আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,

1. আজানের পূর্বে 'সুবহানাল্লাহি ওবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম' বা 'আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ' বলা যাবে?

2. একটা হাদিস আছে রাসুল (সা) বলেছেন যে ব্যাক্তি লুঙ্গি বা পাজামা টাকনুর নিচ পর্যন্ত পড়ে থাকবে সে জাহান্নামে যাবে। অনেক মুসল্লীকেই দেখি মোজা পড়ে নামাজ পড়েন। এক্ষেত্রে মোজা পড়লে তো টাকনু ঢেকে থাকে। তাহলে এই বিধানটার ব্যাখ্যা কি হবে?

3. কোনো অপবিত্র স্থানে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়লে সেই নামাজ কি সুদ্ধ হবে? যেহেতু জায়নামাজ বিছিয়ে অপবিত্র স্থান ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

4. তাহাজ্জুদের সময় উঠে নামাজ পড়া উত্তম হবে নাকি কোরআন পড়া উত্তম হবে?? আমি শুনেছি শেষ রাত্রের তেলাওয়াতে নাকি অনেক উপকার আছে।

5. গ্রামাঞ্চলে একটা কথা প্রচলিত আছে যে মুরগী অথবা গরুর কলিজা ছেলেরা খেতে পারবে না। এটা কি ঠিক?

6. মুরগী জবাই করতে গেলে তার মাথা উত্তর বা দক্ষিণ দিকে রাখতে হবে বলে কোনো বিধান আছে??

7. ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে মুখে নিয়ত পড়তে হবে? এবং তখন ইত্তেদাইতু বিহেজাল ইমাম না বললে কি জামাতের সহিত নামাজ হবে না?

8. নামাজে ইমামতি করতে গেলে ইমামের জন্য কোনো বিশেষ নিয়ত করতে হয়?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
আযানের পূর্বে কেউ যদি প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য গুলি বলে,সেক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
কিন্তু কেউ যদি এটিকে আবশ্যকীয় মনে করে বা দ্বীনের অংশ মনে করে পড়ে,সেক্ষেত্রে বিদআত হবে।

(০২)

https://www.ifatwa.info/228 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
হাদীসে এসেছে,রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻻَ ﻳُﻜَﻠِّﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻻَ ﻳَﻨْﻈُﺮُ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻻَ ﻳُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢْ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ - ﺍﻟْﻤُﺴْﺒِﻞُ ( ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﺇﺯﺍﺭﻩ ) ﻭَﺍﻟْﻤَﻨَّﺎﻥُ [ ﻭﻓﻰ ﺭﻭﺍﻳﺔ : ﺍَﻟَّﺬِﻯْ ﻻَ ﻳُﻌْﻄِﻰْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻻَّ ﻣِﻨْﻪُ ] ﻭَﺍﻟْﻤُﻨَﻔِّﻖُ ﺳِﻠْﻌَﺘَﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﻠِﻒِ ﺍﻟْﻜَﺎﺫِﺏِ –
তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ কেয়ামতের দিন কোনো কথা বলবেন না,এবং তাদের দিকে তাকাবেন মও না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
তারা হ’ল-
(১) টাখনুর নীচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গী) পরিধানকারী,
(২( খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোন কিছু দান করে না)
(৩) মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী।(মুসলিম ১০৬ মিশকাত ২৭৯৫)

প্রথমেই আমাদেরকে টাখনুর উপর এবং নিচ  বুঝতে হবে।
টাখনু ঢেকে যাওয়া মূলত নিষেধ না।
বরং নিষেধ হল,ওপর থেকে কাপড় পরলে সেটি টাখনুর নিচে যেতে পারবে না।চায় সেট লুঙ্গি হোক, পাজামা হোক, প্যান্ট হোক।

উপরের হাদীসে আমরা লক্ষ্য করেছি,যেখানে বলা হয়েছে,
‘যেটা টাখনুর নিচে চলে যাবে, সেটা জাহান্নামে যাবে।’
মোজা তো নিচের দিক থেকে ওপরে পড়া হয়।সুতরাং এটি টাখনুর নিচে যায়নি।তাই টাখনুর নিচে কাপড় পরা হারাম বলে যে বিধান রয়েছে সেটা এক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হবে না।

আল্লাহর রাসুল নিজেও মোজা পরেছেন।
মোজা আমরা নিচের দিক থেকে ওপরের দিকে পড়ি, সুতরাং এই বিষয়টা আলাদা।

মূল কথা হচ্ছে,
কাপড় পরলে সেটি ওপরের দিক থেকে টাখনুর নিচের দিকে যেতে পারবে না।কেননা এটা অহংকারীদের আলামত।

(০৩)
কোনো শুকনো অপবিত্র স্থানে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়লে সেই নামাজ শুদ্ধ হবে।

(০৪)
এ সময়ে নামাজ পড়া উত্তম। 
নামাজ আদায় করে তারপর কুরআন পড়বেন।

(০৫)
এটি ঠিক নয়।
মানুষের বানানো কথা,যাহা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। 

(০৬)
মুরগী সহ যেকোনো পশু জবাইয়ের সময় কিবলার দিকে পশুকে করা সুন্নাত।

যেহেতু বাংলাদেশীদের কিবলা পশ্চিম দিকে। তাই সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি হল, পশুকে দক্ষিণ দিকে মাথা ও উত্তর দিকে পা দিয়ে শোয়াবে।

(০৭)
ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে মনে মনে "ইমামের পিছনে নামাজ পরছি" এমন নিয়ত তথা সংকল্প থাকতে হবে। 
মুখে নিয়ত পড়তে হবে,এমন কোনো আবশ্যকীয়তা নেই।
মুখে নিয়ত করাকে জরুরী মনে করলে বিদআত হবে।

(০৮)
এক্ষেত্রে ইমাম সাহেব মনে মনে ঈমামতির নিয়ত করবে।
অর্থাৎ মনে মনে সংকল্প করবে যে আমি ঈমামতি করছি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...