আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
348 views
in সাওম (Fasting) by (4 points)
আমি গতকাল রোজা রাখার নিয়ত করি আজকের জন্য। খাবারও তৈরি করে রাখা হয়। 4:00 টায় আলার্ম দিয়েছিলাম।নিয়ত ছিল, "ওঠলে রোজা রাখব।" কিন্তু 4:00 টায় আ্যলার্ম বাজলে আ্যলার্ম অফ করে দেই, আর একটু  শুয়ে থাকার জন্য। কিন্তু পরে আবার 5:00 টায় উঠি ,  তখনতো সহেরির সময় শেষ। পরে আজ আর রোজা রাখিনি।

১.এখন আমার জন্য এই রোজা না রাখাটা কি গুনাহ হলো?

২.এই নফল রোজা পরে আবার আদায় করা কি আমার জন্য ওয়াজিব হবে?

3.আর সেহেরি না খেতে পারলে তো নফল রোজা রাখার নিয়ততো এমনেই থাকে না। তাহলে কি এই রোজা আমার আবার রাখতে হবে ওয়াজিব হিসেবে?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/35940/?show=35940#q35940 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهَا قَالَتْ: دَخَلَ عَلَىَّ النَّبِىِّ ﷺ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ: هَلْ عِنْدَكُمْ شَىْءٌ؟ فَقُلْنَا: لَا قَالَ: فَإِنِّىْ إِذًا صَائِمٌ. ثُمَّ أَتَانَا يَوْمًا اٰخَرَ فَقُلْنَا: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ أُهْدِىَ لَنَا حَيْسٌ فَقَالَ: أَرِينِيهِ فَلَقَدْ أَصْبَحْتُ صَائِمًا فَأَكَلَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। তিনি বললেন, তোমার কাছে কী (খাবার) কিছু আছে? আমি বললাম, না (কিছুতো নেই) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে আমি (আজ) সিয়াম পালন করবো! এরপর আর একদিন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে এলেন। (জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কী খাবার কিছু আছে?) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের জন্য ‘হায়স’ হাদিয়্যাহ্ এসেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আনো, আমাকে দেখাও। আমি সকাল থেকে সওম রেখেছি। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘হায়স’ খেয়ে নিলেন।

সহীহ  মুসলিম ১১৫৪, তিরমিযী ৭৩৩, নাসায়ী ২৩২৭, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২১৪৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৯১৩।

 

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ

আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেন, আলোচ্য হাদীস প্রমাণ করে যে, কোন ধরনের ওযর ছাড়াই নফল সিয়াম ভঙ্গ করা জায়িয এবং এর উপর অধিকাংশ ‘উলামায়ে আহনাফদের মত রয়েছে। কিন্তু তারা কাযা ওয়াজিব করেছেন। ‘আল্লামা ইবনুল হাম্মাম বলেন, যখন নফল সিয়াম পালনকারিণী রমণীর ঋতুস্রাব আসার কারণে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সিয়াম ভঙ্গ হবে, তখন অবশ্যই তা কাযা করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের ‘উলামাগণের মাঝে কোন মতপার্থক্য নেই। তবে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর বিপরীত মত দিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর মতে কাযা ওয়াজিব নয়।

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/35940/?show=35940#q35940

 

১. রমজানের রোজা, নির্দিষ্ট মানতের রোজা ও নফল রোজার নিয়ত রাত থেকে শুরু করে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত করা যাবে। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ رَجُلاً يُنَادِي فِي النَّاسِ، يَوْمَ عَاشُورَاءَ " أَنْ مَنْ أَكَلَ فَلْيُتِمَّ أَوْ فَلْيَصُمْ، وَمَنْ لَمْ يَأْكُلْ فَلاَ يَأْكُلْ ".

সালমা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ‘আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে এ বলে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠালেন, যে ব্যাক্তি খেয়ে ফেলেছে সে যেন পূর্ণ করে নেয় অথবা বলেছেন, সে যেন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করে নেয় আর যে এখনো খায়নি সে যেন আর না খায়। সহীহ বুখারী, ১৮০২)

 

আর রমজানের কাজা, সাধারণ মানত, কাফফারা ও যিহারের কাফফারা রোজার নিয়ত রাতে না করলে রোজা বিশুদ্ধ হবে না।

 

হাদীস শরীফে এসেছে। উম্মুল মুমিনীন হাফসা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

 

 من لم يجمع الصيام قبل الفجر فلا صيام له.

যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোযা রাখার নিয়ত করবে না তার রোযা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না।-সুনানে আবু দাউদ ১/৩৩৩

 

২. ফজরের নামাজ সুন্নতসহ  কোন কারণে পড়তে না পারলে উভয়টির কাযা সুর্য উদিত হবার পর আদায় করবে ।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى

অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ لَمْ يُصَلِّ رَكْعَتَيِ الفَجْرِ فَلْيُصَلِّهِمَا بَعْدَ مَا تَطْلُعُ الشَّمْسُ

হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬, হাদীস নং-৪২৩

 

অন্য এক হাদীসে এসেছে-

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ فَاتَتْهُ رَكْعَتَا الْفَجْرِ، فَقَضَاهُمَا بَعْدَ أَنْ طَلَعَتِ الشَّمْسُ

হযরত ইমাম মালেক রহ: বলেন, আমি জেনেছি যে, আবদুল্লাহ বিন ওমর রা: এর ফজরের দুই রাকাআত ছুটে গিয়েছিল। তিনি তা সূর্যোদয়ের পর আদায় করেন। (মুয়াত্তা মালিক-৪৫, হাদীস নং-৪২২)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো গোনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। কারণ, আপনি তো রাতে শুধু নফল রোজা রাখার ইচ্ছা করেছিলেন। রোজা তো রাখা শুরু করেছিলেন না।

২. না, এই নফল রোজা পরে আপনার উপর কাযা করা আবশ্যক নয়। কারণ, আপনি তো রাতে শুধু নফল রোজা রাখার ইচ্ছা করেছিলেন। রোজা তো রাখা শুরু করেছিলেন না। আর নফল নামাজ বা রোজা শুরু করে ভেঙ্গে ফেললে তখন কাযা করা আবশ্যক হয়ে যায়।

৩. না, আর রাখতে হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 159 views
0 votes
1 answer 156 views
0 votes
1 answer 341 views
...