আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in সালাত(Prayer) by (43 points)
আসসালামু আলাইকুম
১। জামাতের সালাতে যদি ১ বা একাধিক রাকাত ছুটে যাওয়া অবস্থায় যুক্ত হই, এবং শেষে মন ভুলে একদিকে সালাম ফিরিয়ে মনে পরে যে আমার ১ রাকাত বাকি আছে, তখন করনীয় কি?
সেই অবস্থায় ২য় দিকে সালাম না ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে সাহু সিজদা দিয়ে নিলে হবে?
২। সিজদায় পড়া যায় এমন সুন্দর দোআ জানালে উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

وَعَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ اَنَّه غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ غَزْوَةَ تَبُوْكَ قَالَ الْمُغِيْرَةُ فَتَبَرَّزَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قِبَلَ الْغَائِطِ فَحَمَلْتُ مَعَه اِدَوَاةً قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَمَّا رَجَعَ اَخَذْتُ اُهْرِيْقُ عَلى يَدَيْهِ مِنَ الاِدَاوَةِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَه وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِّنْ صُوْفٍ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَاَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَاَلْقَى الْجُبَّةَ عَلى مَنْكِبَيْهِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ مَسَحَ بِنَاصِيَتِه وَعَلَى الْعِمَامَةِ ثُمَّ اَهْوَيْتُ لَانْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَاِنِّىْ اَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ثُمَّ رَكِبَ وَرَكَبْتُ فَانْتَهَيْنَا اِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوْا اِلَى الصَّلَاةِ وَيُصَلِّىْ بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ وَّقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا اَحَسَّ بالنَّبِىِّ ﷺ ذَهَبَ يَتَاَخَّرُ فَاَوْمَا إِلَيْهِ فََاَدْرَكَ النَّبِىُّ ﷺ اِحْدَىِ الرَّكْعَتَيْنِ مَعَه فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِىُّ ﷺ وَقُمْتُ مَعَه فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِىْ سَبَقَتْنَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ 

মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের (ফজরের) সলাতের আগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দু’টি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দু’টি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দু’টি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ- উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ) তাদের সলাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্‘আতের মধ্যে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্‘আত ছুটে যাওয়া সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আমরা আদায় করলাম।
(মুসলিম ২৭৪, নাসায়ী ১০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১৪৩, ইবনু মাজাহ্ ১২৩৬।)

★মাসবুক ব্যাক্তি যদি ইচ্ছাপূর্বক ভাবে ইমামের সাথে সালাম ফিরায়,তাহলে তার নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,
যদি মাসবুক ব্যাক্তি ভুলক্রমে এক দিকে সালাম ফিরায়,তারপর সাথে সাথে নিজের অবশিষ্ট নামাজ আদায় করার জন্য দাড়িয়ে যায়, তাহলে যদি হুবহু ইমামের সালামের সাথে সালাম ফিরিয়ে থাকে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। 
আর যদি ইমামের সালামের হুবহু সাথে সাথে না হয়ে কিছুটা পরে হয়,(যেমনটি সাধারণত হয়ে থাকে) তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।
,
যদি মাসবুক উভয় দিকেই ভুলক্রমে সালাম ফিরায়,এবং স্বরন আসা মাত্র নিজের অবশিষ্ট নামাজ আদায়ের জন্য দাড়িয়ে যায়, তাহলে যদি নামাজ ফাসেদ কারী কোনো কাজ (কথা বলা ইত্যাদি) না করে থাকে,তাহলে দাড়িয়ে নামাজ পূর্ণ  করবে।
শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবে।

فتاوی شامی  :
"(قَوْلُهُ: وَالْمَسْبُوقُ يَسْجُدُ مَعَ إمَامِهِ) ... فَإِنْ سَلَّمَ فَإِنْ كَانَ عَامِدًا فَسَدَتْ وَإِلَّا لَا، وَلَا سُجُودَ عَلَيْهِ إنْ سَلَّمَ سَهْوًا قَبْلَ الْإِمَامِ أَوْ مَعَهُ؛ وَإِنْ سَلَّمَ بَعْدَهُ لَزِمَهُ لِكَوْنِهِ  مُنْفَرِدًا حِينَئِذٍ، بَحْرٌ، وَأَرَادَ بِالْمَعِيَّةِ الْمُقَارَنَةَ وَهُوَ نَادِرُ الْوُقُوعِ، كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. وَفِيهِ: وَلَوْ سَلَّمَ عَلَى ظَنِّ أَنَّ عَلَيْهِ أَنْ يُسَلِّمَ فَهُوَ سَلَامُ عَمْدٍ يَمْنَعُ الْبِنَاءَ". ( باب سجود السهو، ٢/ ٨٢ - ٨٣)
সারমর্মঃ
মাসবুক ব্যাক্তি যদি ইমামের সাথে সালাম ফিরায়, তাহলে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে হলে এই নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মাসবুক ব্যাক্তি ভুলক্রমে এক দিকে সালাম ফিরায়,তারপর সাথে সাথে নিজের অবশিষ্ট নামাজ আদায় করার জন্য দাড়িয়ে যায়, তাহলে যদি হুবহু ইমামের সালামের সাথে সালাম ফিরিয়ে থাকে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা। 
আর যদি ইমামের সালামের হুবহু সাথে সাথে না হয়ে কিছুটা পরে হয়,(যেমনটি সাধারণত হয়ে থাকে) তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি ২য় দিকে সালাম না ফিরিয়েই নিজের ছুটে যাওয়া নামাজ আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে যান,ও শেষে সেজদায়ে সাহি আদায় করেন ,সেক্ষেত্রে আপনার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

(০২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদায় অনেক দোয়া পাঠ করতেনঃ

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}

আপনি উপরোক্ত দোয়া সেজদায় পাঠ করতে পারেন।
সেজদায় নিম্নোক্ত দোয়াও পাঠ করতে পারেনঃ-

ربنا أتنا في الدنيا حسنة وفي الآخرة حسنة وقنا عذاب النار 

আরো দোয়া জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...