার বলা অনুযায়ী  আমি তো প্রথমে জানতাম এটায় শপথ হবে না, বুঝতেছিনা কি করবো।
১১.ইলার কসম করে ফেললে  পরে স্বামী যদি তার বউএর সাথে সহবাস না করে৷ এমনিই কাছাকাছি এসে স্বামীসুলভ স্পর্শ করে এতে কি ইলা ভঙ্গ হয়?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ,যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়। তিন তালাকের নিয়ত করলে তিন তালাক পতিত হয়। 
যদি দুই তালাকের নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হয়।
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে এতে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবেনা।

(০২)
না জিজ্ঞাসা করলে বিবাহে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এর ফলে আপনার কুফর হবেনা।

(০৪)
এতে তালাক হবেনা। 

(০৫)
এই গানের লাইন গাইলে কুফর হবেনা।

(০৬)
সেই নামাজ গুলির সংখ্যা অনুমানিক একটি হিসাব করে কাজা আদায় করতে হবে।

(০৭)
এক্ষেত্রে কসম হবে।
তাই কসম ভঙ্গ হলে কাফফারা আদায় করতে হবে।

(০৮)
এর ফলে ঈলা হবেনা।

(০৯)
 ৮ এর ক্ষেত্রে আল্লাহর কসম বললে ইলা হয়ে যেতোনা।

(১০)
এর দরুন কসম হবে।
তাই সেই কসম ভেঙ্গে ফেললে কাফফারা আবশ্যকতার হবে।

(১১)
এতে ঈলা ভঙ্গ হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...