বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(সিসি টিভি সম্পর্কে সংগৃহিত কিছু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা)
মূলতঃ টি.ভি, ভি.সি.আর, সি.সি.টি.ভিতে প্রদর্শিত দৃশ্যাবলী অবশ্যই ছবির অন্তর্ভূক্ত| কেউ কেউ ছবির শরয়ী ও বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা না জানার কারণে এবং টি.ভি, ভি.সি.আর, সি.সি.টি.ভি সম্পর্কে সঠিক ও পর্যাপ্ত ইলম না থাকার কারণে বলে থাকে যে, টি.ভি, ভি.সি.আর, সি.সি.টি.ভিতে দৃশ্যমান দৃশ্যাবলী ছবি নয়| (নাউযুবিল্লাহ্)
তাদের এ বক্তব্য ও ধারণা সম্পূর্ণই ভুল, অবান্তর ও দলীলবিহীন| বস্তুত ‘ছবির’ শরয়ী ও বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন তুলে ধরলে সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হবে যে, টি.ভি, ভি.সি.আর, সি.সি.টি.ভিতে প্রদর্শিত দৃশ্যাবলী অবশ্যই ‘ছবি’| তাই নিম্নে ‘ছবির’ সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো|
ছবির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ
আলোর প্রতিফলন বা প্রতিসরণ ব্যতীত অন্য যে কোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন, যদি কোন বস্তু বা জীব যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয়, তবে সেই আকার আকৃতিটিকে শরীয়তের দৃষ্টিতে উহার ছবি বলে| পক্ষান্তরে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন বস্তু বা জীব যেখানেই যে অবস্থায়ই থাকুক, আলোর প্রতিফলন বা প্রতিসরণ বা উভয়ের মাধ্যমে যদি তা যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয় তবে সেই আকার আকৃতিটি ছবি নয়|
ছবির ধারনাকে ভালভাবে বোঝানোর জন্য আনুষাঙ্গিক কিছু বিষয় আলোচনা করা হল|
(ক) আলোর প্রতিফলণঃ
আলোকরশ্মি যখন বায়ু বা অন্য কোন স্বচ্ছ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোন মাধ্যমে বাধা পায়, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ তল থেকে কিছু পরিমান আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে| আলোর বাধা পেয়ে এই ফিরে আসাকে ‘আলোর প্রতিফলণ’ বলে|
আরো সূক্ষ্মভাবে ব্যাখ্যা করলে বলা যায় যে, আলো হচ্ছে এক প্রকার Electromagnetic wave এই Wave এর নির্দিষ্ট Frequency থাকে|
আলোর ক্ষুদ্রতম অংশকে বলে ফোটন (Photon)| এই আলো যখন কোন বস্তুর উপর পড়ে তখন সেই বস্তু থেকে অসংখ্য প্রতিফলিত ‘ফোটন’ বের হয়| যাদের Frequency ভিন্ন রকম| ফলে আমরা বস্তুটির বিভিন্ন অংশকে বিভিন্ন রকম দেখতে পাই| অর্থাৎ বস্তুটিকে আমরা হুবহু ঐ বস্তুর মত দেখতে পাই| আলোর এই প্রতিফলণ নির্ভর করে প্রতিফলকের গুণাগুণের উপর| এগুলো হল-
(১) প্রতিফলকের স্বচ্ছতা ও মসৃণতা
(২) আলোর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করা এবং
(৩) প্রতিফলকটির আলো শোষন না করার ক্ষমতা|
অর্থাৎ কোন বস্তু যত বেশী স্বচ্ছ ও মসৃণ হবে এবং সেটাতে যদি আলো ভেদ না করতে পারে এবং আলো শোষন করার ক্ষমতা যত কম হবে, সেই বস্তু তত ভাল ‘আলোর প্রতিফলণ’ ঘটাতে পারে | আলোর প্রতিফলণ যত ভাল হবে প্রতিফলিত আলোর Frequency তত কাছাকাছি হবে|
(খ) আলোর প্রতিসরণঃ
আলোকরশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে আলোকরশ্মি দিক পরিবর্তন করে| একে আলোর প্রতিসরণ বলে| একই মাধ্যমে ঘনত্বের তারতম্যের কারণেও প্রতিসরণ হয়ে থাকে|
আলোর প্রতিফলণ ও প্রতিসরনের ব্যবহারঃ
(১) আয়না, স্থির পানি, মসৃণ ধাতব পৃষ্ঠ ইত্যাদিতে আলোর প্রতিফলন হয়| স্থির পানি, মসৃন ধাতব পৃষ্ঠ (যেমন- চকচকে লোহা) ইত্যাদি প্রতিফলকের চেয়ে রূপালী প্রলেপ দেয়া আয়না বেশী ভাল প্রতিফলকের কাজ করে| ফলে সূর্যের আলো আয়নার মধ্যে পড়ে অনেকটা একই Frequency তে প্রতিফলিত হয়| (অবশ্য ১০০% নয়)|
মূলতঃ
আয়না এত ভাল প্রতিফলক, যার মধ্যে অল্প আলো পড়লেও সেটা প্রতিফলিত হতে পারে| ফলে সূর্যের আলো যখন কোন বস্তুর উপর পড়ে, তখন সে বস্তু থেকে যে বিভিন্ন Frequency এর ফোটন বের হয়| সেটা যদি আবার আয়নার মধ্যে পড়ে, তবে এই পূণরায় প্রতিফলিত আলোর ফোটনের Frequency একই হয়| ফলে কোন বস্তুকে সরাসরি যে রকম দেখি, আয়নার মধ্যে সেটাকে একই রকম দেখি|
মূল কথা হলো,
কোন বস্তুকে সরাসরি দেখা এবং আয়নার মধ্যে দেখার মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই| এখানে শুধুমাত্র প্রতিফলনের সংখ্যা একবার বৃদ্ধি পায়|পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ্ পাকের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গামলার পানির মধ্যে এবং দর্পনে নিজ চেহারা মুবারক দেখেছেন|কাজেই আয়না, পানি এবং এ জাতীয় মসৃণ পৃষ্ঠে আমরা যা দেখি, তা কখনও ‘ছবি’ হতে পারেনা।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ছবি ভিডিও হারাম।ঠিকতেমনিভাবে সিসি টিভিও হারাম হওয়ার কথা।তবে সিকিউরিটির স্বার্থে সিসি টিভিকে অনুমোদন দেয়া হয়ে থাকে।সুতরা যতদিন প্রয়োজন থাকবে,ততদিন পর্যন্ত সিসিটিভির ভিডিওকে সংরক্ষিণে রাখা যেতে পারে।যখনই এর প্রয়োজনিয়তা শেষ হয়ে যাবে,তখনই এই সব ভিডিওগুলোকে ডিলেট করে দিতে হবে।মসজিদের ভিতরে বিনা প্রয়োজনে সিসি টিভি লাগানো জায়েয হবে না।বিশেষ কানো প্রয়োজন দেখা দিলে,সিসিটিভি লাগানো যেতে পারে।তবে সিসি টিভিকে মসজিদের বাহিরে রাখাই যুক্তিযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে।
সিসি টিভিকে মসজিদের ভিতরে রাখলে যে নামায হবে না,এমন কোনো কথা শরীয়াতে নাই।