আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার প্রশ্নগুলোঃ-

১॥আল্লাহ তায়ালা আত্মীয়তার সম্পর্ক ফরজ করেছেন।এই আত্মীয় আসলে কারা??কতটুকু পর্যন্ত আমাকে সম্পর্ক রক্ষা করে চলতেই হবে ??

বাবা,মা,ভাই-বোন,ভাই বোনের ছেলে-মেয়ে,
দাদা-দাদী,নানা-নানী,
আপন চাচা-ফুফু,চাচাতো-ফুপাতো ভাই বোন,
আপন মামা-খালা,মামাতো-খালাতো ভাই বোন,

এর বাহিরে আর কেউ আছে কি?
সৎ নানী,মামা খালাদের সাথে কি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ফরজ?

২॥আমি আমার বাবা কর্তৃক সেক্সুয়াল অ্যাবিউজের স্বীকার।আমাদের সহবাস হয় নি,উনি আমাকে বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেছেন এবং আমার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াই বেঁচে যাই আমি। উনার সম্পর্কে আমি এরূপ ধারণা রাখি উনি একই কাজ আবার করবেন।যেহেতু উনি আমার বাবা, তার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি।আমি অনেকবার চেয়েছি মাফ করে দিতে না পারলেও কোনো রকম সম্পর্ক রক্ষা করে চলবো।কিন্তু তীব্র ভয় আর ঘৃণার কারণে কথা বললেও আমি স্বাভাবিক থাকতে পারি না,প্যানিকড হয়ে যাই।আর এত বড় একটা অন্যায় করার পর ও উনার মাঝে কোনো অনুশোচনাবোধ নাই,উস্তাদ আমি কি উনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবো ??

আর আমার মায়ের সাথে উনার বৈবাহিক সম্পর্ক কি এখনো আছে ??

৩॥আমি হারাম সম্পর্কে ছিলাম।সেই ছেলের সাথে আমি যিনা করে ফেলেছি।আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি,আমার এখন করণীয় কি ?আমার জন্য কোনো আশা আছে আল্লাহর মাফ পাবার ??

৪॥উস্তাদ আমি সমকামীদের মতো আচরণ করে ফেলেছিলাম।তখন জানতাম ও না এটা সমকামিতা।আমি লজ্জিত এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।আমার বিধান কি ??

৫॥আমি একটা হারাম সম্পর্কে ছিলাম।এই ছেলের সাথে আমার বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক না থাকলেও আমরা পরস্পর ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম।আমরা এখন বিবাহিত। আমাদের বিবাহ কি বৈধ।

৬॥আমার বাবা ব্যাঙ্কে টাকা রেখেছেন যা সুদসহ প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ হয়ে গেছে।সেই টাকা থেকে তারা আমাকে বিয়েতে গয়না দিতে চান।

এখন যদি আমি সুদ না নিয়ে মুল অংশ ও নেই অবশ্যই তারা সুদের টাকাটা নিজেদের প্রয়োজনে লাগাবে।

আমি মুল অংশ না নিয়ে এই নিয়্যাতে সুদের অংশ নিতে পারবো যে--এই টাকা দিয়ে গয়না বানালেও কখনো পড়বো না,পরবর্তীতে তা বিক্রি করে কোনো সওয়াবের আশা না করে  টাকাগুলো দান করে দিবো যেন সুদের অংশ কাউকেই ব্যবহার করতে না হয়।

৭॥আমার বাবা একজন সরকারী চাকুরীজীবী।উনি সেনাবাহিনীর আনসার পদে আছেন।সেখানে জিপি ফান্ড নামে একধরনের সুদী ফান্ড আছে যেখানে টাকা জমা রাখা বাধ্যতামূলক।রিটায়ার্ডের টাকার সাথে এই টাকা যোগ করে দেওয়া হবে।

আমার প্রশ্ন এই টাকার অংশ কি আমার জন্য হালাল হবে ??উনি যে চাকুরী করেন তা কি হালাল??যদি হালাল চাকুরী না হয় -আমি একজন মেয়ে যে নিজের ভরণপোষণের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে বাবার ওপর নির্ভরশীল। আমার করণীয় কি ??


