আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
285 views
in ওয়াসওয়াসা by (14 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

আমার মারাত্তক আকারের ওসিডি বা ওয়াসওয়াসা আছে। ঈমান ও তালাক নিয়ে সব সময় মনে সন্দেহ আসতে থাকে। তালকের ওয়াসওয়াসা মন থেকে সরাতে পারি না।

(১) সাধারনভাবে আমার স্ত্রী যদি অভিমান করে কিছুদিন বাড়িতে থেকে আসবে এই উদ্দেশ্য নিয়ে আমি বাড়ি থেকে চলে যাবো বলে, তাহলে আমি ডাইরেক্ট 'যাও' বলতে পারি না। কারন,আমার মনে হয় আমার স্ত্রী একেবারে আমার বাসা ছেড়ে চলে যেতে চাইছে। তাই কেনায়া শব্দ হয়ে যাবে বলে ভয়ে 'যাও' বলতে পারি না। তাই আমার স্ত্রী বাসায় চলে যাবে বলার পর আমি বলি যে, এখন যাওয়া যাবে না। ঈদের পর আমার সাথে যাবা, যেয়ে ৩ দিন থাকবা। তারপর ৩ দিন পর আমি যেয়ে নিয়ে আসবো। এভাবে বিস্তারিত বলতে হয়। নাহলে আমার কেনায়া শব্দ হয়ে যাবে বলে ভয় লাগে।
গত কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রীর সাথে আমার গন্ডোগোল হয়েছে। আমি আমার স্ত্রী গায়ে হাত তুলেছি। সেসময় আমার স্ত্রী বলছিল যে, আমি চলে যাবো, এখানে থাকবো না।

কিন্তু এই কথার উওরে আমি তাকে 'যাও' বলিনি।
এখন আলহামদুলিল্লাহ সব ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু আমার স্ত্রী মাঝে মাঝে বলছে যে, তার গায়ে হাত উঠানোর জন্য তার পিঠে ব্যাথা হয়েছে। তারপর, গতকাল রাতে সহবাস করার সময় আমার স্ত্রী আমাকে বললো যে, আমার আব্বু রোজার ভিতরে আসবে। যদি আমার পিঠের ব্যাথা না সারে তাহলে আমি আমার আব্বুর সাথে চলে যাবো।
একথা শুনে আমি বললাম যে, ঈদের পর যাবা। আমার সাথে যাবা, যেয়ে ৩ দিন থাকবা, তারপর আমি যেয়ে নিয়ে আসবো।

'ঈদের পর যাবা' যখন বলি তখন মনে হচ্ছিল, আমি মনে হয় তার বাবার সাথে ঈদের পর যাবার কথা বললাম। তখন আমি বললাম যে, আমার সাথে যাবা, যেয়ে ৩ দিন থাকবা, তারপর আমি যেয়ে নিয়ে আসবো।

এই কথা বলার পর থেকে মনে হচ্ছে যে, আমার এটা কেনায়া শব্দ হয়ে গেল মনে হয়। এমন সন্দেহ মনে আসছে। এজন্য আমি কিছুক্ষন পর আবার আমার স্ত্রীকে জিগ্গাসা করলাম যে, তুমি কি বাবার সাথে চলে যাবা বলতে একবারে ঈদের পরে আসতে চাচ্ছো ?
তারপর আমার স্ত্রীর কথা শুনে বুঝলাম যে, হ্যা সেটায় তার উদ্দেশ্য ছিল। তাছাড়া আমাকে ছেড়ে চলে যাবে এমন মিন করেনি।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(২) ভাত খাওয়ার সময় যদি প্লেটে ভাত রাখি তাহলে মনে হয় আমি ভাত চেটে পরিস্কার করে খাওয়াকে সুন্নাত মনে করি না, তাই প্লেটে ভাত রাখছি।

আবার, সম্পূর্ন ভাত খাওয়ার সময় মনে হয় যে,  সুন্নাতের খেলাপ অন্য সময় করবো। এখন প্লেটের সব ভাত গুলা খাই। এমন কথা মনে আসে। এজন্য অনেক সময় জোর করে খাওয়ার ও চেষ্টা করি। জোর করলে বমি বমি ভাব লাগে। এতে কি ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

উপরে 'চেটে খাওয়া' শব্দটি লেখার সময় মনে হচ্ছিল শব্দটা কেমন জানি ভাল দেখাচ্ছে না। তখন আবার মনে হলো যে, চেটে খাওয়া সুন্নাত। এরকম মনে হওয়াতে কি ঈমানের কোন ক্ষতি হবে শায়েখ??

(৩) এটা করলে কাফের হয়ে যাবো, ওটা করলে কাফের হয়ে যাবো, এমন অনেক রকমের কথা আমার মনে আসে। আমার খারাপ ভিডিও দেখার বাজে অভ্যাস আছে। গতকাল খারাপ ভিডিও দেখার সময় মনে হচ্ছিল যে, খারাপ ভিডিও বা হস্তমৈথুন করলে আমি কাফের হয়ে যাবো। এমন কথা মনে আসছিল। তারপরেও আমি এই খারাপ কাজটি করে ফেলেছি। এবং করার পর মনে হচ্ছিল যে, আমি কাফের হয়ে গেছি।

এতে কি আমি কাফের হয়ে গেলাম শায়েখ??

(৪) গোপাল ভাড়ের একটা কাটুন দেখে একটু ইমোশনাল হয়ে গেছিলাম। কান্না কান্না লাগছিল। তখন মনের ভিতর গোপাল ভাড়কে নিয়ে আজে বাজে চিন্তা আসছিল। মনে হচ্ছিল যে, গোপাল ভাড় আল্লা*। এমন কথা মনে আসছিল। এমন আজে বাজে চিন্তা আমার বিভিন্ন মানুষকে নিয়েও হয়। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(5) অফিসের একটা কাগজ পা দিয়ে সরাতে যাবো ঠিক সেসময় আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন কুরআন মাজিদ পা দিয়ে সরাতে যাচ্চি। তাই আমি কাগজটি পা দিয়ে না সরিয়ে হাত দিয়ে পাশে ফেলে দিলাম। এখন মনে হচ্ছে আমি মনে হয় সামান্য কাগজকে কোরআন মাজিদ মনে করলাম। এজন্য কি আমার ঈমানে কোন সমস্যা হবে শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৬১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

 তালাকের ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/835

ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/1379


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার এই কথার দ্বারা তালাক হবে না।

(২)
এতে ঈমানের কোনো সমস্যা হবে না।

(৩)
এতে আপনি কাফির হবেন না।

(৪)
এতেও আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...