জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আবু দাউদ ৮৬৪,তিরমিজি ৪১৩, নাসায়ী ৪৬৫ নং হাদীসে এসেছে
عن أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : ( إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلَاتُهُ فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ ، فَإِنْ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَيْءٌ قَالَ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ : انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلَ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنْ الْفَرِيضَةِ ؟ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِهِ عَلَى ذَلِكَ ) ،
.
ولفظ أبي داود : ( إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ النَّاسُ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ أَعْمَالِهِمُ الصَّلَاةُ ) ، قَالَ : ( يَقُولُ رَبُّنَا جَلَّ وَعَزَّ لِمَلَائِكَتِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ : انْظُرُوا فِي صَلَاةِ عَبْدِي أَتَمَّهَا أَمْ نَقَصَهَا ؟ فَإِنْ كَانَتْ تَامَّةً كُتِبَتْ لَهُ تَامَّةً ، وَإِنْ كَانَ انْتَقَصَ مِنْهَا شَيْئًا ، قَالَ : انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ ؟ فَإِنْ كَانَ لَهُ تَطَوُّعٌ ، قَالَ : أَتِمُّوا لِعَبْدِي فَرِيضَتَهُ مِنْ تَطَوُّعِهِ ، ثُمَّ تُؤْخَذُ الْأَعْمَالُ عَلَى ذَاكُمْ )
সারমর্মঃ কিয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম বান্দাহর নামাজের হিসাব নেওয়া হবে,,,,
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
প্রত্যেক স্বামীকে তার স্ত্রীর সঙ্গে কেমন আচরণ করেছ এর জবাবদিহিতা করতে হবে কাল কিয়ামতের দিন, এমনভাবে স্ত্রীকেও তার স্বামীর সঙ্গে কেমন আচরণ করেছে এর জবাবদিহিতা করতে কাল কিয়ামতের দিন।
একথা আমরা জানতে পারি তিবরানির হাদিস থেকে ‘হজরত আবু আইয়ুব আনসারী রাযিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে বিরোধ মীমাংসা করা হবে তাহলো এক স্বামী ও তার স্ত্রীর বিরোধ। আল্লাহর শপথ! (সে সময়) স্ত্রীর জিহ্বা কথা বলবে না, বরং তার হাত-পা সাক্ষ্য দিবে, পৃথিবীতে সে তার স্বামীর সঙ্গে এই এই আচরণ করেছে! আর স্বামীর হাত-পাও সাক্ষ্য দিবে যে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এই এই ভালো আচরণ বা এই এই খারাপ আচরণ করেছে। অতঃপর আল্লাহর এজলাসে মনিব ও কর্মচারীসংক্রান্ত মামলা উঠবে। সেদিন কোনো আর্থিক জরিমানা করে বিরোধ মেটানো হবে না। বরং মজলুমকে জালিমের নেক আমলগুলো দিয়ে দেয়া হবে এবং মজলুমের বদ আমলসমূহ জালিমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হবে। অবশেষে প্রতাপশালী অহংকারী অত্যাচারীদের লোহার জিঞ্জিরে পেঁচিয়ে হাজির করা হবে। অনন্তর বলা হবে তাদের দাবড়িয়ে জাহান্নামে নিয়ে যাও।’
স্ত্রীদের সাথে সদাচরণে বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই সতর্ক থাকতেন। এক হাদিসে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ مِنْ أَكْمَلِ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَأَلْطَفُهُمْ بِأَهْلِهِ
হজরত আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন- সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ মুমিন ওই ব্যক্তি যে আচারণে সর্বোত্তম এবং পরিবারের সঙ্গে সদয় আচরণকারী ও বিনয় বন্ধুসুলভ’ (তিরমিযি, হাদিস নং ২৬১৫)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের শেষ ভাষণ তথা বিদায় হজের ভাষণেও স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম ব্যবহারের নসিহত করে দিয়েছে।
ঘোষণা দিলেন
استوصوا بالنساء خيراً
তোমরা নারীদের সঙ্গে সদয় আচরণের উপদশ গ্রহণ করো।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ""কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম স্বামী স্ত্রীর হুকুক তোলা হবে""
মর্মে হাদীস নেই।
তবে উপরে উল্লেখিত হাদীস আছে।
.