৮॥আমাদের যে বাড়ি বানানো হয়েছে তার মাঝে সুদের টাকা আছে। এই বাড়িতে বসবাস কি জায়েজ??না হলে করণীয় কি ?

৯॥বারো বছরের কোনো নামাজ রোজা আদায় হয় নি ফরজ গোসল সম্পর্কে না জানা এবং তিলওয়াত সহীহ না থাকার কারণে।চারটা রোজা ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।করণীয় কি ??


<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_230329_002858_097.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
যারা যেদিক হতেই আত্মীয় হোক,কোনো আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা।

কথা না বলা আর সম্পর্ক ছিন্ন এক বিষয় নয়।
ঝগড়াঝাটি করে সম্পর্ক ছিন্ন করা এখানে উদ্দেশ্য। 
দূরে থাকার দরুন কথাবার্তা না হওয়া এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
,
প্রত্যেহ কথা৷ বলাও জরুরী নয়।
গায়রে মাহরাম আত্মীয়ের সাথে তো বিনা প্রয়োজনে কথাই বলা যাবেনা।

আত্নীয়তার পরিধি সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০২)
https://ifatwa.info/18346/ ফতোয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ 
আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)

আরো জানুনঃ 

দারুল উলুম  দেওবন্দ এর 178050 নং ফতোয়াতে এসেছে যে কোনো মুসলমানের সাথে হিংসা ইত্যাদির কারনে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই। 
তবে সে যদি দীনের লাইন থেকে দূরে সরে যায়,মদ খায়,জুয়া খেলে,যেনা করে,সুদ খায়।
বুঝানোর পরেও বুঝেনা,ইসলাম মানেনা।
,
তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ আছে। 
তবে  স্থায়ীভাবে নয়,সাময়িক ভাবে। 
(ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ৮/২৭০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপাতত সাময়ীক ভাবে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবেন।
তবে কোনো সময় যদি মনে হয় যে অনেক ভালো হয়ে গিয়েছে,সেক্ষেত্রে সেই সময় সম্পর্ক বজায় রাখবেন।

তিনি যদি আপনার শরীরের কোনো অনাবৃত স্থানে স্পর্শ করে থাকেন,মাঝে যদি কোনো কাপড় না থাকে,আর যদি উত্তেজনায় তার বিশেষ অঙ্গ দাঁড়িয়ে গিয়ে থাকে,আর উক্ত সময় যদি আপনি বালেগাহ হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার মায়ের সাথে উনার বৈবাহিক সম্পর্ক নেই।

হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হওয়ার শর্তাবলী জানুনঃ- 

(০৩)
গুনাহ থেকে সম্পূর্ণ ফিরে এসে আল্লাহর কাছে ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ না করার ওয়াদা করে খালেস দিলে তওবা করতে হবে।
তাহলে আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৪)
খালেস দিলে তওবা করতে হবে।
তাহলে আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৫)
আপনাদের বিবাহ বৈধ।

(০৬)
হ্যাঁ, আপনি এই নিয়্যাতে সুদের অংশ নিতে পারবেন।

(০৭)
উনি যে চাকুরী করেন সেটি হালাল।
তার বেতন হালাল।
তবে সেই ফান্ডের সুদের টাকা তার ব্যবহার জায়েজ হবেনা।

সুদী টাকা থেকে তিনি সংসার চালালে আপনি বিবাহের আগ পর্যন্ত তার থেকে ভরনপোষণ নিতে পারবেন।

আর যদি তিন বেতন থেকে বা অন্য কোনো হালাল টাকা হতে সংসার চালান,সেক্ষেত্রে তিনি চাইলে সব সময় তার থেকে ভরনপোষণ নিতে পারবেন।

(০৮)
যতটুকু টাকা সুদের আছে,ততুটুকু গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০৯)
উক্ত বারো বছরের সমস্ত নামাজ রোযার কাজা আদায় করতে হবে।

এ সমস্ত কাজা নামাজ আদায়ের পদ্ধতি জানুনঃ- 

রোযা রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙ্গে ফেলার দরুন আপনাকে কাফফারা আদায় করতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...