আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ

1. খাওয়ার ক্ষেত্রে সুন্নাহ তো পেটের দুই তৃতীয়াংশ পূর্ণ করা এবং এক ভাগ খালি রাখা। কিন্তু আমার স্বাস্থ্য কম এবং শারীরিক দূর্বলতা রয়েছে।এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য যদি একটু বেশি পরিমাণ খাওয়া-দাওয়া করি তবে কি দোষের কিছু হবে?? অথবা এক্ষেত্রে কেমন খাওয়া-দাওয়া করতে পারি??

2. দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত যে মেলা হয় সেখানে যাওয়া এবং কিছু কিনা কি জায়েজ হবে?
3. মাসজিদে নামাজ পড়তে আসলে অনেককেই দেখি সামনে মাঝ বরাবর মোবাইল রেখে নামাজ পড়েন। আমিও এভাবেই নামাজ পড়ি। এতে কি নামাজের ক্ষতি হয়?

4. চার রাকাত ফরজ নামাজে শেষের দু রাকাতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে রুকুতে যেতে হয়। কিন্তু আমি ভুল করে শেষের রাকাতে ফাতিহার পর "বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম" পরে সূরা ইখলাসের "ক্বুলহু" পড়তেই মনে হলো আমি ভুল করছি। তারপর সাথে সাথেই রুকুতে চলে যাই। পরে সাহু সিজদাও দিইনি। নায়াজটা কি সুদ্ধ হয়েছে?

5. মোবাইলে যে ডিফল্ট মিউজিক রিংটোন থাকে, সেটা সেট করা কি উচিৎ হবে?

6. জুমুআর নামাজের আগে এবং পরে কিবলাল জুমুআ আর বা'দাল জুমুআর চার রাকাত করে যে নামাজ পড়া হয়, সেটা কি সুন্নাহ সম্মত?

7. ক্যাফেইন কি হারাম। যদি হারাম হয়, পেপসি, ফ্রিজ আপ, হাল্ক ইত্যাদি বেভারেজে তো ক্যাফেইন থাকে। সেগুলো খাওয়া কি হারাম হবে?
8. আমি সেজান জুস কোম্পানিতে জব করি। সেখানে হাল্ক নামক বেভারেজ বানানো হয়। সেই বেভারেজে উপাদান হিসেবে ক্যাফেইন ব্যবহার করা হয়। এমন কোম্পানিতে চাকরি করা কি জায়েজ হবে যে কোম্পানিতে ক্যাফেইন দিয়ে কিছু বানানো হয়?? আমি এখন কি করতে পারি? আবার ম্যাংগো জুস-এ Beta- Carotene (E160a) ব্যবহার করা হয়। যেটা Halal Check নামক ই-কোড মোবাইল এপ চেকারে অনুসন্ধান করে দেখলাম এটা Mushbooh মানে মাকরুহ মনে হয়। এটা কি খাওয়া হালাল হবে?

9. আমি ভাইয়ের বাসায় থাকি। ভাই ভাবি কেউ-ই নামাজ পড়েন না। ভাবি পর্দা করেন না। তাই বার বার উনি আমার সামনে পড়েন। আমার পক্ষে অন্য কোনো বাসা নেওয়াও সম্ভব না। এমতাবস্থায় আমি কি করতে পারি?

10. পানি ছাড়া অন্য খাবার দাঁড়িয়ে খাওয়া যাবে?

11. ব্রাকে চাকরি করা জায়েজ হবে?? শুনেছি ব্রাকে ইসলাম বিরোধী অনেক কিছু থাকে। তাই প্রশ্ন করলাম।

1 Answer

0 votes
by (566,940 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পেট ভরে ভাত/খাবার খাওয়া জায়েয আছে। 
,
তবে পেট ভরে যাওয়ার পর আরো বেশি খাওয়া মূলত মাকরুহে তাহরিমি তথা নাজায়েজ ।

হ্যাঁ যদি পেট ভরা থেকে বেশি খাওয়ার উদ্দেশ্য যদি এটা হয় যে  পরিপূর্ণ শক্তি অর্জন করে আগামীকাল রোযা রাখবে,বা মেহমান হয়ে কাহারো কাছে দাওয়াত খাওয়ার সময় অবস্থা যদি এমন হয় যে কম খেলে মেজবান রাগ করবে,তাহলে পেট ভরা থেকে আরো বেশি খাওয়া জায়েয আছে।

অন্যথায় এটা মাকরুহে তাহরিমি।      
ওলামায়ে কেরাম এটাকে মাকরুহে তাহরিমি এই জন্য   বলেছেন যে, যেহেতু আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন যে, আমরা খাই, একেবারে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পর্যন্ত আমরা খাই না এবং নবী (সা.) মূলত তাঁর খাবারের পদ্ধতি যখন বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি এক ভুঁড়িতেই খায়, একদম সাত ভুঁড়ি পরিপূর্ণ করে খায় না।