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ""আব্দুল্লাহ বিন উবাই এর জানাজার সময় নবীজী তাঁর লালা মোবারক তার মুখে লাগিয়েছেন,ফলে ১০০ জন ইসলাম কবুল করে""
মর্মে হাদীস পাইনি।
★তবে হাদীস শরীফে এসেছে
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, যখন আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুল মারা যায়, তখন তার পুত্র আবদুল্লাহ (তিনি নিষ্ঠাবান সাহাবি ছিলেন) মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে নিবেদন করে, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আপনার জামাটি দান করুন, যাতে আমি তা আমার পিতার কাফন হিসেবে পরিধান করাতে পারি।’ রহমতের নবী নিজের জামা মুবারক দিয়ে দেন। তারপর আবদুল্লাহ নিবেদন করল, ‘আপনি তার জানাজার নামাজও পড়াবেন।’ সাহাবির সন্তুষ্টির জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) তাও কবুল করেন। জানাজার নামাজ আদায় করার পর
لا تصلوا علي أحد منهم مات ولا تقم علي قبره
তাদের (মুনাফিকদের) মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তুমি কখনো তার জন্য জানাজার নামাজ পড়বে না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না। [সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮৪
এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। (মুসলিম শরিফ)
.
(০৩)
হ্যা নবীজীর(সাঃ) ওফাতের সময় মালাকুল মওতের কথোপকথন ও মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া সংক্রান্ত হাদীস আছে।
হাদীস শরীফ টি হলোঃ
دخل الملك جبريل على النبي صلى الله عليه وسلم وقال : ملك الموت بالباب ، ويستأذن أن يدخل عليك ، وما استأذن من أحد قبلك ، فقال له : ائذن له يا جبريل . ودخل ملك الموت وقال : السلام عليك يا رسول الله ، أرسلني الله أخيرك بين البقاء في الدنيا وبين أن تلحق بالله ، فقال النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : بل الرفيق الأعلى ، بل الرفيق الأعلى . فوقف ملك الموت عند رأس النبي صلى الله عليه وسلم ( كما سيقف عند رأس كل واحد منا ) وقال : أيتها الروح الطيبة ، روح محمد بن عبد الله ، اخرجي إلى رضى من الله ورضوان ورب راضٍ غير غضبان
رواها الطبراني في المعجم الكبير (3/129) وفي كتاب الدعاء (1/367) .
قال الهيثمي في مجمع الزوائد (9/35) : فيه عبد الله بن ميمون القداح ، وهو ذاهب الحديث .
وكذلك حكم عليه الحافظ العراقي في تخريج الإحياء (4/560) والحافظ ابن حجر في "أجوبة بعض تلامذته" (1/87) وابن كثير في البداية والنهاية (5/290) وقال الألباني في "السلسلة الضعيفة" (5384) : موضوع .
وحديث آخر يرويه ابن عباس رضي الله عنها ، وفيه ذكر استئذان ملك الموت على النبي صلى الله عليه وسلم في مرضه الذي قبض فيه .
رواه الطبراني في المعجم الكبير (12/141) .
قال الهيثمي في مجمع الزوائد (9/36) : وفيه المختار بن نافع وهو ضعيف .
.
মহানবী (সা) এর মৃত্যুর সময় জিবরাইল (আ.) এসে নবীজিকে সালাম দিলেন, আর বল্লেন হে আল্লাহ‘র রাসুল। আল্লাহ আপনাকে সালাম দিয়েছে, আর জানতে চেয়েছে আপনি কেমন আছেন। আল্লাহ সব জানেন তার পরও আপনি কেমন আছেন সেটা আপনার মুখ থেকে জানতে চেয়েছেন।
নবীজি (সা.) বললেন, আমি বড়ই কষ্টের ভিতর আছি, অসুস্হ অবস্থায় আছি। তখন জিবরাইল (আ.) বললেন, ইয়া রাসুলল্লাহ (সা.) আমার সাথে আজ একজন নতুন ফেরেশতা এসেছে, যে ফেরেশতা কোন মানুষের কাছে আসার জন্য কোন দিন অনুমতি চায় নাই, আর কোনদিন অনুমতি চাইবেও না, শুধু আপনার অনুমতি চায় আপনার কাছে আসার জন্য।
আর সে ফেরেস্তার নাম মালাকুল মউত, মালাকুল মউত রাসুলের (সা) অনুমতি নিয়ে রাসুলের (সা.) জান মোবারকের কাছে এসে সালাম দিলেন, বললেন ইয়া রাসুলল্লাহ(সা.), আমি আদম (আ.) থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত যত মানুষের জান কবচ করেছি, আর কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের জান কবচ করবো কারো কাছে অনুমতি চাইনি আর চাওয়াও আমার লাগবে না, কিন্তু আজকে আসার সময় আল্লাহ বলেছেন আমি যেন আপনার অনুমতি চাই, নবীজি বললেন মালাকুল মউত আমি যদি অনুমতি না দেই? মালাকুল মউত বলে ইয়া রাসুলল্লাহ আল্লাহ বলেছেন যদি অনুমতি না পাও ফিরে এসো।