আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)

আছছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ , কেমন আছেন হযরত? আমি দুইটা বিষয়ে আপনার কাছে জানতে চাই , যদি অনুগ্রহ করে জবাব দিতেন। আমরা জানি বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা ভিডিও করা সম্পূর্ণ হারাম । নবীজি সাঃ এর হাদিস ও দারুল উলুম দেওবন্দ এর ফতুয়াতেও এটা স্পস্ট। এখন আমাদের দেশের এখন মাহফিল, মসজিদগুলোতে ভিডিও ক্যামেরার ছড়াছড়ি। এত পরিমাণ ক্যামেরা ব্যাবহার করা হয় যে নাটক , সিনেমা করতেও এত ক্যামেরা ব্যাবহার করা হয় না। কিছু ইমাম ভাইরাল হওয়ার জন্য সাধারণ জনগণকে মক্কা , মদিনার কথা বলে কাটিয়ে দেয় যে, ওরা ভিডিও করলে দোষ নাই আমরা করলে সমস্যা কোথায়। আমরা ইসলামের ইতিহাস পড়ে যা জেনেছি, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসুল সাঃ এর নিকটে গিয়ে ইলমে দ্বীন শিক্ষা করেছেন। আবার আল্লাহ পাক কুরআনে এমন কথাও বলেছেন, তোমরা যেটা জানো না , যারা জানে তাদের থেকে জেনে নাও। আবার ওলামায়েকেরামদের/ সদিকিন বান্দাদের কাছে যাওয়ার কথা আসছে। বেয়াদবি নিবেন না, আমার প্রশ্ন হচ্ছে হযরত, আমরা সবাই তাহলে এই ভিডিও করে আল্লাহ ও নবীর কথার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছি না?? মসজিদে, মাহফিলে এসব করা কি ঠিক হচ্ছে? যেখানে মসজিদ আমাদের ইবাদতের জায়গা , সেখানে আমরা মসজিদগুলো শুটিং স্পট বানিয়ে ফেলছি নাতো ?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 

হাদিস শরীফে এসেছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)

সহিহ হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ

‘প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।’ (বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম ৫৬৬২)

https://www.ifatwa.info/361 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
লাইভ সম্প্রচার জায়েয এটা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই।রেকর্ড ভিডিও নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।মুফতী তাক্বী উসমানী রেকর্ড ভিডিওকে তাসবীর(যা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম)এর আওতাধীন করতে ইতস্ততাবোধ করেছেন।উনি উনার অমরগ্রন্থ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিমে লিখেন,
ﻭﺍﻣﺎ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺘﻰ ﻟﻴﺲ ﻟﻬﺎ ﺛﺒﺎﺕ ﻭﺍﺳﺘﻘﺮﺍﺭ، ﻭﻟﻴﺴﺖ ﻣﻨﻘﻮﺷﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻴﺊ ﻳﺼﻔﺔ ﺩﺍﺋﻤﺔ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺑﺎﻟﻈﻞ ﺍﺷﺒﻪ (ﺍﻟﻰ ﻗﻮﻟﻪ) ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻻ ﺗﺴﺘﻘﻮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﻴﺴﺮﺍ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺸﺎﺷﺔ ﻭﺗﻈﻬﺮ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺑﺘﺮﺗﻴﺒﻬﺎ ﺍﻷﺻﻠﻰ ﺛﻢ ﺗﻔﺘﻰ ﻭﺗﺰﻭﻝ،
ভাবার্থ-ঐ ছবি যার কোনো স্থায়িত্ব বা দীর্ঘতা নেই, এবং যা কোনো জিনিষের উপর স্থায়ী অঙ্কিত ও নয়।সেটা ছায়ার অধিকতম নিকটবর্তী। কেননা ছবি স্কীনে অবশিষ্ট থাকে না বরং তা মেমোরি বা রিলে সংরক্ষিত ধারাবাহিকার সাথে স্কীনে আসে আবার তা দূতই চলে যায়।(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম-৪/১৬৪)

দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো ফিল্ম তৈরী হলে এবং তাতে কোনো প্রকার হারাম জিনিষ যেমন গান-বাদ্য, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকলে, অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল;১/২৩৬)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দারুল উলুম দেওবন্দর ফতোয়া সহ বিশ্বের অনেক ফতোয়া ও ইসলামী স্কলারদের মত হলো এভাবে ভিডিও করাও ও তা দেখাও ছবির নামান্তর, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।

তবে আল্লামা তাকী উসমানী দাঃবাঃ সহ বিশ্বের অনেক বিজ্ঞ স্কলারদের মত হলো দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো বৈধ ভিডিও তৈরী হলে এবং তাতে কোনো প্রকার হারাম জিনিষ যেমন গান-বাদ্য, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকলে, অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।

সুতরাং বিশেষ প্রয়োজন বশত দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো বৈধ ভিডিও তৈরী করা ও দেখা যাবে।
সেই হিসেবে ওয়াজ মাহফিলের ভিডিও করা যাবে।

তবে প্রশ্নের বিবরণ মতে এভাবে ভিডিও নিয়ে বাড়াবাড়ি, মসজিদগুলো শুটিং স্পট বানানোর ন্যায় অবস্থা সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারেনা।
এতে আল্লাহর ঘরের বেহুরমতি হয়,এটি অনেকটা বেয়াদবীরও শামিল।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...