রাসূল (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি যখন খাবে, তখন তিন ভাগের এক ভাগ রাখবে তাঁর খাবারের জন্য, এক ভাগ রাখবে পানীয়র জন্য, এক ভাগ সে খালি রেখে দেবে, যাতে করে পেটের মধ্যে অন্তত জায়গা থাকে। আর এটা অনেক দিক থেকে স্বাস্থ্যকর। 

চিকিৎসাবিজ্ঞান কিন্তু অধিক আহার সমর্থন করে না। তাই নবী (সা.) মূলত এভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং বলেছেন, ইমানদার ব্যক্তির জন্য এটাই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে নিজের মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পারবে। এটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। তাই এর চেয়ে বেশি পরিতৃপ্ত হয়ে একেবারে গলা পর্যন্ত খাওয়া মূলত ইসলামী পদ্ধতি নয়।
,
নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহকে যে অস্বীকার করেছে, আল্লাহর বিধানকে যে অস্বীকার করেছে, সেই কাফের ব্যক্তিই মূলত একেবারে আকণ্ঠ ভর্তি করে খায়। এটা মূলত ইমানদার ব্যক্তিদের কাজ নয়, ইমানদার ব্যক্তিরা খাবারের ক্ষেত্রে কম খাবে এবং আল্লাহর বিধানটুকু অনুসরণ করবে। আল্লাহর সেই বিধানটা হচ্ছে, ‘তোমরা খাও, পান করো। অপচয় করো না।’

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْكَافِرُ يَأْكُلُ فِي سَبْعَةِ أَمْعَاءٍ وَالْمُؤْمِنُ يَأْكُلُ فِي مِعًى وَاحِدٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي بَصْرَةَ الْغِفَارِيِّ وَأَبِي مُوسَى وَجَهْجَاهٍ الْغِفَارِيِّ وَمَيْمُونَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .

ইবনু উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত পাকস্থলী ভর্তি করে কাফির খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে, আর একটিমাত্র পাকস্থলী ভর্তি করে মুমিন খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে।
(তিরমিজি ১৮১৮) 
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩২৫৭), নাসা-ঈ

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি যদি স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য যদি একটু বেশি পরিমাণ খাওয়া-দাওয়া করেন, তবে দোষের কিছু হবেনা।
এক্ষেত্রে চিকিৎসক দের পরামর্শ মতে খাওয়া-দাওয়া করতে পারেন।

(০২)
এখানে গিয়ে গুনাহ না করলে গুনাহ হবেনা।
গানের আওয়াজ কানে আসলেও অন্য দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

(০৩)
এতে নামাজের ক্ষতি হয়না।
তবে খুশু খুজুর মাঝে যেনো বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয়।
সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। 

(০৪)
নামাজটা শুদ্ধ হয়েছে।

(০৫)
সাউন্ড এনালিস্ট থেকে জেনে নিতে হবে যে এটি কি বাদ্য-বাজনার অন্তর্ভুক্ত কিনা?
যদি বাদ্য-বাজনার অন্তর্ভুক্ত না হয়,সেক্ষেত্রে সেটি সেট করা যাবে।

(০৬)
হ্যাঁ, এটি সুন্নাহ। 

(০৭)
https://ifatwa.info/12360/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
যেহেতু ক্যাফেইন মানুষকে নেশাগ্রস্ত করছে না, তাই ফিকহের মূলনীতির আলোকে ক্যাফেইনকে হারাম বলা যাচ্ছে না। তবে হ্যা এ পরিমাণ ক্যাফেইন  পান করা যা মানুষকে নেশাগ্রস্ত করে, সেটা জাযেয হবে না। বা ক্যাফেইন যদি মানুষের শারিরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়, তাহলে তখন ক্যাফেইন জায়েয হবে না। সুতরাং নেশাগ্রস্ত না করলে, এবং শারিরিক কোনো ক্ষতি না করলে ক্যাফেইন ব্যবহার করার অনুমোদন রয়েছে।

(০৮)
যে কোম্পানিতে ক্যাফেইন দিয়ে কিছু বানানো হয়,
এমন কোম্পানিতে চাকরি করা জায়েজ হবে। 
সুতরাং আপনার চাকুরী জায়েজ।

(০৯)
আপনার নজর হেফাজত করতে হবে।
তারা সামনে পড়ে গেলে দৃষ্টি নত রাখবেন।
বিনা প্রয়োজনে কথাবার্তা বলবেননা।

(১০)
না,খাওয়া যাবেনা।
পানি ও দাঁড়িয়ে খাওয়া যাবেনা।

(১১)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (23 points)
জাযাকাল্লাহু খইর প্রিয় শায়েখবৃন্দ❤️
by (23 points)
10 নং প্রশ্ন সম্পর্কেঃ 
দাঁড়িয়ে আপেল, পেয়ারা মানে ছোটখাটো  ফলগুলোও খাওয়া যাবে না??

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...