জবাবঃ-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল
আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-
ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد، (شرح الفقه الاكبر-199
কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك
হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}
বিস্তারিত জানুনঃ-
আলেমকে গালি দেয়ার কারণ দু’টি হতে পারে।
যথা-
১-ব্যক্তিগত কোন শত্রুতার কারণে।
২-আলেম হবার কারণে।
,
প্রথম প্রকারের ক্ষেত্রে কুফরী হবে না।
কিন্তু যদি আলেম ব্যক্তি আলেম হবার কারণে তাকে গালি দেয়া হয়, তার সাথে শত্রুতা পোষণ করা হয়, তাহলে এটি কুফরী। তার ঈমান নবায়ন করতে হবে বলে অনেক ফুক্বাহায়ে কেরাম ফাতওয়া প্রদান করেছেন।
কারণ, ইলম আল্লাহর গুণ। সেই ইলমের অধিকারী উলামাকে ইলমের কারণে ঘৃণা করা, তাকে গালি দেয়া, পরোক্ষভাবে আল্লাহকেই গালি দেয়া, তাই এটি ঘোরতর বিষয়।
ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ-
وَيُخَافُ عَلَيْهِ الْكُفْرُ إذَا شَتَمَ عَالِمًا، أَوْ فَقِيهًا مِنْ غَيْرِ سَبَبٍ، وَيَكْفُرُ بِقَوْلِهِ لِعَالِمٍ ذَكَرُ الْحِمَارِ فِي اسْتِ عِلْمِك يُرِيدُ عِلْمَ الدِّينِ كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ (الفتاوى الهندية، كتاب السير، الباب التاسع فى احكام المرتدين-2/270، تاتارخانية-5/508)
সারমর্মঃ-
যদি কেহ আলেমকে অথবা ফকিহকে বিনা কারনে গালি দেয়,তার উপর কাফরি ভয় করা হয়।
وفى البزازية: فالاستخفاف بالعلماء لكونهم علماء استخفاف بالعلم والعلم صفة الله تعالى منحة فضلا على خيار عباده ليدلوا خلقه على شريعته نيابة عن رسله فاستخفاف بهذا يعلم انه الى من يعود، (الفتاوى البزازية على هامش الهندية-6/336، مجمع الانهر-2/509
সারমর্মঃ-
আলেমকে আলেম হওয়ার কারনে হেয় প্রতিপন্ন করা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা এটি ইলেমকেই তুচ্ছ মনে করার শামিল। আর ইলম আল্লাহর সিফাত।,,,,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত ব্যাক্তি মসজিদ নির্মান করে দিয়েছেন,বা নির্মান কাজে জান,মাল, সময় ইত্যাদি কোনোভাবে সহযোগিতা করেছেন, বিধায় এই কথা বলেছেন।
আর খতিব সাহেব উক্ত বিষয় নিয়ে জুম্মার বয়ান করাই রেগে গিয়ে খতিব সাহেবকে বকাবকি করেছেন।
সুতরাং এক্ষেত্রে সে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেই খতিবকে সাহেবকে বকাবকি করেছেন।
যদিও এগুলোর কোনোটিই তার জন্য জায়েজ হয়নি,তবে এর দরুন তার ঈমান চলে গিয়েছে, সে মুরতাদ হয়ে গিয়েছে,এমনটি বলার সুযোগ নেই।
লোকটির ঈমান চলে যায়নি।